বিশ্বকাপে প্রথম জয় পেল মেয়েদের দল
বিশ্বকাপে প্রথম জয় পেল মেয়েদের দল

মেয়েদের ওয়ানডে বিশ্বকাপ

নিগার–ফাহিমাদের জয়ে আকরামদের রোমাঞ্চ

‘ওহ্‌! বিরাট অর্জন।’

প্রসঙ্গটা তুলতেই ফোনের ওপাশ থেকে মিনহাজুল আবেদীনের উচ্ছ্বসিত কণ্ঠ শোনা যায়। বাংলাদেশ নারী দল প্রথমবার ওয়ানডে বিশ্বকাপে খেলতে গিয়েই হারিয়ে দিয়েছে পাকিস্তানকে। মেয়েদের এ অর্জন মিনহাজুলকে মনে করিয়ে দিয়েছে ১৯৯৯ সালে ছেলেদের প্রথম বিশ্বকাপে পাকিস্তানকে হারানোর স্মৃতিও।

নিউজিল্যান্ডের হ্যামিল্টনে পাকিস্তানের মেয়েদের হারিয়ে বাংলাদেশের মেয়েরা পেয়েছেন ওয়ানডে বিশ্বকাপে নিজেদের প্রথম জয়। এ জয়ে উচ্ছ্বসিত ছেলেদের দলের সাবেক অধিনায়ক ও বর্তমান প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল। ২৩ বছর আগে নটিংহ্যামে পাকিস্তানকে হারানোর সেই সুখস্মৃতি রোমন্থন করতে করতেই মিনহাজুল বলছিলেন, ‘বিশ্বকাপে পাকিস্তানকে হারানো সহজ কথা নয়। এটা বড় অর্জন। আমরাও আমাদের প্রথম বিশ্বকাপে পাকিস্তানকে হারিয়েছিলাম। বাংলাদেশ ক্রিকেটের তখনকার প্রেক্ষাপটেও সেটা অনন্য এক অর্জন।’

১৯৯৯ বিশ্বকাপে মিনহাজুল আবেদীন

মিনহাজুলের আরেক সতীর্থ ও বিসিবির পরিচালক আকরাম খানও নিগারদের এ জয়ে হয়ে ওঠেন স্মৃতিকাতর, ‘ওরা যখন জয়ের খুব কাছে, আমি তখন ১৯৯৯–এর কথা ভাবছিলাম। আমাদের ক্রিকেট আজ যে পর্যায়ে, সেটা তো এসব অর্জনের কারণেই এসেছে। শুরুটা কিন্তু ১৯৯৯ থেকেই। বড় দলকে হারানোর বিশ্বাসটা সেখান থেকেই এসেছে।’

ছেলেদের তুলনায় মেয়েদের ক্রিকেট দ্রুত উন্নতি করছে বলেও ধারণা আকরামের, ‘মেয়েরা এশিয়া কাপ জিতেছে, পাকিস্তানকে আগেও হারিয়েছে। বিশ্বকাপেও ভালো করছে। কেন জানি মনে হচ্ছে, যদি সুযোগ–সুবিধা দেওয়া যায়, তাহলে মেয়ের উন্নতিটা ছেলেদের তুলনায় দ্রুত হবে।’

’৯৯ বিশ্বকাপে পাকিস্তানের বিপক্ষে জয়ের ম্যাচে জ্বলে উঠেছিল আকরাম খানের ব্যাট

১৯৯৯ বিশ্বকাপ দলের আরেক সদস্য মেহরাব হোসেন এ জয়কে দেখছেন নারী ক্রিকেটের উত্থান হিসেবে। ওই বিশ্বকাপের পর ছেলেদের ক্রিকেটে যে বদলের হাওয়া এসেছিল, এবার মেয়েদের ক্রিকেটেও সেই হাওয়া লাগবে বলে বিশ্বাস সাবেক এই ব্যাটসম্যানের, ‘এটা মেয়েদের ক্রিকেটে উত্থানের মতো। ১৯৯৯–এর পর বাংলাদেশ ক্রিকেটের ছবিটা পাল্টে গেছে। এ জয়টাও বাংলাদেশের মেয়েদের ক্রিকেট বদলে দেবে। অনেক মেয়ে দেখবেন খেলতে আগ্রহী হবে। তারা পরিবারের সমর্থনও পাবে।’

’৯৯ বিশ্বকাপে বাংলাদেশের দলের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সদস্য ছিলেন মেহরাব হোসেন

বিশ্বকাপ বলেই ভোরবেলা ঘুম থেকে উঠে বাংলাদেশের মেয়েদের খেলা দেখতে বসেছিলেন মোহাম্মদ রফিক। নিগার সুলতানার দল প্রথম দুই ম্যাচে হারলেও পাকিস্তানের বিপক্ষে ভালো করবে, এ আশা ছিল ১৯৯৯ বিশ্বকাপ খেলা এই অলরাউন্ডারের। ভালো সুযোগ–সুবিধা পেলে মেয়েরা আরও শক্তিশালী দল হয়ে উঠবে বলে মনে করেন রফিক, ‘খেলা দেখে মনে হলো, খুব দ্রুত উন্নতি করেছে মেয়েরা। এখন ওদের যদি সরকার, বিসিবি আরও ভালো সুযোগ–সুবিধা দেয়, দেখবেন ওরা অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ড, ভারতের মতো শক্তিশালী হয়ে উঠবে।’