>ব্যাটে ও বলে শুরুটা ভালো করার তাগিদের কথা জানিয়েছিলেন তামিম ইকবাল। আজ শেষটা বাজে হলেও বোলাররা কিন্তু শুরুতে ভালোই করেছিলেন। ব্যাটসম্যানরা আজও হেঁটেছেন পুরোনো পথে
ভালো শুরুর গুরুত্ব মুশফিকুর রহিম একবার জানিয়েছিলেন দ্বিতীয় ম্যাচের পর। ব্যাট ও বলে প্রথম দশ ওভারের ব্যর্থতাই নাকি বাংলাদেশকে সিরিজ থেকে ছিটকে দিয়েছে এক ম্যাচ হাতে থাকা অবস্থায়। সিরিজের শেষ ম্যাচে তাই এ দুই জায়গায় ভালো করার ব্যাপারে গুরুত্ব দিয়েছিলেন মুশফিক।
বিষয়টা যে গুরুত্বপূর্ণ সেটা বুঝতে কারও বাকি নেই। তবু কাল আরও একবার সেটা নিয়ে আলোচনা করেছেন তামিম ইকবাল। ব্যাটসম্যান হিসেবে নিজেদের দায়িত্বের কথা স্বীকার করে নিয়েছেন। বোলারদের কাছ থেকেও ভালো শুরুর আশাবাদ জানিয়ে রেখেছেন। কিন্তু তামিম নিজেই যে ব্যর্থ হলেন!
আগের ছয় ইনিংসে বোল্ড হয়ে আলোচনার জন্ম দেওয়া তামিম আজ আর সেভাবে আউট হননি। রাজিথার লেংথ বলে জোর করে শট খেলতে গেলেন কিন্তু পা না নড়ায় বলটা শুধু ব্যাটের ছোঁয়া নিয়েই সন্তুষ্ট হলো। উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে তামিম (২) যখন ফিরলেন, দলের রান তখন ৪। ইনিংসের দৈর্ঘ্য? ৯ বল। ভালো শুরু বলা যাবে না কোনোভাবে।
দুদিন আগে অবশ্য মুশফিক ভালো শুরুর একটি সীমারেখা বেঁধে দিয়েছিলেন। প্রথম দশ ওভারে সর্বোচ্চ ১ উইকেট হারিয়ে ৩৫ থেকে ৪০ রান তুলতে পারাও ভালো শুরু হিসেবে মানতে রাজি ছিলেন মুশফিক। কিন্তু সেই মুশফিককে নামতে হলো নবম ওভারেই। অষ্টম ওভারের চতুর্থ ও পঞ্চম বলে চার মেরেও ষষ্ঠ বলেই বল আকাশে তুলেই যে বিদায় নিয়েছেন বহুদিন পর দলে ফেরা এনামুল হক।
৮ ওভার ও ২৯ রান-কোনোটিই মুশফিকের ভালো শুরুর সংজ্ঞায় পড়েনি। সে অবস্থা কাটিয়ে নেওয়ার দায়িত্ব ছিল ফর্মে থাকা মুশফিকের। কিন্তু দলকে ৪৬ রানে মুশফিকও ফিরলেন স্টাম্পের অনেক বাইরের এক বলকে তাড়া করতে গিয়ে।
দাসুন শানাকার উইকেট উপহার পাওয়ার এটাই শেষ নয়। সাকিবের শূন্যস্থান পূরণ করার দায়িত্ব ছিল যার তিনে নেমে, সেই মিঠুন আজ নেমেছেন চারে। এনামুলের সুবাদে অবস্থানের পরিবর্তন এলেও ব্যাটিং ফর্মে কোনো পরিবর্তন আসেনি। প্রথম দুই ম্যাচে ২২ রান করা মিঠুন আজ অফ স্টাম্পের বাইরের বলে শানাকাকে হুক করতে গেলেন। লাহিরু কুমারার বল ধরতে গিয়ে দুই-তিনবার ফেলে দেওয়ার সম্ভাবনা নির্ঘাত নিষ্ঠুর রসিকতা মনে হচ্ছিল ৪ রানে থাকা মিঠুনের।
অধিনায়ক তামিমের কথা শুনেই হোক বা অন্য কারণে আজ শুরুটা ভালোই করেছিলেন বোলাররা। শেষ ১০ ওভারে সর্বনাশ হলেও প্রথম ১০ ওভারে মাত্র ৩৬ রান দিয়েছিলেন তারা। কিন্তু প্রথম ওয়ানডেতে ৩৯, দ্বিতীয় ওয়ানডেতে ৬৮-র পর আজও ৬০ রানে চার ব্যাটসম্যান ফিরে গিয়ে জানিয়ে দিলেন, অন্তত এ সিরিজে ভালো শুরু দেখানোর ইচ্ছা নেই তাঁদের।
আগের দুই ম্যাচে ৯ রান করা মাহমুদউল্লাহ আজ সিরিজে নিজের সংগ্রহ দ্বিগুন করে নিয়েছেন। তারপর ওই শানাকার বলেই উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে যখন ফিরছেন, দলের সংগ্রহ তখন ৮৩। এ সিরিজে এত কম রানে ৫ উইকেট হারায়নি বাংলাদেশ। প্রতিটি আউটেই ব্যাটসম্যানের দায়, বোলারকে কষ্ট করে আদায় করতে হয়নি একটিও। কে জানে শেষ ম্যাচ বলেই হয়তো নিজেদের সবচেয়ে কদর্য রূপটা দেখিয়ে দিচ্ছেন সবাই!