>বিশ্বকাপে বাংলাদেশের প্রাপ্তিগুলোর একটি সাইফউদ্দিন। পেস অলরাউন্ডার হয়ে ওঠার সম্ভাবনা আরও উজ্জ্বল করেছেন সাইফ। তবে এখনো নিজেকে যে আরও তৈরি করে নিতে হবে, তাও বুঝছেন এই তরুণ তুর্কি
চট্টগ্রামে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচ, মাশরাফি বিন মুর্তজা ও মোস্তাফিজুর রহমান নতুন বলে বোলিং আক্রমণের শুরুটা করেন। কিন্তু কী ভেবে যেন, এক ওভার বল করেই নতুন বলটা সাইফউদ্দিনকে তুলে দিলেন অধিনায়ক। প্রথমবারের মতো নতুন বল হাতে পেয়েছিলেন মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন। হতাশ করেননি। নিজের প্রথম ওভারেই উইকেট। সেদিন থেকে নিয়মিত বল হাতে ইনিংসের শুরু করে আসছেন সাইফউদ্দিন। এবারের বিশ্বকাপেও এই দায়িত্ব পালন করেছেন। ৭ ম্যাচে ১৩ উইকেট নিয়েছেন ২২ বছর বয়সী পেসার।
নতুন বলের বোলারদের আউট সুইং থাকা জরুরি। সাইফের সেটা আছে। আর ডেথ ওভারে রিভার্স সুইং মেশানো ইয়র্কারে সবচেয়ে ধারাবাহিক বাংলাদেশি বোলার সাইফউদ্দিন। কিন্তু গতিটা যদি একটু বেশি হতো, তাহলেই পরিপূর্ণ বোলারে পরিণত হতে পারতেন সাইফ। তিনি নিজেও জানেন, গতি নিয়ে কাজ করার জায়গা আছে।
বিশ্বকাপে ১৩০ কিলোমিটারের আশপাশে বল করেছেন। গতিটা আরও ৫-৬ কিলোমিটার বাড়িয়ে নেওয়া নিয়ে কাজ করতে চান সাইফউদ্দিন। তবে গতি বাড়ানোর পথে প্রধান বাধা পিঠের চোট। পুরো বিশ্বকাপেই চোট নিয়ে খেলে গেছেন। সম্পূর্ণ সুস্থ সাইফউদ্দিনের গতি ১৩৫-এর আশপাশে। মোস্তাফিজুর রহমানের কথাই ধরুন, শুরুর দিকে ১২৫-১৩০ কিলোমিটারে বল করতেন, কিন্তু এক বছরের মাথায় ১৪০ কিলোমিটারে গতি তুলেছেন। ভারতের ভুবনেশ্বর কুমার, হার্দিক পান্ডিয়ারাও বলের গতি বাড়িয়েছেন।
সাইফউদ্দিনের কথায়, ‘পুরো বিশ্বকাপে চোট নিয়ে খেলেছি। পেসারদের জন্য মেরুদণ্ড হচ্ছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। শক্তিটা সেখান থেকে আসে। চোট থাকলে আপনি চাইলেও পারবেন না (জোরে বল করতে)। ৯-১০ বছর ধরেই এই সমস্যায় আছি আমি। আমি বিপিএলে ৮৭-৮৮ মাইলে বল করেছি। তখন আমি ভালো রিদমে ছিলাম, সুস্থ ছিলাম। তবে আমি বলব না যে আমি ১৪০-১৪৫ কিলো গতিতে বল করব। কিন্তু আমার ১৩৫-এ বল করার সামর্থ্য আছে।’
ক্রিকেট বিশ্বকাপে বোলিংয়ের সঙ্গে ব্যাটিংটাও ভালো করেছেন সাইফউদ্দিন। ভারতের ম্যাচে সাইফের অপরাজিত ৫১ রানের ইনিংসটি একপর্যায়ে আশা দেখাচ্ছিল বাংলাদেশকে। এর আগে নিউজিল্যান্ড সিরিজ, ঢাকা প্রিমিয়ার লিগেও বেশ কিছু ম্যাচে বড় জুটি গড়তে দেখা গেছে সাইফকে। তবে এখনই হার্দিক পান্ডিয়া হয়ে যাননি। নিজের ব্যাটিংয়ের উন্নতিটা ধাপে ধাপে করতে চান সাইফ, ‘একেকজনের শক্তির জায়গা একেক রকম। আমার শক্তির জায়গা আমি জানি। টেকনিক্যালি অনেক রান করা যায়। শুধু চার-ছয়েই যে রান নিতে হবে তা নয়।’
সাইফউদ্দিন নিজের সামর্থ্যে বিশ্বাসী। তিনি পারবেন, আজ না হলেও কাল পারবেন, এমন দৃঢ়চেতা মনোভাবই তাঁকে এই পর্যায়ে নিয়ে এসেছে। সামনেও এই মানসিকতা লালন করতে চান, ‘আমি ছোট থেকেই কষ্ট করে এসেছি। কোনো কিছুই সহজেই পাইনি। মোস্তাফিজ, মিরাজদের মতো শুরু কখনোই হয়নি। ধাপে ধাপে এগোতে হয়েছে আমাকে। অনেক ধাক্কা পেরিয়েই আজ আমি এখানে। বিপিএল, ঢাকা লিগ বলেন, কোথায় শুরু ভালো হয়নি আমার। প্রথম, দ্বিতীয়বার কিছু হয় না। তৃতীয়, চতুর্থবারে হয়।’