২০১৪ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ দিয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে তাসকিন আহমেদের পদচারণ শুরু। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে নিজের অভিষেক ম্যাচেই ৪ ওভারে ২৪ রান দিয়ে ১ উইকেট নেন তাসকিন। ম্যাচটাতে সেদিন বাংলাদেশ দল হেরেছিল, কিন্তু আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে তাঁর আবির্ভাবেই ‘তাসকিন’ ‘তাসকিন’ রবে মিরপুর স্টেডিয়ামের গ্যালারি কেঁপে উঠতে দেখেছিলেন তাসকিন। ক্যারিয়ারের প্রথম ম্যাচে এমন কিছুর সৌভাগ্য কজন ক্রিকেটারের হয়!
পরের বছর অস্ট্রেলিয়া-নিউজিল্যান্ডে অনুষ্ঠিত ওয়ানডে বিশ্বকাপেও তাসকিন হয়ে ওঠেন বাংলাদেশ দলের বোলিং আক্রমণের অন্যতম সদস্য। দারুণ বোলিংও করছিলেন সে সময়। অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজার নেতৃত্বে গড়া পেস বোলিং আক্রমণের তাসকিন ছিলেন নিয়মিত নাম।
কিন্তু ২০১৬ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের মাঝপথে বোলিং অ্যাকশনের সমস্যার কারণে তিনি নিষিদ্ধ হন। অ্যাকশন শুধরে ফিরলেও আগের তাসকিনকে আর খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। চোট ও বাজে ফর্মও গত এপ্রিলে ২৬-এ পা রাখা এই ফাস্ট বোলারের অনেকটা সময় কেড়ে নেয়। কিন্তু আরেকটি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ সামনে রেখে অতীত ভুলে সামনেই তাকাচ্ছেন তাসকিন।
চোটের কারণেই ২০১৯ বিশ্বকাপের দলে জায়গা হয়নি তাসকিনের। বিশ্বকাপের দল ঘোষণার দিন তাসকিনের কান্নার ছবি কার না মনে আছে! কিন্তু এরপরের গল্পটা তাসকিনের প্রত্যাবর্তনের। বিশ্বকাপ থেকে বাদ পড়ার পর কঠোর পরিশ্রম করে নিজেকে বদলে ফেলেছেন। করোনাকালের সময়টা কাজে লাগিয়েছেন নিজের ফিটনেস ও দক্ষতার উন্নতিতে। গতি বাড়িয়ে হয়েছেন আরও ধারাল। নিজের বোলিংয়ে যোগ করেছেন নিয়ন্ত্রণ। নতুন কিছু দক্ষতাও যোগ হয়েছে তাসকিনের বোলিংয়ে।
সামনে যখন আরেকটি বিশ্বকাপ, তখন বাংলাদেশ দলের বোলিং আক্রমণের অন্যতম ভরসার নাম সেই তাসকিন।
আজ মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে সাংবাদিকদের প্রশ্নে যেন গত দুই বিশ্বকাপের স্মৃতিই মনে পড়ে গেল তাসকিনের, ‘সত্যি কথা বলতে, দুটি বিশ্বকাপের স্মৃতিই আলাদা আলাদা। তবে সেসব তো অতীত, সেসব নিয়ে ভাবতে চাই না। বর্তমানেই নজর দিতে চাই। যেন সুস্থ থেকে বিশ্বকাপে ভালো করতে পারি, সেই প্রার্থনা থাকবে।’
তবে বিশ্বকাপের আগে তাসকিনকে ঘিরে কিছুটা দুশ্চিন্তাও আছে। ঘরের মাঠের কন্ডিশন ফাস্ট বোলিংয়ের জন্য আদর্শ ছিল না, তাই অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সর্বশেষ দুই সিরিজে টানা সুযোগ পাননি তাসকিন।
নিউজিল্যান্ড সিরিজের শেষ ম্যাচে মোস্তাফিজুর রহমান বিশ্রাম নেওয়ায় খেলেছেন—বিশ্বকাপের আগে এটিই তাসকিনের একমাত্র টি-টোয়েন্টি ম্যাচ।
অবশ্য বিষয়টিকে তাসকিন সমস্যা হিসেবে দেখছেন না। প্রস্তুতির জন্য নাকি যথেষ্ট সময়ই পাবে বাংলাদেশ দল, ‘কন্ডিশনের কারণে শেষ দুটি টি-টোয়েন্টি সিরিজ খেলতে পারিনি, কিন্তু শেষ একটা ম্যাচ খেলা হয়েছে। প্রস্তুতি অনুযায়ী ওটিস গিবসন ও টিম ম্যানেজমেন্টের সঙ্গে কাজ করা হচ্ছে। প্রস্তুতির জন্য ওখানে গিয়েও আমরা বেশ কিছু সময় পাব। আমার বিশ্বাস, আমরা ভালো কিছু করতে পারব। প্রস্তুতির জন্য আমরা ১০ দিন পাচ্ছি এবং কিছু প্র্যাকটিস ম্যাচও পাব।’