আধুনিক ক্রিকেটে দুই দলের দ্বৈরথ বেশ জমকালো। দুই দলই বিশ্ব ক্রিকেটের অন্যতম পরাশক্তি। ২০১৬ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ সেমিফাইনাল, ২০১৯ বিশ্বকাপ ফাইনালের পর এবার ২০২১ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে মুখোমুখি ইংল্যান্ড ও নিউজিল্যান্ড। আগের দুবারই জিতেছে ইংল্যান্ড, এবার বদলাবে ফলটা?
সেমিফাইনালের আগে দলের সম্ভাবনা, সামর্থ্য, প্রতিপক্ষের শক্তিমত্তা নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে কথা বলেছেন দুই অধিনায়ক। ইংলিশ অধিনায়ক এউইন মরগান বেশ আশাবাদী, ফাইনালে উঠবেন তাঁরা। বেশ কিছু বিষয়ে গতকাল কথা বলেছেন মরগান। দেখে নিন এক নজরে!
প্রতিপক্ষ নিউজিল্যান্ড
তাদের বিপক্ষে খেলতে তর সইছে না আমাদের। গ্রুপ পর্বে শীর্ষে থেকে এসেছি, তবে সেরা খেলাটাই খেলতে হবে। আমরা জানি তারা কেমন ধারাবাহিক ও ভালো দল। কেইনের অধীনে নিউজিল্যান্ড সব সময়ই প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক, চ্যালেঞ্জ জানানোর মতো একটা দল। ধারাবাহিকভাবে সেমিফাইনাল, ফাইনাল খেলছে। দল হিসেবে সমন্বিত প্রচেষ্টাই তাদের সবচেয়ে বড় শক্তি। এ ম্যাচে ‘স্ট্রং ফেবারিট’ বলব না নিজেদের। তার ওপর তাদের দলটা পূর্ণ শক্তির, আমাদের চোটের সমস্যা আছে। তবে সবাই মুখিয়ে আছে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে খেলতে।
জেসন রয়ের জায়গায় কে
কে ওপেন করবে, সিদ্ধান্ত নিয়েছি। তবে এখনোই বলছি না। তার জায়গায় কে আসবে, সেটা দলের ভারসাম্য, উইকেট দেখে সিদ্ধান্ত নেব। একজন বোলার খেলালে আমাদের হাতে ২৮ ওভার বোলিং করানোর মতো সুবিধা থাকবে। আর ব্যাটসম্যান খেলালে সেটা হবে ‘যার জায়গায় যাকে দরকার’ ধরনের বদলি। তবে উইকেট দেখার পরই বাড়তি একজন ব্যাটসম্যান বা বোলার খেলানোর সিদ্ধান্ত নেব।
চোটের আঘাতের পর ফাইনালে গেলে...
অভিজ্ঞতার শূন্যতা পূরণ করা সম্ভব নয়। জেসন তেমনই ক্রিকেটার। তবে সবার ক্ষেত্রেই আমরা যা করেছি, অন্য কোনো শক্তিমত্তা কাজে লাগিয়ে সে শূন্যতা পূরণের চেষ্টা করেছি। অবশ্যই এবার আমাদের বড় অনেক নাম নেই। তবে মনোবল হারাইনি, এটাই আমাদের দলের বড় শক্তি। ২০১৫ সালের পর ৫০ ওভারের ক্রিকেটে আমরা যা অর্জন করেছি, সেসবেই প্রতিফলিত হয়েছে সেটা। শেষ গ্রীষ্মেও পাকিস্তানের বিপক্ষে আমাদের ১৫ জন খেলোয়াড় বদলাতে হয়েছিল, কিন্তু ৩-০ ব্যবধানে জিতেছি। এবারও এমন পরিস্থিতিতে ফাইনালে যেতে পারলে সেটা দারুণ একটা অর্জনই হবে।
নতুন কারও এসেই ভালো করা
এটা আমাদের ড্রেসিং রুমের একটা শক্তির জায়গা। সহযোগী স্টাফ, প্রধান কোচের কৃতিত্ব। তরুণেরা এসে ভালো একটা সংস্কৃতি পায়। আমাদের জন্য কাজে দিচ্ছে এটা। হ্যাঁ, আমাদের স্কোয়াডের শক্তিমত্তা ও গভীরতা আছে। যেকোনো সময় আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলার মতো ৩০-৪০ জন আছে ঘরোয়া ক্রিকেটে। তবে পরিবেশটা ঠিক না থাকলে যে দলই বেছে নিন না কেন, কোনো লাভ হবে না।
২০১৫ বিশ্বকাপের পর গুরুত্বপূর্ণ সব ম্যাচে জয়
আমার মনে হয় না, সেসব থেকে আত্মবিশ্বাস পাব। কারণ, প্রায় অর্ধেক ক্রিকেটারই এবার খেলছে না, সেখান থেকে খুঁজতে গেলে অর্ধেক আত্মবিশ্বাস মিলবে। আমরা সাম্প্রতিক ফর্ম থেকেই আত্মবিশ্বাস খুঁজব। কীভাবে কঠিন মুহূর্ত সামলেছি, প্রতিপক্ষের হাত থেকে ম্যাচ ছিনিয়ে নিয়েছি।
স্টোকস হতে পারবেন কি লিভিংস্টোন
আমি লিভিংস্টোনের বড় ভক্ত। অবশ্যই তার স্টোকসের মতো দলের প্রয়োজনে ম্যাচের যেকোনো সময় ভূমিকা রাখার সামর্থ্য আছে। আমরা চাই, সে আক্রমণাত্মকই খেলুক। কাজটা কিন্তু সহজ নয়, ওসব পরিস্থিতিতে খেলতে অনেক ঝুঁকি নিতে হয়। তবে সে এটা নিতে চায়, দারুণ একটা ব্যাপার। দলে নতুন কেউ এলে হয়তো শুরুতে দায়িত্বটা পরিষ্কার হওয়ার একটা ব্যাপার থাকে। তবে আমার দেখা অন্যতম নিঃস্বার্থ ক্রিকেটার সে। এমনভাবে ব্যাটিং করে, মারতে শুরু করলে তাকে থামানোটা কঠিন।
ইয়র্কশায়ারে বর্ণবাদ-ঝড়
আমরা বৈষম্য নিয়ে কথা বলতে পিছপা হই না। আমরা বিভিন্ন জায়গা থেকে উঠে এসেছি। ২০১৯ বিশ্বকাপের পর থেকে আমরা এসব নিয়ে আলোচনা করেছি। যখন ছোট ছিলাম, তখন আমাদের স্বপ্ন কী ছিল, এখন যারা ছোট তাদের স্বপ্ন কেমন, সেসব ভাবার চেষ্টা করি। তবে আমার মতে, যখন পরিবর্তন শুরু হয়, বিশেষ করে একেবারের শুরুর দিকে সবার মতটাই শোনা উচিত।