সিলেট সানরাইজার্সের বিপক্ষে মিনিস্টার ঢাকার মোহাম্মদ নাঈম বিতর্কিতভাবে আউট হয়েছেন
সিলেট সানরাইজার্সের বিপক্ষে মিনিস্টার ঢাকার  মোহাম্মদ নাঈম বিতর্কিতভাবে আউট হয়েছেন

বিতর্ক এড়াতে বিপিএলে বিকল্প ডিআরএস

বিপিএলের এবারের মৌসুম শুরুর আগে থেকেই আলোচনায় ছিল ডিসিশন রিভিউ সিস্টেম বা ডিআরএস না থাকা। ঢাকার প্রথম পর্বের আটটি ম্যাচ হয়েছে ডিআরএস ছাড়াই। তবে চট্টগ্রাম পর্ব থেকে ‘অলটারনেটিভ’ বা ‘বিকল্প’ ডিসিশন রিভিউ সিস্টেম চালু করতে যাচ্ছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, এটিকে বলা হবে ‘এডিআরএস’। আগামীকাল চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স ও খুলনা টাইগার্সের ম্যাচ দিয়েই চালু হবে ডিআরএসের এই বিকল্প।

আইসিসি স্বীকৃত ডিআরএসের মূল দুটি প্রযুক্তি—হক-আই বা ভার্চ্যুয়াল আই, স্নিকো-মিটার বা আল্ট্রা-এজের কোনোটিই থাকবে না এই ‘এডিআরএস’-এ। মূলত ‘সুপার স্লো মোশন’ রিপ্লের সহায়তায় কার্যকর হবে এটি।

বিসিবির দেওয়া ব্যাখ্যা অনুযায়ী, মূলত এলবিডব্লুর ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হবে ডিআরএসের এই বিকল্প। ডিআরএসে এলবিডব্লুর সিদ্ধান্তের বল ট্র্যাকিং পদ্ধতিটি প্রযুক্তিনির্ভর হলেও বিপিএলে যেটি ব্যবহার করা হবে, তাতে খোলা চোখে দেখে মূল সিদ্ধান্তটা দেবেন টিভি আম্পায়ার।

সিলেটের বিপক্ষে এলবিডব্লু সিদ্ধান্ত নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করতে দেখা যায় তামিম ইকবালকেও

বল পিচের কোথায় পড়েছে, সেটি দেখতে ব্যবহার করা হবে ‘এমএটি’ বা ‘শেডেড এরিয়া অব উইকেট টু উইকেট’। মানে অফ স্টাম্প থেকে লেগ স্টাম্প পর্যন্ত অঞ্চলটিকে আলাদা করে দেখা হবে, বলটি স্টাম্প লাইনে পড়েছে কি না।

ডিআরএসে বলের পঞ্চাশ শতাংশ হিসাব করা হলেও এখানে দেখা হবে যেকোনো অংশ। অর্থাৎ অফ স্টাম্প থেকে লেগ স্টাম্পের ওই অঞ্চলের ভেতরে বলের কোনো অংশ পড়লেই সেটি লাইনে পড়েছে বলে ধরে নেওয়া হবে।

একইভাবে ‘ইমপ্যাক্ট’ বা বল ব্যাটসম্যানের প্যাডে প্রথমবার লাগার সময় সেটি স্টাম্পের লাইনে আছে কি না—তা বোঝার জন্যও ব্যবহার করা হবে আগের মতোই ‘এমএটি’। আগের মতোই বলের কোনো অংশ এ নির্দিষ্ট অঞ্চলে থাকলেই সেটিকে ‘ইন লাইন’ বিবেচনা করা হবে।

বল ব্যাট বা গ্লাভসে লেগেছে কি না, সেটি বোঝার জন্য যে শব্দনির্ভর প্রযুক্তি, তার বদলে ব্যবহার করা হবে স্টাম্প মাইক্রোফোনের আওয়াজ। ভিডিওর সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে সে আওয়াজ ব্যবহার করে সিদ্ধান্ত দেবেন টিভি আম্পায়ার।

এখন এলবিডব্লুর সিদ্ধান্তের ক্ষেত্রে মূল যে ব্যাপার—বলটি স্টাম্পে লাগত কি না, সেটি মূলত ঠিক করবেন টিভি আম্পায়ার। ‘ট্রান্সপারেন্ট ভিউ’ বা ‘বলের অবস্থানের একটা স্বচ্ছ চিত্র’, ‘স্প্লিট স্ক্রিন’ বা টিভি স্ক্রিনকে একাধিক ভাগে ভাগ করে, সুপার স্লো মোশন রিপ্লের সহায়তায় টিভি আম্পায়ার সিদ্ধান্ত নেবেন—বলটি স্টাম্পে আঘাত করত কি না।

আর বল ব্যাট বা গ্লাভসে লেগেছে কি না, সেটি বোঝার জন্য যে শব্দনির্ভর প্রযুক্তি, তার বদলে ব্যবহার করা হবে স্টাম্প মাইক্রোফোনের আওয়াজ। ভিডিওর সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে সে আওয়াজ ব্যবহার করে সিদ্ধান্ত দেবেন টিভি আম্পায়ার।

বিসিবি জানিয়েছে, প্রতি ইনিংসে দলগুলো দুটি করে অসফল ‘এডিআরএস’ ব্যবহার করতে পারবে। ২৬ জানুয়ারি এ ব্যাপারে প্রতিটি দলের অধিনায়ক, কোচ ও ম্যানেজার, বিপিএলের গভর্নিং কাউন্সিল, প্লেয়িং কন্ট্রোল টিম ও বিপিএলের প্রোডাকশন টিমের সঙ্গে আলোচনা করা হয়েছে। এ উদ্যোগ ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলো গ্রহণ করার পর টুর্নামেন্টের প্লেয়িং কন্ডিশনে এটি যোগ করা হয়েছে।

আশা করি, এতে অন্তত পঞ্চাশ ভাগ ভুল আমরা কমিয়ে আনতে পারব।
রকিবুল হাসান, বিসিবির প্রধান ম্যাচ রেফারি

ঢাকা পর্বের শেষ দিন সিলেট সানরাইজার্সের বিপক্ষে মিনিস্টার ঢাকার ম্যাচে তৈরি হয়েছিল আম্পায়ারিং নিয়ে বিতর্ক। এক ওভারে ঢাকার দুই ব্যাটসম্যান মোহাম্মদ নাঈম ও আন্দ্রে রাসেলকে এলবিডব্লু দেন আম্পায়ার শরফউদ্দৌলা ইবনে শহীদ। তবে রিপ্লে দেখায়, নাঈমের গ্লাভসে ও রাসেলের ব্যাটে লেগেছিল বল। রাসেলের আউটের সিদ্ধান্তের পর চতুর্থ আম্পায়ারের সঙ্গে কথা বলতে দেখা যায় ঢাকার খেলোয়াড়দের। এর আগে নিজের এলবিডব্লু সিদ্ধান্ত নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করতে দেখা যায় তামিম ইকবালকেও।

পরশু রাতে বিকল্প ডিআরএস নিয়ে বিপিএলের সব ফ্র্যাঞ্চাইজি প্রতিনিধি ও ম্যাচ কর্মকর্তাদের সঙ্গে অনলাইন সভা করেছিলেন বিপিএল টেকনিক্যাল কমিটির প্রধান ও বিসিবির প্রধান ম্যাচ রেফারি রকিবুল হাসান। বিকল্প ডিআরএস নিয়ে প্রথম আলোকে তিনি বলেছিলেন, ‘যেহেতু আম্পায়ারিং নিয়ে কিছু বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে, আমরা চেষ্টা করছি, মনুষ্য সৃষ্ট ভুল যতটা সম্ভব কমিয়ে আনা যায়। আশা করি, এতে অন্তত পঞ্চাশ ভাগ ভুল আমরা কমিয়ে আনতে পারব।’