বল বিকৃতির ঘটনায় নিষিদ্ধ হয়েছেন অস্ট্রেলীয় ক্রিকেট দলের অধিনায়ক স্টিভ স্মিথসহ অন্য দুই ক্রিকেটার ডেভিড ওয়ার্নার ও ক্যামেরন ব্যানক্রফট। কেপটাউনে গতকাল মঙ্গলবার এক সংবাদ সম্মেলনে এই তিন ক্রিকেটারকে নিষিদ্ধ করার কথা জানিয়েছেন ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়ার প্রধান নির্বাহী জেমস সাদারল্যান্ড। অবশ্য তাঁদের কত দিনের জন্য নিষিদ্ধ করা হচ্ছে, এটি জানানো হবে আজ বুধবার।
গত শনিবার দক্ষিণ আফ্রিকা ও অস্ট্রেলিয়ার মধ্যকার কেপটাউন টেস্টে বল বিকৃতির ঘটনা ঘটে। অস্ট্রেলীয় ক্রিকেটার ক্যামেরন ব্যানক্রফটকে দেখা যায় হলুদ টেপ–জাতীয় কিছু হাতে নিয়ে বল ঘষতে। পুরো ব্যাপারটি ধরা পড়ে টেলিভিশন ক্যামেরায়। পরে অস্ট্রেলীয় অধিনায়ক স্টিভ স্মিথ এক চাঞ্চল্যকর সংবাদ সম্মেলনে স্বীকার করেন বল বিকৃতির পরিকল্পনার কথা। বিষয়টি আলোড়ন তুলেছে গোটা ক্রিকেট দুনিয়ায়। বল বিকৃতির স্বীকারোক্তির পরের দিনই অস্ট্রেলীয় সরকার স্মিথকে অধিনায়কত্বের পদ থেকে সরিয়ে দেওয়ার ব্যাপারে ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়াকে চাপ দেয়। ফলে অধিনায়কত্বের পদ থেকে সরে দাঁড়াতে হয় তাঁকে। সহ–অধিনায়ক ডেভিড ওয়ার্নারও সরে দাঁড়ান তাঁর পদ থেকে। ক্রিকেটের সর্বোচ্চ সংস্থা আইসিসি অবশ্য বল বিকৃতির এই ঘটনায় একটি টেস্ট থেকে নিষিদ্ধ করে স্মিথকে। জরিমানা করা হয় তাঁর ম্যাচ ফি। ব্যানক্রফটকে নিষেধাজ্ঞা না দিলেও করা হয় ম্যাচ ফির ৭৫ শতাংশ জরিমানা।
ঘটনাটি নিয়ে গভীর হতাশা প্রকাশ করে ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া। তারা এ ব্যাপারে তদন্তও শুরু করে। ঘটনার বিষয়ে খতিয়ে দেখতে দক্ষিণ আফ্রিকা রওনা হয় তাদের একটি প্রতিনিধিদল। সেই প্রতিনিধিদলই তদন্ত শেষে নিষিদ্ধ করেছে তিন ক্রিকেটারকে।
ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়ার প্রধান নির্বাহী সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছেন, এই তিন ক্রিকেটার ছাড়া আর কেউই বল বিকৃতির পরিকল্পনার কথা যে জানতেন না, সে বিষয়ে নিশ্চিত হয়েছে তদন্তকারী দল।
এদিকে, ব্রিটিশ দৈনিক দ্য টেলিগ্রাফ কোচ ড্যারেন লেম্যানের ভবিষ্যৎ নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছিল। ঘটনার পর থেকেই লেম্যান চুপচাপ রয়েছেন। টেলিগ্রাফ জানিয়েছিল, লেম্যান পদত্যাগ করতে যাচ্ছেন। তবে সাদারল্যান্ডের আজকের সংবাদ সম্মেলনের পর লেম্যানের ভবিষ্যৎ নিয়ে সংশয় নেই। পদত্যাগ যেহেতু তিনি করেননি, সে কারণেই কোচ হিসেবে কাজ করে যাবেন তিনি।
স্মিথের বদলে দক্ষিণ আফ্রিকা সফরের শেষ টেস্টে অস্ট্রেলিয়াকে নেতৃত্বে দেবেন টিম পেইন। বাকি দুজনের জায়গায় দেশ থেকে ডেকে পাঠানো হচ্ছে তিনজনকে। এঁরা হচ্ছেন ম্যাট রেনশ, জো বার্নস ও অলরাউন্ডার গ্লেন ম্যাক্সওয়েলকে।
সাদারল্যান্ড জানিয়েছেন, যখনই ঘোষণা আসুক, তিন ক্রিকেটার যথেষ্ট কঠোর শাস্তিই পেতে যাচ্ছেন। এই ঘটনায় ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া কতটা মর্মাহত, সেটাও
জানিয়েছেন তিনি। একই সঙ্গে বলেছেন, ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া এখন থেকে ক্রিকেটারদের আচরণবিধিটি নতুন করে পর্যালোচনা করবে। এই মুহূর্তে ক্রিকেট-পাগল অস্ট্রেলীয়রা যেন জাতীয় দলের ব্যাপারে বিশ্বাস ফিরে পান, ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া সে উদ্দেশ্য নিয়েই কাজ করে যাবে।