পাঁচবার ওয়ানডে বিশ্বকাপ জিতলেও টি-টোয়েন্টিতে কোনোভাবেই শিরোপার দেখা পাচ্ছিল না অস্ট্রেলিয়া। ২০০৭ সালে শুরু হওয়া ক্রিকেটের সংক্ষিপ্ত সংস্করণের বিশ্বমঞ্চে অস্ট্রেলিয়ার সেরা সাফল্য ছিল ২০১০–এর ফাইনালে ওঠা। সে বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডের কাছে হেরে রানার্সআপ হয়েছিল অস্ট্রেলিয়া।
এবার তাদের সে দুঃখ ঘুচল। অবশেষে দেশটিকে টি-টোয়েন্টি শিরোপার স্বাদ এনে দিয়েছে অ্যারন ফিঞ্চের দল। আর এ শিরোপা জয়ের পেছনে সবচেয়ে বেশি যাঁর অবদান তিনি হচ্ছেন উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান ডেভিড ওয়ার্নার। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ৭ ম্যাচে ৪৮.১৬ গড়ে ২৮৯ রান করে টুর্নামেন্টসেরা হয়েছেন তিনি। আর এই ওয়ার্নারকেই বিশ্বকাপের আগে সানরাইজার্স হায়দরাবাদ একাদশ থেকে বাদ দিয়েছিল। বিশ্বকাপ শেষ হতেই নিজের ফ্র্যাঞ্চাইজির বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করলেন ওয়ার্নার।
এবারের আইপিএলে ফর্ম খুঁজে পাচ্ছিলেন না ওয়ার্নার। দলের বাজে অবস্থা দেখে প্রথমে ওয়ার্নারের অধিনায়কত্ব কেড়ে নেওয়া হয়। তবু ফর্মে উন্নতি না দেখে একদম একাদশ থেকেই বাদ দেওয়া হয় তাঁকে। এমনকি দলের সঙ্গে মাঠেও যেতে দেওয়া হয়নি তাঁকে। টিম হোটেল থেকে দলকে সমর্থন দিচ্ছেন, সেটা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে জানিয়েছিলেন ওয়ার্নার। এমন খবরে সমর্থকদের মধ্যেই তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হলে ব্যবস্থা নেয় হায়দরাবাদ। গ্যালারিতে বসেই ওয়ার্নারকে ম্যাচ দেখার সুযোগ করে দেওয়া হয়, কিন্তু মাঠে আর নামা হয়নি তাঁর।
এত দিন এ নিয়ে মুখে কুলুপ এঁটে ছিলেন তিনি। বিশ্বকাপ জয়ের পর অবশেষে মুখ খুললেন এই তারকা। ৩৫ বছর বয়সী এই অস্ট্রেলিয়ান জানান, কোনো কারণ ছাড়াই তাঁকে দল থেকে ছুড়ে ফেলা হয়েছিল, ‘কোনো দোষ না থাকা সত্ত্বেও আমি এমন একটা দল থেকে হুট করে বাদ পড়ে গেলাম, যে দলকে আমি বছরের পর বছর ভালোবেসেছি। আমার অধিনায়কত্বও কোনো কারণ ছাড়াই কেড়ে নেওয়া হয়েছিল। এ ঘটনাগুলোয় আমি খুবই কষ্ট পেয়েছিলাম। কিন্তু আমার কোনো অভিযোগ নেই। ভারতের ভক্ত–সমর্থকেরা সব সময় আমার পাশে ছিল ও আমাকে ভালোবেসেছে এবং আমি তাঁদের আনন্দ দেওয়ার জন্যই খেলি। আমরা আমাদের সেরাটা দেওয়ার জন্যই খেলি।’
ইকোনমিক টাইমসের সঙ্গে আলোচনায় নিজের ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন ওয়ার্নার।
হায়দরাবাদের একাদশে জায়গা না পাওয়া সত্ত্বেও কঠোর অনুশীলন করে গেছেন তিনি, ‘একাদশে আমার জায়গা না পাওয়ার কারণ যা–ই হোক না কেন, আমি আপনাকে এটা বলতে পারি যে আমি আমার সর্বোচ্চটা দিয়ে অনুশীলন করছিলাম। আমি অনুশীলন এক দিনও বাদ দেইনি। আমি নেটে খুবই ভালো ব্যাটিং করছিলাম এবং আমার ফর্মে ফেরাটা শুধু সময়ের ব্যাপার ছিল।’
ওয়ার্নার জানতেন, আইপিএলে তাঁকে গুরুত্ব না দেওয়ার জবাবের সুযোগ আছে তাঁর সামনে। আর বিশ্বকাপকেই পাখির চোখ করেছিলেন, ‘হ্যাঁ, আমি কষ্ট পেয়েছিলাম। কিন্তু আমি জানতাম সামনে আরেকটা সুযোগ আছে। খেলার চেয়ে ভালো ভারসাম্য কেউ টানতে জানে না। যদি আপনি খেলার প্রতি নিবেদিত থাকেন এবং কঠোর পরিশ্রম করেন, আপনি অবশ্যই দ্বিতীয় সুযোগ পাবেন। আমি শুধু সর্বোচ্চ পরিশ্রমটা করতে চেয়েছি এবং নিজের কাজটা ঠিকঠাক মতো করতে চেয়েছি। আমি খুবই খুশি যে এভাবে কাজ করে আমি সাফল্য পেয়েছি।’