>বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কার কাছে লজ্জার হারে ভারত ২০০৭ বিশ্বকাপের গ্রুপ পর্ব থেকেই বিদায় নেয়। বিমর্ষ টেন্ডুলকার তখন ক্রিকেট ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েই ফেলেছিলেন প্রায়, তবে তাঁর বড় ভাই এবং কিংবদন্তি ক্রিকেটার ভিভ রিচার্ডসের কথায় শেষে মত পাল্টেছেন।
ক্যারিবিয়ানে অনুষ্ঠিত ২০০৭ বিশ্বকাপটা দুঃস্বপ্নের মতো ছিল ভারতের। দারুণ একটি দল নিয়ে বিশ্বকাপ খেলতে গিয়েও শেষে খালি হাতে ফিরতে হয়েছিল। টেন্ডুলকার, সৌরভ, দ্রাবিড়দের ভারত বাংলাদেশ এবং শ্রীলঙ্কার কাছে রীতিমত পর্যুদস্ত হয়েছিল। তারকাখচিত ব্যাটিং লাইনআপ নিয়েও গ্রুপ পর্বের তিন ম্যাচের দুটিতেই দুই শ পেরোতে পারেনি ভারত।
‘লিটল মাস্টার’শচীন টেন্ডুলকারও সেবার বলার মতো কোনো পারফরমেন্স করতে পারেননি। সচরাচর যার ব্যাটে রানের ফোয়ারা ছুটত, সেই টেন্ডুলকার কিনা বিশ্বকাপের তিন ম্যাচে রান করেছিলেন মোটে ৬৪! আর সেই হতাশায় কি না ক্রিকেট ক্রিকেটকে বিদায় বলার সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছিলেন প্রায়!
সম্প্রতি ইন্ডিয়া টুডে আয়োজিত ‘সালাম ক্রিকেট ২০১৯’ নামে একটি আয়োজনে টেন্ডুলকার জানান তার সেই সিদ্ধান্তের কথা। ক্রিকেট বিশ্বকাপ শেষে সেই কঠিন সিদ্ধান্তটি প্রায় নিয়ে ফেলার স্মৃতিচারণা করে টেন্ডুলকার বলেন, ‘আমার তখন মনে হয়েছিল এটাই শেষ। ভারতীয় ক্রিকেটকে ঘিরে তখন এমন অনেক ঘটনা ঘটছিল যা মোটেই গ্রহণযোগ্য ছিল না। আমাদের নির্দিষ্ট কিছু জায়গায় পরিবর্তনের দরকার ছিল, আমার মনে হয়েছিল যদি আকাঙ্ক্ষিত পরিবর্তনগুলো যদি না হয়, তাহলে আমি খেলা ছেড়ে দেব। আমার সিদ্ধান্ত নিয়ে আমি প্রায় ৯০ শতাংশ নিশ্চিত ছিলাম। কিন্তু আমার ভাই তখন আমাকে বলেছিল যে, ২০১১ বিশ্বকাপ ভারতে, তুমি কি সেই বিশ্বকাপ জয় করে ট্রফি উঁচিয়ে ধরতে চাও না?’
এরপর ভিভ রিচার্ডসের যখন ফোন আসে টেন্ডুলকারের কাছে তখন আর নিজের সিদ্ধান্তে অটল থাকেননি, ‘তারপর আমি আমার খামারবাড়িতে যাই। সেখানে আমার কাছে স্যার ভিভের ফোন আসে, তিনি আমাকে ক্রিকেট না ছাড়তে পরামর্শ দেন। তিনি বলেন, তোমার এখনো অনেক ক্রিকেট বাকি আছে। প্রায় ৪৫ মিনিট ভিভের সঙ্গে কথা হয় আমার, তার কথা আমাকে খুবই প্রভাবিত করে। যখন আপনার ব্যাটিং হিরো আপনাকে ফোন করে সেটি অবশ্যই দারুণ ব্যাপার। সেই মুহূর্তেই আমি আমার সিদ্ধান্ত বদলাই, আর এরপর পারফরমেন্সেও অনেক উন্নতি আসে।’
ওয়ানডেতে টেন্ডুলকারের পরের গল্পটা রূপকথার মতো। একদিনের ক্রিকেটে ইতিহাসে প্রথম ব্যাটসম্যান হিসেবে এক ইনিংসে ২০০ রান করেন টেন্ডুলকার। ২০১০ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি গোয়ালিয়রে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে এই ইনিংস খেলেন তিনি। এরপর ঘরের মাঠ মুম্বাইয়ের ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে ২০১১ বিশ্বকাপের ট্রফি উঁচিয়ে ধরার ভাগ্য হয়েছিল তাঁর। বিশ্বকাপের ভারতীয়দের মধ্যে সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহকও ছিলেন তিনি। ৯ ম্যাচে ৪৮২ রান করে দলের বিশ্বকাপ জয়ে অবদান রেখেছিলেন ‘লিটল মাস্টার’।