পিএসএলের শিরোপা নিয়ে উদযাপন মুলতান সুলতানসের খেলোয়াড়দের।
পিএসএলের শিরোপা নিয়ে উদযাপন মুলতান সুলতানসের খেলোয়াড়দের।

পিএসএল

পেশোয়ারকে হারিয়ে মুলতানের প্রথম শিরোপা

পাকিস্তান সুপার লিগে (পিএসএল) আজ ফাইনালে পেশোয়ায় জালমিকে ৪৭ রানে হারিয়ে প্রথমবারের মতো এই ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগে চ্যাম্পিয়ন হলো মুলতান সুলতানস।

আগে ব্যাট করে ৪ উইকেটে ২০৬ রান তোলে মুলতান। তাড়া করতে নেমে ২০ ওভারে ৯ উইকেটে ১৫৯ রানে থেমেছে পেশোয়ারের ইনিংস।

জিততে হলে পিএসএল ফাইনালের ইতিহাসে রান তাড়া করে জয়ের রেকর্ড গড়তে হতো পেশোয়ারকে। সে লক্ষ্যে প্রথম পাওয়ার প্লে-তেই পিছিয়ে পড়ে ওয়াহাব রিয়াজের দল। ৫ ওভার শেষে তাদের রান ছিল বিনা উইকেটে ৩৬। এর মধ্যে কামরান আকমল একাই ২৭ বলে ৩৬, আরেক ওপেনার হজরতউল্লাহ জাজাই ৩ বলে ০!

পেশোয়ারের আগের দুই ম্যাচে ঝোড়ো ফিফটি পাওয়া এবং মারকুটে ব্যাটিংয়ে সিদ্ধহস্ত জাজাই পাওয়ার প্লে-তে বেশি বল খেলার সুযোগ পেলে স্কোরকার্ডের চেহারা অন্যরকম হতে পারত।

লক্ষ্য বিচারে কামরানের রানের সঙ্গে বলসংখ্যা যে কারও চোখে বিঁধবে। পেশোয়ারের বিপদ আরও বাড়ে যখন ষষ্ট ওভারের প্রথম বলে ছক্কা মেরে পরের বলেই আউট হন জাজাই (৫ বলে ৬)। মুলতানের জিম্বাবুইয়ান পেসার ব্লেসিং মুজারাবানিকে কাট করতে গিয়ে আউট হন জাজাই।

চ্যাম্পিয়ন হওয়ার উদযাপন মুলতানের খেলোয়াড়দের।

পাওয়ার প্লে শেষে পরের ওভারে কামরান আকমলও ফিরে যান। জাজাই আউট হওয়ায় যখন তাঁর হাল ধরার কথা, তখনই ইমরান খানের গতির কাছে হার মেনে বোল্ড কামরান (৩৬)। পেশোয়ারের সংগ্রহ তখন ৬.১ ওভারে ২ উইকেটে ৪২। এখান থেকে ম্যাচে ফেরার কঠিন হয়ে ওঠে পেশোয়ারের জন্য।

১০ ওভার শেষে ১ উইকেটে ৭৩ রান ছিল মুলতানের। পেশোয়ার এ পর্যন্ত মাত্র ১০ রানে পিছিয়ে থাকলেও ৩টি উইকেট হারানোয় চাপে পড়ে। ১০ম ওভারে রান আউট হন পেশোয়ারের জোনাথন ওয়েলস (৬)।

জয়ের জন্য বাকি ১০ ওভারে ১৪৪ রান দরকার ছিল পেশোয়ারের। এখান থেকে শোয়েব মালিক ও রোভম্যান পাওয়েল ঝোড়ো জুটিতে দলকে ম্যাচে ফেরানোর চেষ্টা করেন। শেষ ৬ ওভারে ৮৩ রান দরকার ছিল পেশোয়ারের।

ফিফটি তুলে নেওয়া রাইলি রুশোর উদযাপন। পাশে তাঁর সতীর্থ শোয়েব মাকসুদও ফিফটি তুলে নেন।

১২, ১৩ ও ১৪তম ওভার থেকে মোট ৫৫ রান তোলেন দুজন। কিন্তু ১৫তম ওভারে এসে প্রথম বলেই পাওয়েলকে (১৪ বলে ২৩) উইকেটের পেছনে ক্যাচে পরিণত করেন মুজারাবানি। এর মধ্যে দিয়ে ভেঙে যায় শোয়েব মালিক-পাওয়েলের ৩০ বলে ৬৬ রানের জুটি।

জয়ের জন্য শেষ ৫ ওভারে ৭০ রান দরকার ছিল পেশোয়ারের। ১৬তম ওভারের প্রথম বলে শোয়েব মালিককে (২৮ বলে ৪৮) তুলে নেন মুলতান পেসার সোহেল তানভির।

আমাদ বাট ও শেরফান রাদারফোর্ড মিলে পাল্টা লড়াইয়ের চেষ্টা করেছিলেন। ১০ বলে ১৮ রান করা রাদারফোর্ড মুলতান লেগ স্পিনার ইমরান তাহিরের শিকার হন।

৪৮ রান করে আউট হন পেশোয়ারের শোয়েব মালিক।

১৭তম ওভারে রাদারফোর্ডকে তুলে নেওয়ার এক বল পর ওয়াহাব রিয়াজকেও ড্রেসিং রুমে ফেরান এই প্রোটিয়া তারকা। পরের বলে মোহাম্মদ ইমরানকেও ফিরিয়ে মুলতানের জয়কে স্রেফ সময়ের ব্যাপারে পরিণত করেন তাহির। ৪ ওভারের (৩/৩৩) কোটা শেষ না হলে কে জানে হয়তো হ্যাটট্রিকও তুলে নিতে পারতেন!

১৭ ওভারে ৮ উইকেটে ১৫১ রান তোলা পেশোয়ার ততক্ষণে ম্যাচ থেকে ছিটকে পড়েছে। শেষ পর্যন্ত পুরো ২০ ওভার খেলতে পারলেও বড় ব্যবধানে হার মানতে হয় তাদের।

আবুধাবিতে অনুষ্ঠিত ফাইনালে এর আগে রাইলি রুশো ও শোয়েব মাকসুদের ঝোড়ো ফিফটিতে দুইশ রান টপকে যায় মুলতান। ৩ ছক্কা ও ৫ চারে ২১ বলে ৫০ রান করেন রুশো। ৩ ছক্কা ও ৬ চারে ৩৫ বলে ৬৫ রানে অপরাজিত ছিলেন মাকসুদ। দুজনে তৃতীয় উইকেটে ৪৪ বলে ৯৮ রানের জুটি গড়েন।

মুলতানের হয়ে ওপেনিং জুটিতে ভালো সূচনা এনে দেন অধিনায়ক মোহাম্মদ রিজওয়ান (৩০ বলে ৩০) ও শান মাসুদ (২৯ বলে ৩৭)। ৮.৪ ওভারে ৬৮ রানের জুটি গড়েন দুজন। পেশোয়ারের হয়ে ২টি করে উইকেট সামিন গুল ও মোহাম্মদ ইমরানের।

মুলতানের হয়ে ৩৩ রানে ৩ উইকেট নেওয়া তাহির সেরা বোলার। ২টি করে উইকেট ইমরান খান ও মুজারাবানির। ম্যাচসেরা মুলতানের শোয়েব মাকসুদ।