বাংলাদেশের স্পিনে নাজেহাল হয়েছে অস্ট্রেলিয়া
বাংলাদেশের স্পিনে নাজেহাল হয়েছে অস্ট্রেলিয়া

অস্ট্রেলিয়ার সংবাদমাধ্যমের চোখে

বাংলাদেশের সামনে ‘গড়পড়তারও নিচের’ অস্ট্রেলিয়া নেমেছে নতুন তলানিতে

লক্ষ্য খুব বেশি ছিল না, মাত্র ১৩২। কিন্তু শুরু থেকেই টালমাটাল অস্ট্রেলিয়ার হয়ে মিচেল মার্শই যা একটু লড়েছেন। তাঁর ৪৫ রানের বাইরে এই ব্যাটিংয়ে তারকাহীন অস্ট্রেলিয়া দলের কেউ দাঁড়াতে পারেননি। বাংলাদেশের স্পিনে কুপোকাত অস্ট্রেলিয়া কাল মিরপুরে সিরিজের প্রথম টি-টোয়েন্টি হেরে গেছে ২৩ রানে।

অস্ট্রেলিয়ার সংবাদমাধ্যম এ হারকে ভালোভাবে নিতে পারছে না। তাঁদের চোখে বাংলাদেশের ব্যাটিং গড়পড়তা ছিল, তবে অস্ট্রেলিয়ার ব্যাটিং ছিল গড়পড়তারও নিচে। এই হার তাদের চোখে নতুন এক তলানিতে নেমে যাওয়া। ম্যাচটা অস্ট্রেলিয়ায় যে দেখা যায়নি, এ নিয়েও ক্ষোভ আছে তাদের।

এবারের পাঁচ ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজের আগে বাংলাদেশের বিপক্ষে অস্ট্রেলিয়া টি-টোয়েন্টি খেলেছিল মাত্র চারটি। কাল পঞ্চম টি-টোয়েন্টিতে এসে বাংলাদেশের কাছে প্রথমবার হেরেছে অস্ট্রেলিয়ানরা।

সাকিবের উইকেট উদ্‌যাপনে সঙ্গী পুরো দল

দলে স্মিথ, ওয়ার্নার, ফিঞ্চদের কেউ নেই, বলতে গেলে দ্বিতীয় সারির ব্যাটিং নিয়েই বাংলাদেশে এসেছে অস্ট্রেলিয়া। কিন্তু এটি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আগে অস্ট্রেলিয়ার সর্বশেষ টি-টোয়েন্টি সিরিজ বলে এ সিরিজে অস্ট্রেলিয়ার ক্রিকেটপ্রেমীদের নজর আছে।

তার মধ্যে কালকের হারটি ছিল সর্বশেষ ১৬ টি-টোয়েন্টিতে অস্ট্রেলিয়ার ১১তম। করোনা মহামারির পর ক্রিকেট যখন শুরু হয়েছে, তারপর অস্ট্রেলিয়ার ১৬টি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ ফল দেখেছে, তার মধ্যে শুধু পাঁচটিতেই অস্ট্রেলিয়ানরা পেয়েছে জয়ের আনন্দ। বাংলাদেশে আসার আগে অস্ট্রেলিয়া টি-টোয়েন্টি সিরিজ হেরেছে ইংল্যান্ড, ভারত, নিউজিল্যান্ড ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আগে এমন কিছু ভাবা যায়!

বাংলাদেশের হয়ে কাল দারুণ বল করেন নাসুম আহমেদ

সে কারণেই কি না, বাংলাদেশের কাছে কাল এত কম লক্ষ্য তাড়া করতে নেমেও হারের পর অস্ট্রেলিয়ান সংবাদমাধ্যম নেমেছে কড়া সমালোচনায়। দ্য অস্ট্রেলিয়ান ম্যাচের প্রতিবেদনের শিরোনামে লিখেছে, ‘নতুন তলানিতে নেমেছে অস্ট্রেলিয়া!’

ম্যাচের প্রতিবেদনে লিখেছে, ওয়েস্ট ইন্ডিজের পর বাংলাদেশে এই সিরিজে খেলতে না আসা ডেভিড ওয়ার্নার, স্টিভ স্মিথ, অ্যারন ফিঞ্চরা যদি এ ভেবে শিহরিত থেকে থাকেন যে, ওয়েস্ট ইন্ডিজ আর বাংলাদেশে অন্যরা আলো ছড়ালে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে তাঁদের (স্মিথ-ওয়ার্নার) জায়গা শঙ্কায় পড়ে যাবে, সে শঙ্কা আর নেই। এক মিচেল মার্শ ছাড়া দুই সিরিজে অস্ট্রেলিয়ার কেউই যে ব্যাট হাতে আলো ছড়াতে পারেননি।

অস্ট্রেলিয়ার টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের দলের অনুমানে লিখেছে, মিচেল মার্শ হয়তো বিশ্বকাপের দলে জায়গা পাকা করে নিলেন, এবং ব্যাটিং অর্ডারের তিনেও জায়গার দাবিটা জোরাল করলেন।

বোলিংয়ে বাংলাদেশকে অল্পতেই গুটিয়ে দিয়েছিল অস্ট্রেলিয়া

সিডনি মর্নিং হেরাল্ড ম্যাচের প্রতিবেদনে লিখেছে, ‘স্বাগতিক দলকে ৭ উইকেটে ১৩১ রানের গড়পড়তা এক স্কোরে বেঁধে ফেলেছে অস্ট্রেলিয়া, কিন্তু নিজেরা এরপর গড়পড়তার চেয়েও কিছুটা বাজে ব্যাটিং করে ম্যাচটা হেরে গেছে ২৩ রানে।’ আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে অস্ট্রেলিয়া এর আগে কখনো এত কম লক্ষ্য তাড়া করতে ব্যর্থ হয়নি, বাংলাদেশের বিপক্ষে আগের চার ম্যাচেও হারেনি...এই তথ্যও জানিয়ে দিয়েছে পত্রিকাটি।

ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া অবশ্য বাংলাদেশের এ জয়ে পিচের অবদানকেই বড় করে দেখায়নি। বাংলাদেশের স্পিনারদের সামলাতে পারেনি অস্ট্রেলিয়া, এটিই তাদের চোখে অস্ট্রেলিয়ার হারের কারণ। ‘শেরে বাংলা স্টেডিয়ামের পিচ ধীর ছিল, কিন্তু একেবারে খেলার অসাধ্য ছিল না। এর মধ্যে স্পিনেই ৬ উইকেট হারিয়েছে অস্ট্রেলিয়া। ইনিংসের প্রথম ১৩ বলে ১১ রানের মধ্যে ৩ উইকেট হারিয়ে ইনিংসে অস্ট্রেলিয়া পথ হারিয়েছে’—লিখেছে ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া।