বাংলাদেশ খেলেছে বিনোদনদায়ী ক্রিকেট

কিউই কণ্ঠ
কিউই কণ্ঠ

কোয়ার্টার ফাইনালে ভারত জিতেছে সহজেই, বাংলাদেশ খুব একটা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারেনি। ৩০০ রান তাড়া করাটা এমসিজিতে সব সময়ই কঠিন, পরে ব্যাট করে কোনো দল এখানে ৩০০-এর বেশি রান করতে পারেনি। বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের রেকর্ডও ভালো, ২৮টি ম্যাচের ২৪টিতেই জিতেছে। তবে বাংলাদেশ মাথা উঁচু করেই বিদায় নিয়েছে। এই টুর্নামেন্টে তারা বিনোদনদায়ী ক্রিকেট খেলেছে। ভবিষ্যতে এটা তাদের অনেক সাহায্য করবে।
ভারতকে দেখে এখন মনে হচ্ছে, তারা হয়তো শিরোপা ধরে রাখতে পারে। আত্মবিশ্বাস, উদ্যম সবকিছুই আছে তাদের, টানা ৭ ম্যাচ জিতে তারা এখন সেমিফাইনালে। সেখানে তাদের প্রতিপক্ষ অস্ট্রেলিয়া। বলতে গেলে এখন পর্যন্ত ভারত প্রায় নিখুঁত ক্রিকেট খেলেছে।
এই ম্যাচের একটা বিষয় নিয়ে খুব কথা হচ্ছে—রোহিত শর্মা রুবেলের একটা ফুল টস বলে আউট হয়ে গিয়েছিল। যেটিকে নো বল ডাকা হয়েছে। রিপ্লে দেখে মনে হয়েছে সিদ্ধান্তটা বাংলাদেশের পক্ষে যাওয়াই উচিত ছিল। আমার মনে হয়, এসব ক্ষেত্রে মাঠের আম্পায়াররা ভুল করলে থার্ড আম্পায়ারদের সেটি সংশোধনের ক্ষমতা থাকা উচিত। রোহিত তখন আউট হলে সেটা ভারতের রানের ওপর প্রভাব ফেলতেও পারত।
ভারতের জন্য রোহিত শর্মার ফর্মে ফেরাটা খুবই স্বস্তির। ১২৬ বলে ১৩৭ রানের ইনিংসটা ছিল স্ট্রোক-ঝলমলে। বোলারদের ওপর ছড়ি ঘোরানোর এই ক্ষমতা তার সহজাতই। তার টাইমিং দারুণ, কবজির মোচড়ে বল বাউন্ডারিতে পাঠাতে সে খুবই দক্ষ। এই পারফরম্যান্স নিয়ে তার তৃপ্তই থাকা উচিত। বাংলাদেশের সঙ্গে তার রেকর্ড ভালো নয়, আগের ৫ ইনিংসে মাত্র ১৪ রান করেছিল। কিন্তু বৃহস্পতিবার সে বোলারদের রীতিমতো শাসন করেছে।
বিরাট কোহলির ফর্ম ভারতের জন্য উদ্বেগের কারণ। দলের সবচেয়ে বেশি রান তারই করার কথা, কিন্তু এখনো নিজেকে সে সেভাবে মেলে ধরতে পারেনি। বরং শর্মা, ধাওয়ান আর রায়না ওকে ছাড়িয়ে গেছে। কোহলি দারুণ প্রতিভাবান, দেখা যাবে সেমিফাইনালেই সে ঝলসে উঠেছে। তবে তার রানখরার জন্যই রায়না মিডল অর্ডারে কিছু রান করতে পারছে। জিম্বাবুয়ের সঙ্গে সে দারুণ একটি সেঞ্চুরি করেছে, তবে বৃহস্পতিবার ৬৫ রান করে সে দেখিয়েছে দলের জন্য সে কত বড় সম্পদ। সুযোগগুলো সে দুহাতে লুফে নিচ্ছে, মাঠে ফাঁক বের করে দ্রুত রান করছে।
বাংলাদেশের ফিল্ডিং ভালো হয়নি। ওভার থ্রো ও মিস ফিল্ডিং থেকে তারা বাড়তি কিছু রান দিয়েছে, সম্ভবত ২০ রানের মতো। এই পর্যায়ে এ রকম ফিল্ডিংয়ের কোনো অজুহাত নেই। তাদের বোলাররা অনেক খেটেছে, কিন্তু রায়না ও রোহিতকে কাঁপিয়ে দেওয়ার মতো পেস তাদের বলে ছিল না।
বাংলাদেশের ৩০৩ রান তাড়া করার অনেকটাই নির্ভরশীল ছিল মাহমুদউল্লাহর ওপর। সে টানা দুটি সেঞ্চুরি করেছে, তার অলরাউন্ড পারফরম্যান্সে আমি মুগ্ধ। কিন্তু ২০-এর ঘরেই সে আটকে গেল, শেষ পর্যন্ত এই আউটটাই ভারতের হাতে ম্যাচ তুলে দিয়েছে।
ভারতের বোলিং বরাবরের মতোই দুর্দান্ত। সব বোলারই নিজেদের কাজটা ঠিকঠাক করছে। ফিল্ডাররাও দারুণ সমর্থন দিচ্ছে তাদের। সন্দেহ নেই এ মুহূর্তে ভারত খুবই বিপজ্জনক একটা দল। (হক-আই)