>উস্টারশায়ার কাউন্টি ক্রিকেট ক্লাবের উঠতি তারকা জর্জ রোডস। তাঁর আরেকটি পরিচয় তিনি বাংলাদেশের সদ্য বিদায়ী কোচ স্টিভ রোডসের সন্তান। বাংলাদেশকে নিয়ে উচ্ছ্বসিত জর্জ বাবার চাকরিচ্যুতিকে দেখতে চান পেশাদারি দৃষ্টিকোণ থেকেই
উস্টারশায়ার কাউন্টি ক্রিকেট ক্লাব মাঠের একটি ফটকের মুখেই দেখা হয়ে গেল তাঁর সঙ্গে। খুব পরিচিত ক্রিকেটার তিনি নন। সবে উঠতি, কাউন্টিতে ভালো করছেন। বাবার মতোই দুর্দান্ত এক ক্রিকেটার হয়ে ওঠার প্রত্যাশা। তবে সোয়েটারের পেছনে ‘রোডস’ নামটি দেখেই বোঝা গেল তিনি আর কেউ নন—জর্জ রোডস। বাংলাদেশের সদ্য সাবেক কোচ স্টিভ রোডসের সন্তান।
নিজের পরিচয় দিতে একটু বিব্রতই হতে হলো। স্টিভের বিদায়টা যে খুব সুখকর হয়নি। তবে বাংলাদেশের নাম শুনে জর্জ উচ্ছ্বাসই দেখালেন। নিজেই বললেন, বাবার কারণে বাংলাদেশের ক্রিকেটের সঙ্গে আমি যথেষ্ট পরিচিত। তবে বাবার চাকরিচ্যুতি স্বাভাবিকভাবেই দেখতে চান তিনি। পুরো ব্যাপারটিই তাঁর কাছে ‘পেশাদারি বিষয়’। কিন্তু মুখে যা-ই বলুন না কেন, চোখেমুখে এ প্রসঙ্গে একটা অসন্তুষ্টি কিন্তু ফুটে উঠলই। বলেই ফেললেন আসল কথাটা, ‘বাংলাদেশে কাজ করে আনন্দ পাচ্ছিলেন বাবা। দারুণ সব ক্রিকেটারকে নিয়ে কাজ করা—উপভোগ করছিলেন। তবে পুরোটাই পেশাদারি বিষয়, এসব নিয়ে মন্তব্য করা ঠিক নয়।’
২০১৬ সাল থেকে ইংলিশ কাউন্টি খেলছেন স্টিভের ছেলে জর্জ। ১৭টি প্রথম শ্রেণির ম্যাচও খেলে ফেলেছেন তিনি। মারকুটে ব্যাটসম্যান, দুর্দান্ত ফিল্ডার, কার্যকর অফ স্পিনার। বাবার মতোই নিজের কাউন্টি উস্টারশায়ারের পক্ষে খেলছেন। তবে আগামী মৌসুমে তিনি দল পাল্টাচ্ছেন। চলে যাচ্ছেন লিস্টারশায়ারে। কাউন্টি সার্কিটে ইতিমধ্যেই ‘ত্রিমাত্রিক প্রতিভা’ হিসেবে পরিচিতি পেয়েছেন জর্জ। লিস্টারশায়ারের বোলিং কোচ পল নিক্সন মুগ্ধ তাঁকে নিয়ে। জর্জকে ‘ত্রিমাত্রিক ক্রিকেটার’ বলছেন এই নিক্সনই। এখন অপেক্ষার পালা, বাবার মতো নিজেকে দারুণ ক্রিকেটার হিসেবে তিনি মেলে ধরতে পারেন কি না।
বাংলাদেশে তাঁর সবচেয়ে প্রিয় ক্রিকেটার সাকিব আল হাসান। তিনি জানেন, সাকিব এই উস্টারশায়ারের পক্ষেই দুই মৌসুম খেলে গেছেন। তথ্যটা তাঁকে আরও বেশি অনুপ্রাণিত করে। বিশ্বকাপে সাকিবের পারফরম্যান্স তাঁকে মুগ্ধ করেছে, ‘সাকিব আল হাসান আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে দুর্দান্ত এক ক্রিকেটার। সে সামনে থেকে দলকে নেতৃত্ব দেয়।’ সঙ্গে আরও একটি তথ্য তিনি জানিয়ে রাখলেন, ‘বাবার কিন্তু খুব প্রিয় ক্রিকেটার সাকিব। বিশ্বকাপের সময় সাকিবের ধারাবাহিক পারফরম্যান্সে সত্যিই উচ্ছ্বসিত ছিলেন আমার বাবা।’
বাংলাদেশ ক্রিকেট দলকে নিয়ে তাঁর আছে শুভকামনা, ‘গত তিন বছরে বাংলাদেশের ক্রিকেট আরও এগিয়েছে, এটা দেখে খুব ভালো লাগে। বিশ্বকাপে বাংলাদেশের যা অবস্থান, তার থেকে কিন্তু ভালো খেলেছে তারা। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে বিপজ্জনক দল বাংলাদেশ।’
স্টিভ রোডস এই মুহূর্তে উস্টারশায়ারের বাইরে ছুটিতে আছেন। জর্জ জানালেন এ তথ্য, ‘বাংলাদেশ থেকে ফেরার পর কিছুটা হতাশ ছিলেন তিনি। কিন্তু তিনি পেশাদার। তিনি জানেন, অনেক কিছুই তাঁর হাতে না-ও থাকতে পারে।’
বাংলাদেশের কোচ হিসেবে অনেক কিছুই তাঁর হাতে ছিল না—এটা খুবই সত্যি কথা!