বড় সম্মানটা তাঁরা আগেই পেয়ে গেছেন। আইসিসি হল অব ফেমে এরই মধ্যে জায়গা পেয়ে গেছেন কিংবদন্তি ছয় পাকিস্তানি ক্রিকেটার। তবে যে দেশের জন্য সারা জীবন খেলে গেছেন, যে দেশের মানুষের মুখে হাসি ফোটাতে পারফর্ম করার চেষ্টা করেছেন, সেই দেশ যখন সম্মানিত করে, সেটা তো একটা বিশেষ অনুভূতিই। পাকিস্তান ক্রিকেটের হল অব ফেমের যাত্রার শুরুতেই সেখানে জায়গা পেয়ে তাই দারুণ আনন্দিত জহির আব্বাস, ওয়াসিম আকরাম ও ওয়াকার ইউনিস। এ সম্মান ভবিষ্যতে তরুণ পাকিস্তানি ক্রিকেটারদের দেশের হয়ে আরও ভালো খেলতে অনুপ্রাণিত করবে বলেও মনে করেন তাঁরা।
আইসিসি হল অব ফেমের ২০০৯ সালেই জায়গা পান চারজন পাকিস্তানি ক্রিকেটার—ওয়াসিম আকরাম, ইমরান খান, জাভেদ মিয়াঁদাদ ও হানিফ মোহাম্মদ। পরে ২০১৩ সালে জায়গা পান ওয়াকার ইউনিস এবং ২০২০ সালে জহির আব্বাস।
২০০৯ সালের জানুয়ারিতে ফেডারেশন অব ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেটার্স অ্যাসোসিয়েশনের (ফিকা) সহযোগিতায় যাত্রা শুরু হয়েছিল আইসিসি হল অব ফেমের। প্রথম বছরেই ৫৫ জন কিংবদন্তি ক্রিকেটারকে জায়গা দেওয়া হয় সেই হল অব ফেমে, যাঁদের মধ্যে ছিলেন চারজন পাকিস্তানি ক্রিকেটার—ওয়াসিম আকরাম, ইমরান খান, জাভেদ মিয়াঁদাদ ও হানিফ মোহাম্মদ। পরে ২০১৩ সালে আইসিসির হল অব ফেমে জায়গা পান ওয়াকার ইউনিস এবং ২০২০ সালে জহির আব্বাস। সব মিলিয়ে আইসিসির হল অব ফেমে এখন পর্যন্ত জায়গা পাওয়া ৯০ জন ক্রিকেটারের মধ্যে পাকিস্তানের ৬ জন।
এই ছয়জনকে রেখেই এবার যাত্রা শুরু হচ্ছে পাকিস্তান ক্রিকেটের হল অব ফেমের। তবে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড (পিসিবি) সিদ্ধান্ত নিয়েছে ২০২১ সাল থেকে প্রতিবছর তিনজন করে ক্রিকেটার জায়গা পাবেন এই হল অব ফেমে। একটি স্বাধীন ও নিরপেক্ষ বিচারক প্যানেল বেছে নেবে এই তিনজন ক্রিকেটারকে। প্রতিবছর ১৬ অক্টোবর এক বিশেষ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে ঘোষণা করা হবে সম্মান পাওয়া এই তিন ক্রিকেটারের নাম। ১৯৫২ সালের ১৬ অক্টোবর নিজেদের ইতিহাসে প্রথম টেস্ট খেলতে নেমেছিল পাকিস্তান, সে জন্যই দিনটিকে বেছে নেওয়া। তবে একটা শর্ত থাকছে, আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসরের পর পাঁচ বছর পেরোলেই শুধু পাকিস্তান ক্রিকেটের হল অব ফেমে জায়গা পাওয়ার জন্য বিবেচিত হবেন।
পিসিবির এই উদ্যোগ এই প্রজন্ম ও আগামী প্রজন্মের ক্রিকেটারদের দেশের হয়ে আরও ভালো খেলতে উৎসাহিত করবে বলে মনে করেন কিংবদন্তি ব্যাটসম্যান জহির আব্বাস। পাকিস্তানের হয়ে ৭৮ টেস্টে ৪৪.৭৯ গড়ে ৫,০৬২ রান ও ৬২ ওয়ানডেতে ৪৭.৬২ গড়ে ২,৫২৭ রান করা আব্বাস বলেছেন, ‘আমি বিনীত ও পাকিস্তানের হয়ে সম্মানিত হয়ে আপ্লুতও। প্রত্যেক খেলোয়াড় স্বপ্ন দেখেন তাঁর পরিশ্রমের স্বীকৃতি পাওয়ার। আমি নিশ্চিত তরুণ খেলোয়াড়েরা যখন এটা দেখবেন, আরও ভালো খেলার প্রেরণা পাবেন।’
আমি নিশ্চিত যাঁরা দেশের জন্য নিজের সবকিছু দিয়ে পারফর্ম করার চেষ্টা করেছেন, তাঁদের মতো আরও অনেক ক্রিকেটার এখানে জায়গা পাবেন।
১০৪ টেস্টে ৪১৪ উইকেট ও ৩৫৬ ওয়ানডেতে বিশ্ব রেকর্ড গড়ে ৫০২ উইকেট পাওয়া সর্বকালের অন্যতম সেরা ফাস্ট বোলার ওয়াসিম আকরামের কথা, ‘আমি পিসিবিকে অভিনন্দন জানাই এমন একটা উদ্যোগের জন্য। আমি নিশ্চিত যাঁরা দেশের জন্য নিজের সবকিছু দিয়ে পারফর্ম করার চেষ্টা করেছেন, তাঁদের মতো আরও অনেক ক্রিকেটার এখানে জায়গা পাবেন।’
ওয়াসিম আকরামের বোলিং জুটি ও পাকিস্তানের ইতিহাসে আরেক সেরা ফাস্ট বোলার ওয়াকারের (৮৭ টেস্টে ৩৭৩ উইকেট, ২৬১ ওয়ানডেতে ৪১৬ উইকেট) কথা, ‘আমার মতো একজন, যে গত ৩০ বছর ধরে ক্রিকেটের সঙ্গে যুক্ত, তার জন্য এই স্বীকৃতি বড় সম্মানের ব্যাপার। এই যে পাকিস্তান ক্রিকেট থেকে খেলোয়াড়দের স্বীকৃতি দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হলো, এটা এগিয়ে যাওয়ার পথে একটা বড় পদক্ষেপ।’