মাঠের বিরাট কোহলি আগ্রাসী। নানা বিষয়ে তিনি আলোচিত, কখনো সমালোচিত। মাঠের কোহলিকে সমীহ করেন তাঁর দলের খেলোয়াড়েরা, প্রতিপক্ষও দল তো বটেই। চোখে–মুখে থাকে আগ্রাসী ভাব। অনেকে মনে করেন, কোহলি মানুষটিই বোধ হয় এমন। কিন্তু মাঠের বাইরে তিনি পুরোপুরি ভিন্ন এক মানুষ। নম্রভদ্র, নরমভাষী। কোনো অহংকার নেই, রাগ নেই। মাঠের বাইরে তাঁকে দেখে যেকেউই অবাক হয়ে ভাববেন, এ কোন কোহলি!
মাঠের বাইরে ভারত অধিনায়ক কেমন, সেটি জানিয়েছেন ভারতের সাবেক নির্বাচক শরণদীপ সিং। দল নির্বাচনী বিভিন্ন বৈঠকে কোহলিকে দেখে তিনি সব সময়ই অবাক হয়েছেন। মাঠে মুখরা কোহলি যে সেখানে চুপচাপ। কেবল তা-ই নয়, শরণদীপ জানিয়েছেন কোহলির ব্যক্তিগত জীবনের আচরণও। কেউ তাঁর বাড়িতে বেড়াতে গেলে তিনি নিজেই নাকি চা বানিয়ে খাওয়ান, ‘মাঠে কোহলি পুরোপুরি অন্য রকম। সে সেখানে অনেক আগ্রাসী। ব্যাটিং কিংবা বোলিং—যেকোনো সময়ই তাকে উত্তপ্ত মনে হয়। মনে হয় সে অনেক বেশি আক্রমণাত্মক। কাউকে পাত্তা দেয় না, এমন। কিন্তু মাঠের বাইরে সে অতটাই চুপচাপ। বিনয়ী। নির্বাচনী বৈঠকের সময় তাকে দেখেছি, সে খুব নরম ভাষায় কথা বলে সবার সঙ্গে। বেশির ভাগ সময়ই চুপচাপ থেকে সবার কথা শোনে। নিজের সিদ্ধান্ত সবাইকে বুঝিয়ে বলে।’
কোহলিকে অহংকারী—সাধারণের এই ধারণা পুরোপুরি ভুল বলেই জানিয়েছেন শরণদীপ, ‘আমি জানি না কোহলিকে সাধারণ মানুষ কী ভাবে! বিশ্বাস করুন, মাঠের বাইরে সে পুরোপুরি ভিন্ন এক মানুষ। এক থেকে দেড় ঘণ্টার নির্বাচনী বৈঠকে দেখতাম সে চুপচাপ সবার কথা শুনছে। কথাবার্তাতেও বলত খুব মৃদু স্বরে।’
বাড়িতে কোহলি তো পুরোপুরি সংসারী, ‘ওর বাড়িতে কোনো পরিচারক বা পরিচারিকা নেই। ঘরে নিজেদের কাজ, সে আর আনুশকা নিজেরাই করে। কেউ বেড়াতে গেলে আপ্যায়নও তারা নিজেরাই করে। কোহলি-আনুশকা নিজের হাতে অতিথিকে চা-নাশতা বানিয়ে খাওয়ায়।’
মাঠে তাহলে কোহলি কেন এত আগ্রাসী? সে উত্তরটাও দিয়েছেন শরণদীপ, ‘আমার মনে হয় সে যেহেতু দলের অধিনায়ক, তাই তাকে আগ্রাসী হতে হয়। মাঠের সব চাপ তাকেই নিতে হয়। তাৎক্ষণিকভাবে তাকে অনেক সিদ্ধান্ত নিতে হয়। তাই মাঠে সে এমন করে। কিন্তু ওই আচরণটা পুরোপুরি খেলাকেন্দ্রিক। খেলা শেষ তো কোহলি পুরোপুরি ভিন্ন মানুষ।’