>অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ ফাইনালের পর জয়ী বাংলাদেশ ও পরাজিত ভারতের খেলোয়াড়েরা আবেগ নিয়ন্ত্রণ না করতে পেরে বিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েছিলেন। ভারতীয় যুবাদের এমন কর্মকাণ্ডে বিব্রত হয়েছেন মোহাম্মদ আজহারউদ্দিন ও কপিল দেবের মতো তারকারা। এত দিন পর এ ব্যাপারে মুখ খুললেন শচীন টেন্ডুলকারও
পচেফস্ট্রুমে যুব বিশ্বকাপের ফাইনাল শেষে ভারত ও বাংলাদেশ দুই দলের খেলোয়াড়দের আচরণ জন্ম দিয়েছিল সমালোচনার। তর্কাতর্কি ও বাগ্বিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েছিলেন দুই দলের বেশ কিছু খেলোয়াড়। নিজ দেশের খেলোয়াড়েরা আবেগ নিয়ন্ত্রণ করতে না পারায় বিরক্ত হয়েছিলেন মোহাম্মদ আজহারউদ্দিন, কপিল দেব, বিষেণ সিং বেদির মতো সাবেক তারকারা। এবার ক্ষুব্ধ হলেন দেশটির কিংবদন্তি ক্রিকেটার শচীন টেন্ডুলকার।
বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ দলের রকিবুল হাসান জয়সূচক রানটি নেওয়ার পর উল্লাসে মাতেন খেলোয়াড়েরা। এ সময়ে মাঠে থাকা ভারতীয়দের সঙ্গে কথা-কাটাকাটি, এমনকি ধাক্কাধাক্কিও হয়েছে। এ নিয়ে দুঃখ প্রকাশ করেছিলেন বাংলাদেশের অধিনায়ক আকবর আলী। অধিনায়কের ক্ষমা প্রার্থনাতেও খুব একটা লাভ হয়নি। পুরো ঘটনা নিয়ে ম্যাচের পরের দিন তদন্ত প্রতিবেদন দিয়েছেন আইসিসির ম্যাচ রেফারি গ্রাহাম ল্যাব্রয়। সে অনুযায়ী শাস্তি পেয়েছেন বাংলাদেশের তৌহিদ হৃদয়, শামীম হোসেন আর জয়ের রান এনে দেওয়া রকিবুল হাসান। ভারতের আকাশ সিং ও রবি বিষ্ণয়কেও আইসিসি আচরণবিধির ২.২১ ধারা ভাঙায় অভিযুক্ত করা হয়েছে। বিষ্ণয়ের ক্ষেত্রে ধারা ২.৫ ভাঙার অভিযোগও প্রমাণিত হয়েছে। তৃতীয় মাত্রার শাস্তি হওয়ায় সবাইকে কড়া শাস্তিই দেওয়া হয়েছে।
আর এই ব্যাপারটাতেই আজহার-কপিল-বেদিদের মতো বিরক্ত হয়েছেন শচীন টেন্ডুলকারও। এত দিন কিছু না বললেও অবশেষে বিষয়টি নিয়ে মুখ খুলেছেন তিনি। মাঠে প্রতিযোগিতা থাকবেই, কিন্তু সেটার প্রকাশ এমন সীমানাছাড়া যেন না হয়, সেদিকে খেয়াল রাখতে বলেছেন শচীন। যুবাদের মেজাজ নিয়ন্ত্রণের বিষয়টি শেখাতে হবে বলেও মত দিয়েছেন তিনি, ‘কাউকে শেখানোর চেষ্টা করাই যায়। কিন্তু যাকে শেখানো হচ্ছে, সে আদৌ শিখবে কি না, সেটা তার ওপরেই নির্ভর করে। এসব মুহূর্তে নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করতে হয়। ভুলে গেলে চলবে না সবাই দেখছে তোমাকে। সারা বিশ্ব তাকিয়ে রয়েছে তোমার দিকে। খেলার মাঠে আগ্রাসী হওয়া স্বাভাবিক, তবে সেটার জন্য খারাপ ভাষা প্রয়োগ করার প্রয়োজন দেখি না।’
ক্যারিয়ারে নিজেও অনেক স্লেজিংয়ের শিকার হয়েছেন টেন্ডুলকার। শেন ওয়ার্ন, ব্রেট লি থেকে শুরু করে অ্যান্ড্রু ফ্লিনটফ কিংবা মুশতাক আহমেদ, ক্যারিয়ারে অনেকের কাছ থেকেই খেলার মাঠে কথা শুনেছেন টেন্ডুলকার। কিন্তু নিজের মেজাজ ঠান্ডা রেখে ব্যাট হাতেই জবাব দিয়েছেন সবকিছুর। যুবাদেরও সে কথাই মনে করিয়ে দিয়েছেন, ‘ব্যাট বা বল করার সময়ে আগ্রাসন দেখানো স্বাভাবিক। কিন্তু সে আগ্রাসন দেখাতে গিয়ে যেন দলের অসম্মান না হয়। সবাই ম্যাচ জিততে চায়। রজার ফেদেরার কি জিততে চায় না? ও কি আগ্রাসী নয়? প্রতিটি পয়েন্ট জিততে মরিয়া থাকে সে। কিন্তু সেটার জন্য সে কাউকে অসম্মান তো করে না।’