মিরপুর প্রস্তুত বিপিএল ফাইনালের জন্য
মিরপুর প্রস্তুত বিপিএল ফাইনালের জন্য

ফাইনাল জমিয়ে তুলতে প্রস্তুত মিরপুরও

‘একটু চোখ রাঙানি দেন না ভাই’—বিপিএল ট্রফি হাতে হাসতে দেখে নুরুল হাসান ও ইমরুল কায়েসকে উদ্দেশ করে বললেন বিসিবির একজন কর্মকর্তা। কথাটা শুনে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ানসের অধিনায়ক ইমরুল উল্টো আরও চওড়া হাসি দিয়ে বললেন, ‘কী বলেন! আমরা তো একই দলের খেলোয়াড়।’

ইমরুলের কথায় ফরচুন বরিশালের সহ-অধিনায়ক নুরুলও হাসি দিয়ে সম্মতি জানালেন, বিপিএল সাময়িক একটা দেয়াল তুললেও তাঁরা তো বাংলাদেশ দলেরই খেলোয়াড়! তবে বিপিএলের ট্রফি উন্মোচন অনুষ্ঠানে দুই ফাইনালিস্ট দলের প্রতিনিধির এমন বন্ধুত্বপূর্ণ মনোভাব নিশ্চয়ই আজ মাঠে দেখা যাবে না। ফাইনালের রাতে দুই দলই চাইবে শিরোপার উৎসব করতে।

বিকেল সাড়ে পাঁচটায় শুরু হবে বিপিএল ফাইনাল

ফাইনাল পর্যন্ত আসার পথটাতেও দুই দলের যথেষ্টই মিল আছে। দুই দলই লিগ পর্ব শেষ করেছে পয়েন্ট তালিকার শীর্ষ দুইয়ে থেকে। বরিশাল প্রথম কোয়ালিফায়ারে জিতে ফাইনালে আগে পা রাখলেও কুমিল্লাকে আসতে হয়েছে দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ার খেলে। তবে শক্তির বিচারে যে বিপিএলের সেরা দুই দলই আজ শিরোপার লড়াইয়ে মুখোমুখি হতে যাচ্ছে, তা নিয়ে কোনো সন্দেহ নেই।

আজ বিকেল সাড়ে পাঁচটায় শুরু হতে যাওয়া ফাইনালটা জমজমাট করার মঞ্চ প্রস্তুত করে রেখেছে বিসিবিও। বিপিএলে এবার শুরুর দিকে কিছু ম্যাচে উইকেট মন্থর ছিল। তবে ফাইনালের উইকেট ব্যাটিংবান্ধব হবে বলেই জানালেন একজন মাঠকর্মী। আর ফাইনালে রান বাড়াতে মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামের বাউন্ডারিও কিছুটা ছোট করে আনা হয়েছে। ছোট্ট হয়ে আসা লং অন, লং অফ বাউন্ডারি দেখে নিশ্চয়ই আরও আগ্রাসী হয়ে উঠবেন ক্রিস গেইল, ফাফ ডু প্লেসিরা।

ফাইনালের আগের দিন দুই দলই মিরপুরে অনুশীলন করেছে। তবে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ানসের অনুশীলন ছিল ঐচ্ছিক। গতকাল অবশ্য দলের সঙ্গে অনুশীলনে আসেননি সাকিব। তাঁকে দেখা যায়নি ট্রফি উন্মোচন অনুষ্ঠানেও। সাকিবের দলের প্রতিনিধি হিসেবেই সে অনুষ্ঠানে পাঠানো হয়েছিল সহ-অধিনায়ক নুরুলকে। তখন বরিশাল দলের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছিল, সাকিব পেটের পীড়ায় আক্রান্ত হয়েছেন। তবে সাকিবের কী হয়েছে, সেটি ঠিক নিশ্চিত করতে পারেননি নুরুল। অবশ্য পরে একটি সূত্রে জানা গেছে, সাকিব নাকি একটি বিজ্ঞাপনের শুটিংয়ে অংশ নিতে গিয়েছিলেন। দুই দলে আর কোনো চোট–সমস্যা আছে বলেও শোনা যায়নি।

এই ট্রফির লড়াই আজ বিকেল

বিপিএলে এবার লিগ পর্ব ও প্লে অফ মিলিয়ে এর আগে কুমিল্লা-বরিশালের দেখা হয়েছে তিনবার। তাতে দুই ম্যাচ জিতে এগিয়ে সাকিবের বরিশালই। অবশ্য ফাইনালে আজ হিসাবটা সমান করতে চাইবে ইমরুলের কুমিল্লা। একটা অলিখিত লড়াই আছে দুই দলের কোচদের মধ্যেও। ঘরোয়া ক্রিকেটে কুমিল্লার কোচ মোহাম্মদ সালাউদ্দিন আর বরিশালের কোচ খালেদ মাহমুদের মধ্যে অনেক আগে থেকেই চলে আসা অদৃশ্য প্রতিযোগিতাটার কথা কে না জানে!

তবে কাল সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় মাহমুদ সে প্রসঙ্গে যেতেই চাইলেন না। ফাইনালে মাঠের ক্রিকেটটাকেই এগিয়ে রাখলেন তিনি, ‘সালাউদ্দিন ওর মতো পরিকল্পনা করবে, আমি আমার মতো। আমরা দুজনই চেষ্টা করি ভালো দল বানাতে, ভালো ক্রিকেট খেলতে। তবে এটা তো স্রেফ একটা ম‍্যাচ। ফাইনালে যার দল ভালো খেলবে, যাদের পরিকল্পনা বাস্তবায়ন ভালো হবে, তারাই চ্যাম্পিয়ন হবে।’

একটা কথা বোধ হয় বলতে ভুলে গেছেন মাহমুদ। ফাইনালের জন্য সাজানো শেরেবাংলা স্টেডিয়ামের মঞ্চটাকে যাঁরা ভালো কাজে লাগাতে পারবেন, শিরোপা জয়ের উল্লাসে মাতবেন তাঁরাই।