এড রেইন্সফোর্ডের সঙ্গে ধারাভাষ্য দিচ্ছেন তামিম
এড রেইন্সফোর্ডের সঙ্গে ধারাভাষ্য দিচ্ছেন তামিম

প্লে-অফে নেই, ধারাভাষ্যে অভিষেক তামিমের

‘থ্রো–টা আরেকটু ভালো হলে অন্য রকম হতে পারত ঘটনাটা!’

নাসুম আহমেদের বলে ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্টে খেলে সিঙ্গেল নিয়েছিলেন মুশফিকুর রহিম। আন্দ্রে ফ্লেচার শেষ পর্যন্ত ক্রিজে পৌঁছাতে ডাইভ দিলেন। আকবর আলী যতক্ষণে থ্রো ধরে স্টাম্প ভাঙলেন, ফ্লেচার ঢুকে গেছেন ক্রিজে। থ্রো–টা আরেকটু ভালো হলে সে বলের ‘ফল’টা আদতেই অন্য হতো, রিপ্লে দেখে অন্তত সেটাই মনে হলো।

এ ঘটনা উল্লেখ করার কারণ একটিই—ওপরের বলা কথাটা তামিম ইকবালের। সেটিও টেলিভিশন ধারাভাষ্যে। বিপিএলে চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স ও খুলনা টাইগার্সের এলিমিনেটর ম্যাচে অন্য রকম অভিষেক হয়ে গেল বাংলাদেশের ওয়ানডে অধিনায়কের। প্রথমবারের মতো ধারাভাষ্য দিতে দেখা গেল তাঁকে।

আতহার আলী খানের সঙ্গে ধারাভাষ্য দিচ্ছেন তামিম

খুলনার ব্যাটিংয়ের সময় ধারাভাষ্যে আসেন তামিম। প্রথমে এড রেইন্সফোর্ড, পরে আতহার আলী খানের সঙ্গে ধারাভাষ্য দেন। সেখানে ম্যাচের বিশ্লেষণ যেমন করেছেন, তেমনি প্রসঙ্গক্রমে কথা বলেছেন জাতীয় দল নিয়েও। পরে তামিমের ধারাভাষ্যের প্রশংসা করেছেন অভিজ্ঞ ধারাভাষ্যকার আতহার।

তামিম ইকবালের দল মিনিস্টার ঢাকা শেষ চারের আগেই বাদ পড়েছে বিপিএল থেকে। গ্রুপ পর্বের শেষ দিনে খুলনা বা চট্টগ্রামের যেকোনো দল হারলেই শেষ চারে আসতে পারত ঢাকা। তবে শেষ পর্যন্ত সেটি হয়নি। বিপিএলের এ মৌসুমে এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক তামিমেরও তাই প্লে-অফ খেলা হচ্ছে না।

আতহার আলী ছাড়াও অতীতে জাতীয় দলের সাবেক ক্রিকেটারদের মধ্যে টেলিভিশনে সাম্প্রতিক সময়ে ধারাভাষ্য দিয়েছেন শাহরিয়ার নাফীস, মেহরাব হোসেন জুনিয়রও। তবে পরের দুজনের ধারাভাষ্য-ক্যারিয়ার দীর্ঘ হয়নি খুব একটা। এ ছাড়া আইপিএলে একবার বাংলায় ধারাভাষ্য দিতে গিয়েছিলেন সাবেক অধিনায়ক ও এখনকার নির্বাচক হাবিবুল বাশার।


তামিম অবশ্য তাঁর ‘ক্যামেরা’র সামনে কথা বলার দক্ষতা দেখিয়েছেন আগেই। করোনা মহামারি শুরুর পর বিধিনিষেধে নিজেই শো শুরু করেছিলেন ফেসবুকে। সেখানে তামিমের অতিথি হয়ে এসেছিলেন বিরাট কোহলি, ফাফ ডু প্লেসি, রোহিত শর্মা, কেইন উইলিয়ামসন, ওয়াসিম আকরামসহ বাংলাদেশ ও দেশের বাইরের অনেক সাবেক ও বর্তমান ক্রিকেট তারকা।

সে ‘শো’ দর্শকপ্রিয়তা পেয়েছিল বেশ। খেলা ছাড়ার পর তামিম এখন ধারাভাষ্যে ভবিষ্যৎ ক্যারিয়ার গঠনের কথা ভাবতেই পারেন!

ধারাভাষ্যের অভিজ্ঞতা নিয়ে পরে অবশ্য সাংবাদিকদের তামিম বলেছেন, ‘আমি এমনিতেই বোর্ডে এসেছিলাম, মিটিং ছিল। শেষ পাকিস্তান সিরিজেও বলা হয়েছিল (ধারাভাষ্যের কথা), তবে করা হয় নাই। এবার একটু চেষ্টা করে দেখলাম, কেমন লাগে। আতহার ভাইদের সঙ্গে করলাম। “ইন্টারেস্টিং”। আমি তো আসলে ধারাভাষ্য করি নাই সেভাবে বলতে গেলে, নিজেকে নিয়েই কথা বলছিলাম, খেলা নিয়ে টুকটাক বলেছি। “ইন্টারেস্টিং” ব্যাপার। হয়তো ভবিষ্যতের জন্য ভাবা যেতে পারে। তবে এ মুহুর্তে চিন্তা-ভাবনা নাই।’

তামিম প্রশংসা করেছেন টেলিভিশন ধারাভাষ্যে বাংলাদেশের অভিজ্ঞ দুজন—আতহার ও শামীম আশরাফেরও, ‘দেখেন, ওনাদের কাছ থেকে প্রশংসা পাওয়া গুরুত্বপূর্ণ না। বরং তাদের নিয়ে আমাদের বলাটাই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ আমাদের ক্রিকেটের দিকটা নিয়ে খুব বেশি কথা বলি না। চিন্তা করেন, বাংলাদেশ দল যখন খারাপ খেলে, আজ থেকে কয়েক বছর আগে আমরা যখন ম্যাচ হারতে থাকতাম, আতহার ভাই-শামীম ভাইরাই “পিলার” ছিলেন। বাকি ২০ জনের সামনে বাংলাদেশকে ছোট হতে দেন নাই তারা। তারা সমর্থন করে গেছেন, কঠিন কাজটা করেছেন। এটারই প্রশংসা করা উচিৎ আসলে। আমিও আতহার ভাইকে এটিই বলেছি আজ।’