পাকিস্তানের ক্রিকেটাররা তখনো মাঠে। জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে অনুশীলনের শেষ পর্ব চলছিল তখন। ঠিক ওই সময়েই মাঠে চলে আসেন মুশফিকুর রহিম। বাংলাদেশ দলের বাকি ক্রিকেটাররা তখনো হোটেল থেকেই বের হননি। অনুশীলনের সময় ঠিক করা আছে বেলা দেড়টায়, এত আগে তাঁদের মাঠে আসার কোনো কারণও নেই। কিন্তু মুশফিক বলে কথা! যথারীতি সবার আগে দুপুর ১২টাতেই তিনি মাঠে।
দলের অনুশীলনে যোগ দেওয়ার আগে আধঘণ্টা করলেন ব্যাটিং অনুশীলন, এরপর আরও মিনিট পনেরো খেললেন টিম বয়দের স্পিনের মতো হাত ঘুরিয়ে করা বোলিং। প্রায় ৪৫ মিনিটের এই অনুশীলন পর্বের পর সন্তুষ্টই মনে হলো মুশফিককে। টেস্ট সিরিজের আগে হয়তো সেটি তাঁকে কিছুটা বাড়তি আত্মবিশ্বাসও জোগাবে
নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ঘরের মাঠের টি-টোয়েন্টি সিরিজ থেকেই ধারাবাহিকভাবে রান পাচ্ছেন না। বিশ্বকাপে দলের বাজে পারফরম্যান্সের পর সংবাদ সম্মেলনে হয়েছেন উচ্চকণ্ঠ। এরপর দেশে ফিরে সমালোচনা করেছেন পাকিস্তানের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজ থেকে তাঁকে বাদ দেওয়ার প্রক্রিয়ারও।
পরে তাঁকে নির্বাচকদের মুখোমুখি করিয়ে সমস্যার একটা আপাত-সমাধান হলেও মুশফিক ভালো করেই জানেন, সবকিছুর জবাব তাঁকে দিতে হবে ব্যাট হাতেই। তার আগে অনুশীলনে যতটা পারছেন, চেষ্টা করছেন সবদিক দিয়ে নিজেকে শাণিত করার। টি-টোয়েন্টি সিরিজ চলাকালেই চট্টগ্রামে এসে যোগ দিয়েছেন টেস্ট দলের সঙ্গে। কাল তো পুরো দলকেই একসঙ্গে পেলেন। ব্যক্তিগত অনুশীলনের পর দলের গা গরমের ভলিবল ম্যাচটার উদ্যোক্তাও তিনি। কদিন আগে দলছুট হয়ে যাওয়া মুশফিকই যেন এদিন দারুণ একজন ‘টিম-ম্যান’!
অনুশীলনে বরাবরই পরিশ্রমী মুশফিক। কালও যেমন ব্যক্তিগত অনুশীলনের পর দলের অনুশীলনেও ব্যাট হাতে নেটে গেছেন। টেস্টে উইকেটকিপিং ছেড়েছেন এক বছর হতে চলল। এখন তাই ব্যাটিং অনুশীলন শেষ হতে না হতেই বাউন্ডারি সীমানায় চলে যান কোচদের কাউকে নিয়ে। কালও সেটাই করলেন। দীর্ঘ সময় ধরে ক্যাচিং অনুশীলন, মাঝমাঠে গিয়ে উইকেটের আচরণ বোঝার চেষ্টা—মাঝে অভিমানী হয়ে উঠলেও জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে কাল যেন ফিরে পাওয়া গেল আগের সেই মুশফিককেই। এখন অপেক্ষা টি-টোয়েন্টির হতাশা কাটিয়ে টেস্টের ব্যাট হাতে আসল মুশফিককে দেখার।