অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপে আলো ছড়িয়ে আইপিএলে জায়গা করে নেওয়া—ভারতীয় ক্রিকেটে পুরোনো প্রথা। বিরাট কোহলি, উন্মুক্ত চাঁদ, কুলদীপ যাদবদের পথ ধরে ঋষভ পন্ত, ইশান কিষান, সরফরাজ খানরা এসেছেন। পৃথ্বী শ, শুবমান গিল, শিভাম মাভি, শিভাম নাগরকটিরাও পুরোনো হয়ে গেছেন। গত যুব বিশ্বকাপ থেকে উঠে এসে আলো ছড়াচ্ছেন যশস্বী জয়সওয়াল, রবি বিষ্ণয়, কার্তিক তিয়াগীরা।
আইপিএলে নাম করে জাতীয় দলে জায়গা করে নিয়েছেন তাঁদের অনেকে। অনেকে অবশ্য হারিয়েও গেছেন। কিন্তু যুব ক্রিকেট থেকে জাতীয় দলে যাওয়ার যাত্রাটা সহজ করে দেয় আইপিএল। বিশ্বসেরা তারকাদের সঙ্গে ড্রেসিংরুম ভাগাভাগি করে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের চাপের সঙ্গে মানিয়ে শিক্ষাটা এখান থেকে পান বলেই আবির্ভাবে ভয়ডরহীন ক্রিকেট খেলতে পারেন পন্ত, কিষান, গিলরা। বিশ্বকাপে সবার নজরকাড়া শেখ রশীদ ও রবি কুমারদের তো এবার আইপিএল নিয়েই স্বপ্ন দেখার কথা। কিন্তু আইপিএলের নিলামেই যে থাকবেন না তাঁরা!
আইপিএলের নিলামে নাম লেখাতে চাইলে কিছু শর্ত পূরণ করতে হয়। ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড (বিসিসিআই) যে শর্ত দিয়েছে, সেগুলো খুব কঠিন কিছু নয়। অন্তত একটা একটা প্রথম শ্রেণির ম্যাচ বা স্বীকৃত ৫০ ওভারের ম্যাচ খেলতে হবে, তা না হলে নিলামের সময় বয়স ১৯ হতে হবে। কিন্তু অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপের জন্য দেশের সত্যিকার অর্থের সেরা ক্রিকেটার খুঁজে বের করার চেষ্টা করে ভারত। আর সে চেষ্টায় একদম আনকোরা ক্রিকেটারও বের হয়ে আসেন। অধিকাংশ ক্ষেত্রে বয়সভিত্তিক দলই এই ক্রিকেটারদের প্রথম কোনো টুর্নামেন্ট।
বিশ্বকাপ জেতা ভারত দলের সহ–অধিনায়ক শেখ রশীদ এমনই একজন। টুর্নামেন্টে ৪ ম্যাচ খেলে ২টিতে অর্ধশতক পাওয়া রশীদ আইপিএলের শর্তগুলো পূরণ করতে পারছেন না। ভারতের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক অংক্রিশ রঘুবংশীও পারছেন না। সেমিফাইনাল ও ফাইনালের নায়ক বাঁহাতি পেসার রবি কুমার, উইকেটকিপার দীনেশ বানা, নিশান্ত সিন্ধু, সিদ্ধার্থ যাদব, মানব পারাখ ও গার্ভ সাংওয়ানও আইপিএলের নিলামে নাম দিতে পারছেন না।
রঞ্জি ট্রফি শুরু হবে ১৭ ফেব্রুয়ারি। কিন্তু সেদিন তাঁদের সবার অভিষেক হলেও লাভ হবে না। কারণ, ১২ ও ১৩ ফেব্রুয়ারি হয়ে যাবে এবারের আইপিএলের নিলাম। চূড়ান্ত নিলাম তালিকায় ৫৯০ ক্রিকেটারকে ডাকা হয়েছে।
গত বছর অনূর্ধ্ব-১৯ ক্রিকেটে বিশ্বকাপের আগে চ্যালেঞ্জার্স সিরিজ ও এশিয়া কাপ খেলেছেন ভারতের তরুণেরা। এ কারণে ঘরোয়া ক্রিকেটে চাইলেও এই ক্রিকেটারদের খেলার সুযোগ ছিল না। এ কারণেই এবারের নিলামের জন্য শর্ত শিথিল করা যায় কি না, সে আলোচনা করা হচ্ছে।
বিসিসিআইয়ের সাবেক প্রশাসক রত্নাকর শেঠি বলেছেন, ‘লিস্ট এ টুর্নামেন্ট ও অনূর্ধ্ব-১৯ ক্রিকেট একই সময়ে হওয়ায় এই ছেলেরা লিস্ট এ টুর্নামেন্ট খেলতে পারেনি, এটা দুঃখজনক। মহামারির কারণে এক মৌসুম তো খেলাই হয়নি। আমি মনে করি, বিসিসিআইয়ের এটাকে বিশেষ পরিস্থিতি হিসেবে বিবেচনা করা উচিত এবং এ কারণে ক্রিকেটারদের ক্ষতি হতে দেওয়া ঠিক নয়। দলটা ভালো করেছে এবং তাদের সুযোগ পাওয়া থেকে বঞ্চিত করা ঠিক নয়।’