অনেক লম্বা সময় ধরে চলার পর অবশেষে শেষ হয়েছে এবারের আইপিএল মৌসুম। সেই ২৬ মার্চ শুরু হয়েছিল, দুই মাসের বেশি সময়ে চড়াই-উতরাইয়ের পাশাপাশি অনেকের জন্য কিছুটা একঘেয়েমিও এনে দিয়েছে। অবশেষে গতকাল রাজস্থান রয়্যালসকে হারিয়ে গুজরাট টাইটানসের শিরোপা জয়ের মধ্য দিয়ে পর্দা নেমেছে ভারতের টি-টোয়েন্টি ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগটির।
অভিষেকেই গুজরাটের শিরোপা, আইপিএলের ইতিহাসে সফলতম দুই দল চেন্নাই সুপার কিংস ও মুম্বাই ইন্ডিয়ানসের পয়েন্ট তালিকার তলানিতে থেকে বিদায় নেওয়া, বিরাট কোহলির ভয়াবহ ফর্মহীনতা, অতটা আলোচিত না হলেও রোহিত শর্মা আর কেইন উইলিয়ামসনেরও একই রকম রানখরা...এবারের আইপিএলেও আলোচনার বিষয়ের অভাব হয়নি। সেটির শেষে এখন অবশ্য আলোচনা ক্রিকেট আর গ্ল্যামারের পাশাপাশি আইপিএলের আকর্ষণের আরেক কারণ—অর্থযোগ!
কে কোন পুরস্কার জিতছেন, সেটি তো কাল ফাইনাল শেষেই জানা গেছে। কিন্তু কোন পুরস্কারের জন্য কে কত অর্থ পেলেন, সেটি কজন হিসাব করেছেন? হিসাবে দেখা যাচ্ছে, দল হিসেবে তো গুজরাটই সবচেয়ে বেশি লাভবান হওয়ার কথা, খেলোয়াড়দের মধ্যে সবচেয়ে বেশি অর্থ যাচ্ছে জস বাটলারের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে।
আইপিএলে এবার অবিশ্বাস্য ব্যাটিং করা বাটলার যে পুরস্কারের প্রায় সবই জিতেছেন। তাতে পুরস্কারের অঙ্কও বেড়েছে। যেমন ধরুন, ৮৬৩ রান নিয়ে টুর্নামেন্টে সর্বোচ্চ রান করা ব্যাটসম্যান বাটলার, সেটির পুরস্কার হিসেবে তিনি ৬০ লাখ রুপি নগদ পুরস্কার পেয়েছেন। বাংলাদেশি মুদ্রায় ৬৭ লাখ ৮০ হাজার টাকা।
এ তো গেল শুধু রানের হিসাব, রান করার উপায়ের জন্যও তো ব্যাংক অ্যাকাউন্টে বেশ ভালো অর্থযোগ হয়েছে বাটলারের। টুর্নামেন্টে সবচেয়ে বেশি ৪৫টি ছক্কা মেরেছেন বাটলার, সে জন্য তিনি পেয়েছেন ১০ লাখ রুপি—বাংলাদেশি মুদ্রায় ১১ লাখ ৩০ হাজার টাকা। চার মারার পরিসংখ্যানেও আইপিএলে সবার চেয়ে এগিয়ে ছিলেন বাটলার, সে জন্য ইংলিশ ব্যাটসম্যান আরেক দফায় ১০ লাখ রুপি পেয়েছেন।
১০-এর নামতা এখানেই শেষ হচ্ছে না। টুর্নামেন্টে সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহকের স্বীকৃতি কমলা টুপি পাওয়ার কারণে আরও ১০ লাখ রুপি পেয়েছেন বাটলার, ১০ লাখ পেয়েছেন টুর্নামেন্টের ‘মোস্ট ভ্যালুয়েবল প্লেয়ার’ হওয়ার সুবাদে। ১০ লাখ রুপি করে আরও দুবার পেয়েছেন ‘গেইমচেঞ্জার অব দ্য সিজন’ আর ‘পাওয়ার প্লেয়ার অব দ্য সিজন’ হওয়ার কারণে।
তার মানে শুধু পুরস্কারের অর্থ বাবদই সব মিলিয়ে ১ কোটি ২০ লাখ রুপি নিয়ে বাড়ি ফিরছেন বাটলার। রাজস্থানের সঙ্গে চুক্তির কারণে যে আরও কোটি কোটি টাকা পাচ্ছেন, সেটির হিসাব এখানে আর আসেনি।
বাটলার পাননি—এমন ব্যক্তিগত পুরস্কার আর তেমন বাকি ছিল না। যা ছিল, তা মূলত বোলারদের জন্যই। গুজরাট টাইটানসের গতিতারকা লকি ফার্গুসন গতকাল ফাইনালে ১৫৭.৭ কিলোমিটার গতিতে বল করেছেন, যেটি এবারের টুর্নামেন্টে সবচেয়ে দ্রুতগতির বল। সে জন্য ফার্গুসন পেয়েছেন ১০ লাখ রুপি।
টুর্নামেন্টজুড়ে যাঁর সঙ্গে গতির লড়াই চলেছে ফার্গুসনের, সেই উমরান মালিক জিতেছেন সবচেয়ে ভালো উঠতি খেলোয়াড়ের পুরস্কার। সেটির জন্য ২২ বছর বয়সী ভারতীয় ফাস্ট বোলার পেয়েছেন ১০ লাখ রুপি।
আর সবচেয়ে বেশি উইকেট নেওয়া যুজবেন্দ্র চাহাল পেয়েছেন ১০ লাখ রুপি। কলকাতা প্লে-অফের স্বপ্ন শেষ করে দেওয়া ক্যাচ নিয়েছেন এভিন লুইস, টুর্নামেন্টের সেরা ক্যাচ নির্বাচিত হয়েছে সেটি। সে জন্য লুইস পেয়েছেন ১০ লাখ রুপি।
দলীয় পুরস্কারে স্বাভাবিকভাবেই সবচেয়ে বেশি পেয়েছে শিরোপাজয়ী গুজরাট—২০ কোটি রুপি। বাংলাদেশি মুদ্রায় ২২ কোটি ৬০ লাখ টাকা। রানার্সআপ রাজস্থান পেয়েছে ১২.৫ কোটি রুপি—১৪ কোটি ১০ লাখ টাকা।
আর ‘পাঞ্চ স্ট্রাইকার অব দ্য সিজন’ হওয়ায় হার্দিক পান্ডিয়া পেয়েছেন টাটা পাঞ্চ কার। টুর্নামেন্টজুড়ে যে গাড়িটি স্টেডিয়ামগুলোতে প্রদর্শিত হয়েছিল।