>বিসিবি একাদশের বিপক্ষে উড়ে যাওয়া জিম্বাবুয়ে বাংলাদেশ দলের সামনে দাঁড়াতে পারবে তো? এমন ভাবনা যাঁদের, তাঁদের জন্য জিম্বাবুইয়ান অধিনায়ক হ্যামিল্টন মাসাকাদজার বার্তা— বাংলাদেশকে এবার চ্যালেঞ্জ জানাতেই এসেছেন তাঁরা।
জিম্বাবুয়ের সংবাদ সম্মেলন শুরু হওয়ার কথা বেলা দেড়টায়। ১টা ৩৫ মিনিটে দলের ম্যানেজার সংবাদ সম্মেলনকক্ষে পাথুরে মুখে জানতে চাইলেন, ‘আচ্ছা, আমাদের অধিনায়ক ও কোচ কয়টায় কথা বলবে জানেন?’ বিস্মিত কণ্ঠে তাঁকে সময়টা বলা হলো। গটগট করে বেরিয়ে অধিনায়ক ও কোচকে ডাকতে গেলেন তিনি।
খানিক পরে এক দরজা দিয়ে ম্যানেজার কোচকে নিয়ে ঢুকলেন। আরেক দরজা দিয়ে এলেন অধিনায়ক হ্যামিল্টন মাসাকাদজা। কোচ লালচাঁদ রাজপুত ডায়াসে উঠবেন কি উঠবেন না, এ দ্বিধায় খানিকক্ষণ দাঁড়িয়ে থেকে সংবাদ সম্মেলনকক্ষ থেকে বেরিয়ে গেলেন। সংবাদ সম্মেলনটা হলো শুধুই মাসাকাদজার। না, এই দৃশ্য দেখেই জিম্বাবুয়ে দলকে ছন্নছাড়া বলার উপায় নেই। জিম্বাবুয়ে এবার নিজেদের অনেকটাই গুছিয়ে এসেছে। হতে পারে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে তাদের অবস্থান তলানিতে। তবে দলে হ্যামিল্টন মাসাকাদজার মতো অভিজ্ঞ অধিনায়ক আছেন। এক সাংবাদিক যখন তাঁকে প্রশ্ন করলেন, ২০১০ সালের পর থেকে বাংলাদেশের মাটিতে জিম্বাবুয়ে কোনো ম্যাচ জেতে না, সেটি কি তাঁর জানা আছে? প্রশ্নের উত্তরটা জোরের সঙ্গেই দিলেন মাসাকাদজা, ‘আমি তা মনে করি না। আমরা জিতেছি।’
আসলে ভুলটি সাংবাদিকেরই। ২০১০ সাল থেকে কেন, গত জানুয়ারিতে ত্রিদেশীয় সিরিজেও জিম্বাবুয়ে হারিয়েছে শ্রীলঙ্কাকে। সে ম্যাচে জিম্বাবুয়ে করেছিল ৬ উইকেটে ২৯০। চন্ডিকা হাথুরুসিংহের দল অলআউট হয় ২৭৮ রানে। জিম্বাবুয়ের ফাইনালের আশাও জেগেছিল ওই জয়ে। শক্তিমত্তা কিংবা মুখোমুখির পরিসংখ্যানে যতই স্বাগতিক বাংলাদেশ এগিয়ে থাকুক, জিম্বাবুয়ে হাবেভাবে বোঝাতে চাইছে, তাদের হালকাভাবে নেওয়ার সুযোগ নেই। বাংলাদেশ যদি কোনো ভুল করে, সেই ভুলের পুরো সুযোগ তারা নেবে।
ভুলের সুযোগ পরে, জিম্বাবুয়ে কিন্তু এই সিরিজে বাংলাদেশকে ফেবারিটই বলতে চায় না। মাসাকাদজা স্পষ্ট কণ্ঠে বললেন, ‘গত কয়েক বছরে বাংলাদেশ অনেক উন্নতি করেছে। বিশেষ করে ঘরের মাঠে। আমরা তাদের বিপক্ষে প্রায়ই খেলি। আমি মনে করি এখনো তাদের বিপক্ষে ভালো সুযোগ আছে। যদি আপনি ফেবারিট তকমার কথাই বলেন, আমি সেটি জিম্বাবুয়ের পাশেই রাখব।’
অবশ্য ভীষণ আত্মবিশ্বাসী হওয়ার মতো পরিসংখ্যান জিম্বাবুয়ের পক্ষে নেই। কাল আবার বিকেএসপির প্রস্তুতি ম্যাচে বিসিবি একাদশের বিপক্ষে উড়ে গেছে সফরকারীরা। তবুও মাসাকাদজা হতোদ্যম হতে চান না। তাঁর চোখ এখন সিরিজের প্রথম ওয়ানডেতে, ‘দক্ষিণ আফ্রিকায় আমাদের ভালো সময় যায়নি। কালকেও খারাপ করেছি। তবে আমরা আগামীকাল এই সফরে কী অর্জন করতে পারি, সেদিকে চোখ রাখছি। আমরা শুধু এখান থেকে এগিয়ে যেতে পারি। খেলোয়াড়েরা উন্মুখ আছে ভালো করতে।’
ভালো করতে জিম্বাবুয়েকে আরও একটি বিষয় অনুপ্রাণিত করছে। দুই দলের ঘন ঘন দেখা হওয়ায় কন্ডিশন ও প্রতিপক্ষ সম্পর্কে বেশ ভালো জানাশোনা আছে তাঁদের। মাসাকাদজা, সিকান্দার রাজার মতো কয়েকজন সিনিয়র খেলোয়াড় তো নিয়মিত বাংলাদেশের ঘরোয়া ক্রিকেটেও খেলেন। জিম্বাবুয়ে অধিনায়কের তাই প্রত্যাশা, সিরিজটা বেশ প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণই হবে।