>চতুর্থ ওয়ানডেতে পাকিস্তানকে ১৬৫ রানের লক্ষ্য দিতে পেরেছিল দক্ষিণ আফ্রিকা। পাকিস্তান জিতেছে ৮ উইকেটে। সিরিজে ২-২ সমতা
৩ উইকেট হারিয়ে ১৩০ রান নিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকা ৩১তম ওভারে পা দিয়েছিল। সাধারণ হিসাবে বলে, হাতে উইকেট থাকলে শেষ ২০ ওভারে স্কোরটা দ্বিগুণ হয়। ২৬০-২৭০ হওয়া কী এমন কঠিন! ১৩০ রানে চতুর্থ, ১৪০ রানে পঞ্চম উইকেট হারিয়েও দক্ষিণ আফ্রিকা কল্পনা করতে পারেনি, কী বিপদ ধেয়ে আসছে। ৫ উইকেটে ১৫৬ রান তুলে ফেলা দলটা ১৬৪ রানে অলআউট! মাত্র ৮ রানে নেই শেষ ৫ ব্যাটসম্যান।
পিংক ওডিআই এর আগে কখনো হারেনি প্রোটিয়ারা। পাকিস্তানি বোলাররা যে ধাক্কাটা দিয়েছিল, ব্যাটসম্যানদের আঘাত হলো আরও জোরদার। ফর্মের তুঙ্গে থাকা ইমাম-উল হকের (৭১) সৌজন্যে পাকিস্তান ম্যাচ জিতল ৮ উইকেট আর ১১২ বল হাতে রেখে। ৯ উইকেটে পাকিস্তান জিতল না স্কোর সমান রেখে সাজঘরে ইমাম ফেরায়। এই সিরিজে এর আগে ৮৫ আর ১০১ রানের ইনিংস খেলে মামা ইনজামাম-উল হকের নামের রোশনাই আরও বাড়িয়েছেন এই তরুণ। পিংক ওডিআইয়ে লজ্জায় লাল হতে হলো দক্ষিণ আফ্রিকাকে। নিয়মিত অধিনায়ককে হারিয়ে ফেলা ম্যাচেই সিরিজে ২-২ সমতা ফেরাল পাকিস্তান।
শক্তিশালী স্কোরের দিকেই এগিয়ে যাচ্ছিল স্বাগতিকেরা। কিন্তু হঠাৎ ঝড়ে এলোমেলো। ঝড়ের নাম উসমান শিনওয়ারি। তাঁর বোলিং তোপেই লেজটা এভাবে গুটিয়ে গেল তাদের। শেষ ৫ উইকেটের তিনটিই শিনওয়ারির। সব মিলে ৩৫ রানে ৪ উইকেট এই তরুণের। আর ১৬৫ রান যে কোনো লক্ষ্যই নয় ফখর জামানের (৪৪) সঙ্গে ৭০ রানের উদ্বোধনী জুটিতেই তা বুঝিয়ে দিয়েছেন ইমাম। ফখর ফিরলে বাবর আজমের সঙ্গে ৯৪ রানের জুটি গড়েন। নিজে ১৬৪ রানে স্কোর থাকার সময় ক্যাচ দেন উইকেটের পেছনে।
না হলে প্রোটিয়াদের বিপক্ষে পাকিস্তান প্রথম ৯ উইকেটে জেতার স্বাদ পেত। ঘরের মাঠে ৯ উইকেটে প্রোটিয়ারা হেরেইছে মাত্র চার দলের কাছে।
গোলাপি জার্সিকে দক্ষিণ আফ্রিকার জন্য সৌভাগ্যের প্রতীক ধরা হয়। স্তন ক্যানসারের ব্যাপারে সচেতনতা ও তহবিল তৈরির লক্ষ্যে এই বিশেষ রঙের জার্সি পরে এর আগে খেলা আট ওয়ানডেতে কখনো হারেনি তারা।
টসে জিতে আগে বোলিং করার সিদ্ধান্ত নেন নিষিদ্ধ থাকা সরফরাজ আহমেদের পরিবর্তে পাকিস্তানের অধিনায়কত্ব পাওয়া শোয়েব মালিক। ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারেই দলীয় তিন রানে ফিরে যান ওপেনার কুইন্টন ডি কক। এই ধাক্কা সামলে ওঠার আগেই দলীয় ১৮ রানে ফেরার রাস্তা ধরেন ওয়ানডে ডাউনে নামা রেজা হেনড্রিকস। ডি কক নিজের শততম ম্যাচে শূন্য রানে ফিরেছেন। হেন্ডরিকস করেছেন ২ রান।
তৃতীয় উইকেট জুটিতেই অধিনায়ক ফাফ ডু প্লেসিসকে সঙ্গে নিয়ে ঘুরে দাঁড়ান অভিজ্ঞ ওপেনার হাশিম আমলা। দলীয় ১১৯ রানের মাথায় ডু প্লেসিসের বিদায়ে ভাঙে ১০১ রানের জুটি। স্কোর বোর্ডে তখন ২৬ ওভারে ৩ উইকেট হারিয়ে ১১৯।
তখনো ভালো স্কোর গড়ার ইঙ্গিত দিচ্ছিল আফ্রিকা। কিন্তু বাকি ৭ উইকেটে তারা স্কোর বোর্ডে যোগ করতে পারে মাত্র ৪৫ রান। ডেভিড মিলার থেকে শুরু করে শেষ ছয়জনের রান যথাক্রমে ৪, ১১, ০, ০, ২, ৫। অধিনায়ক ডু প্লেসিসের ব্যাট থেকে আসে ইনিংস সর্বোচ্চ ৫৯ রানের ইনিংস। এ ছাড়া ৫৭ রান করেন আমলা।
পাকিস্তানের পক্ষে বল হাতে শুরুর ধাক্কাটা দিয়েছেন শাহীন শাহ আফ্রিদি। নিয়েছেন ২ উইকেট। শাদাব খানেরও উইকেট ২টি। একটি করে উইকেট ইমাদ ওয়াসিম ও মোহাম্মদ আমিরের।
সিরিজ নির্ধারণী পঞ্চম ওয়ানডেটি ৩০ জানুয়ারি। সেই ম্যাচ তো বটেই, পরবর্তী টি-টোয়েন্টি সিরিজের প্রথম দুই ম্যাচেও খেলা হবে না সরফরাজের। চার ম্যাচের জন্য নিষিদ্ধ হয়েছেন তিনি।