বিপিএলের উদ্বোধনী ম্যাচে ক্রিশমার সান্টোকির বিশাল নো বল অনেকেরই ভ্রু কুঁচকে দিয়েছে। বিশাল নো বলের আগের বিশাল ওয়াইড বলটিও ছিল সন্দেহজনক। ওয়েস্ট ইন্ডিজের এই বাঁহাতি পেসারের এমন কাণ্ডে অনেকেই স্পট ফিক্সিংয়ের গন্ধ পাচ্ছেন।
সিলেটের বিসিবি মনোনীত পরিচালক তানজিল চৌধুরীও সন্দেহ করছেন অনৈতিক কিছুর। তিনি ইতিমধ্যেই সান্টোকির বিষয়টি তদন্ত করতে অনুরোধ করেছেন বিসিবিকে। এ প্রসঙ্গে জানতে বিসিবির প্রধান নির্বাহী নিজাম উদ্দিন চৌধুরীর সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও তাঁকে ফোনে পাওয়া যায়নি। এ ব্যাপারে পরে ক্রিকইনফোর এক প্রশ্নের উত্তরে প্রধান নির্বাহী বলেছেন, ‘দুর্নীতি বিরোধী যে কোনো ব্যাপারই অভ্যন্তরীণভাবে সামলানো হয়। তাই এ ব্যাপারে মন্তব্য করা ঠিক না। প্রতিটি বিপিএল দলের সঙ্গেই আকসুর কর্মকর্তা দেওয়া হয়েছে।’
সেদিন সান্টোকির নো বলের ঘটনার সময় স্টেডিয়ামে উপস্থিত ছিলেন বিসিবির প্রায় সব পরিচালক। বিসিবি সূত্র জানিয়েছে, নিজ চোখে এত বড় নো বল হতে দেখার পর তাৎক্ষণিকভাবে বিসিবি প্রধান নির্বাহী আকসুকে তদন্ত করতে বলেছেন। তবে আকসুর কর্মকর্তাদের কাজ করার যোগ্যতা নিয়েও প্রশ্ন আছে। জানা গেছে, সিলেট দলের সঙ্গে নিয়োগ দেওয়া আকসুর কর্মকর্তা পেশায় একজন প্রকৌশলী।
শুধু সান্টোকির ঘটনা নয়, সিলেট থান্ডার দলের মালিকপক্ষের ভূমিকাও প্রশ্নবিদ্ধ দলটির পরিচালকের তানজিল চৌধুরীর চোখে। বিপিএলের প্লেয়ার্স ড্রাফট থেকেই ঘটনার সূত্রপাত। স্পনসরদের বিরুদ্ধে পূর্বনির্ধারিত ক্রিকেটারদের বাইরে অন্য খেলোয়াড় বাছাই করার অভিযোগ তুলেছেন তানজিল। ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও আফগানিস্তানের প্রথম সারির ক্রিকেটারদের দলে নেওয়ার সুযোগ ছিল সিলেটের। কিন্তু সেই ক্রিকেটারদের না নিয়ে স্পনসররা নিয়েছে তাদের পছন্দের ক্রিকেটার। তাঁদেরই একজন সান্টোকি। কোচ হিসেবে হার্শেল গিবসকেও পছন্দ করেছে স্পনসররা।
ড্রাফটের রাতেই স্পনসরদের এ ধরনের কর্মকাণ্ডের কথা বোর্ড প্রধান নাজমুল হাসান ও বোর্ডের সব পরিচালককে জানানো হয়। বিসিবি প্রধান সবাইকে এই বিষয়ে সতর্কও করেছেন বলে জানা গেছে। এ ধরনের অনিয়ম দেখে পরিচালকের পদ থেকে নাকি পদত্যাগ করতে চেয়েছিলেন তানজিল। তিনি প্রথম আলোকে বলেছেন, ‘অপেশাদারি লোকজন দিয়ে দল সাজিয়েছে। আমি তো চুপ থাকতে পারি না।’ এ ছাড়া স্পনসর হিসেবে বিসিবিকে ছয় কোটি টাকা দেওয়ার কথা জিভানি ফুটওয়্যার লিমিটেডের। জানা গেছে, এখন পর্যন্ত পুরো টাকা পরিশোধ করেনি প্রতিষ্ঠানটি।
মাঠের বাইরের অব্যবস্থাপনা নিয়েও সিলেটের স্পনসরের বিরুদ্ধে অভিযোগ আছে। ক্রিকেটারদের প্যাড, হেলমেট ঢাকায় এসে পৌঁছাতে পৌঁছাতে এক ম্যাচ খেলে ফেলেছে সিলেট। নিজেদের হেলমেটে স্টিকার, প্যাডের ওপর কাপড় দিয়ে প্রথম ম্যাচ খেলেছে সিলেট। এসব বিষয়ে জিভানির প্রধান মোরশেদ মামুনের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়েছে। মুঠোফোনে তিনি প্রথম আলোকে বলেছেন, ‘এখন খেলা দেখছি। পরে ফোন করেন।’ পরবর্তী সময়ে তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলে ফোন ধরেননি।
মাঠের ফলাফলও পক্ষে যাচ্ছে না সিলেটের। পরপর দুই ম্যাচে চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স ও রাজশাহী রয়্যালসের বিপক্ষে হেরেছে সিলেট। প্রথম ম্যাচে সন্দেহের জন্ম দেওয়া সেই সান্টোকি রাজশাহীর বিপক্ষে কালকের ম্যাচের একাদশে ছিলেন। ১ ওভার বল করে ১৫ রান দিয়ে কোনো উইকেট পাননি।