>বিশ বছর আগে এই দিনেই মেহরাব হোসেনের ব্যাট থেকে এসেছিল বাংলাদেশের প্রথম সেঞ্চুরি। ক্রিকেটের তিন সংস্করণ মিলিয়ে সেটাই প্রথম সেঞ্চুরি বাংলাদেশের। আজকে তামিম, সাকিব, মুশফিকদের সেঞ্চুরির পথটাও দেখিয়ে দিয়েছিলেন সাবেক এই ওপেনার।
এমনই এক মার্চ মাসের বিকেল ছিল সেটি, ঠিক বিশ বছর আগে, ১৯৯৯ সালে। বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে সেদিন খুব বেশি দর্শক ছিলেন না। অল্প যাঁরা সেদিন গ্যালারিতে এসেছিলেন, তাঁরা সাক্ষী হয়েছিলেন এ দেশের ক্রিকেটের ঐতিহাসিক এক মুহূর্তের। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে মেহরাব হোসেনের ব্যাট থেকে ওয়ানডে ক্রিকেটে প্রথম শতরান দেখেছিল বাংলাদেশ। মেরিল আন্তর্জাতিক কাপের সেই ম্যাচে তখনকার পরাক্রমশালী জিম্বাবুয়েকে প্রায় হারিয়েই দিচ্ছিল বাংলাদেশ। মেহরাবের ব্যাটে চড়ে জয়ের স্বপ্ন দেখা বাংলাদেশ অনভিজ্ঞতার কারণেই হোক আর যেভাবেই হোক, তীব্র লড়াই শেষে হেরেছিল ৩ উইকেটে। কিন্তু তাতে কি, ইতিহাসে যে জায়গা করে নিয়েছিলেন মেহরাব!
জিম্বাবুয়ের সে দলটা কেমন ছিল, নতুন করে বলার কিছু নেই। দলে ছিলেন নিল জনসন, অ্যালিস্টার ক্যাম্পবেল, অ্যান্ডি ফ্লাওয়ার, গ্রান্ট ফ্লাওয়ার, মারে গুডউইন, গাই ও অ্যান্ডি হুইটালের মতো তারকারা। ক্রিকেট দুনিয়ায় তখন সেই জিম্বাবুয়ে কাঁপিয়ে দিচ্ছে সবাইকে। প্রথমে ব্যাট করতে নেমে মেহরাব আর শাহরিয়ার হোসেনের ব্যাটে দুর্দান্ত সূচনা পায় বাংলাদেশ। এই দুই ওপেনার মিলে ১৭০ রানের জুটি গড়েন, যা এখনো ওয়ানডেতে দেশের সর্বোচ্চ ওপেনিং জুটির রেকর্ড। শাহরিয়ার ধীরেসুস্থে খেলছিলেন, ওদিকে অপেক্ষাকৃত চড়াও ছিলেন মেহরাব। দলীয় ১৭০ রানে শাহরিয়ার আউট হয়ে গেলেও মেহরাব আউট হয়েছিলেন ইতিহাস গড়েই। ছোট বেলা থেকেই স্বপ্ন দেখেছেন দেশের জার্সি গায়ে সেঞ্চুরি করবেন। সেই সেঞ্চুরি করার সুযোগ যখন হাতের মুঠোয়, কীভাবে ছেড়ে দেন তিনি?
এই ম্যাচের আগের একটি ম্যাচে কেনিয়ার বিপক্ষে ৯৫ রান করে আউট হয়েছিলেন শাহরিয়ার। সে ম্যাচে জায়গা না পাওয়ার কারণে ইনিংসটা মেহরাব দেখেন দর্শক হয়ে। তখনই আশা করেছিলেন, দেশের হয়ে প্রথম সেঞ্চুরিটা যদি তাঁর হতো! মেহরাবের মনোবাসনা বুঝতে পেরে ক্রিকেট-দেবতা হয়তো ওপর থেকে মুচকি হেসেছিলেন। সৌভাগ্যবশত আরেক ওপেনার জাভেদ ওমরের জায়গায় একাদশে সুযোগ পেয়েই বাজিমাত করলেন মেহরাব। আর তাতেই বাংলাদেশ দেখল তাদের ইতিহাসের সর্বপ্রথম সেঞ্চুরি!
সেই সেঞ্চুরির বয়স আজ হলো বিশ বছর। সময় কত দ্রুতই না চলে যায়!