অল্পের জন্য প্রাণে বেঁচে গেছেন বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা। ক্রাইস্টচার্চের যে মসজিদে গতকাল জুমার নামাজ পড়তে গিয়েছিলেন তাঁরা, সে মসজিদেই সন্ত্রাসী হামলা হয়েছে। নিহত মানুষের সংখ্যা ৪৯ ছুঁয়েছে। হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে লড়ছেন আরও ১১ জন। আহত মানুষের সংখ্যা অবশ্য আরও অনেক বেশি। ভয়ংকর এই সন্ত্রাসী হামলার অবশেষ এখনো রয়ে গেছে আল নুর মসজিদে, ক্রাইস্টচার্চের রাস্তায় ও প্রত্যক্ষদর্শীদের স্মৃতিতে।
মাত্র পাঁচ-দশ মিনিটের জন্য হতাহতের তালিকায় নাম ওঠেনি বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের। সংবাদ সম্মেলনে খানিকটা দেরি হওয়ায় জুমার নামাজের জন্য একটু আগে যাওয়ার ইচ্ছা থাকলেও সেটা সম্ভব হয়নি। বাংলাদেশ দলের বাস ঘটনাস্থলে পৌঁছানোর একটু আগেই নরকে রূপ নিয়েছিল ক্রাইস্টচার্চ। সে হামলার সরাসরি শিকার না হলেও ভয়ংকর ‘ট্রমা’র মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছে বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের।
ভীত-সন্ত্রস্ত দলকে দ্রুত হোটেলে ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থা করা হলেও ঘটনার ধাক্কা কাটিয়ে উঠতে বহুদিন সময় লাগবে। এরই মধ্যে দল দেশের উদ্দেশে উড়াল দিয়েছে। এমন ভয়ংকর পরিস্থিতিতে পড়েও বাংলাদেশ দল অবশ্য নিউজিল্যান্ড নিয়ে নিজেদের ভাবনায় কোনো পরিবর্তন আনেনি। তাদের চোখে নিউজিল্যান্ড এখনো বিশ্বের অন্যতম সেরা দেশ।
গতকাল রাতে ক্রাইস্টচার্চ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে বাংলাদেশের উদ্দেশে উড়াল দিয়েছে বাংলাদেশ। ভারী অস্ত্রধারী পুলিশ বেষ্টিত হয়ে বিমানবন্দরে এলেও খেলোয়াড়দের চোখে মুখে নাকি ভয় দেখা যাচ্ছিল। চীনের বার্তা সংস্থা সিনহুয়া এ সময় মুশফিকুর রহিমের সঙ্গে কথা বলতে পেরেছে। তখনই নিউজিল্যান্ড প্রসঙ্গটা উঠে আসে। হতাহতের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়ে নিজেদের ভাগ্যবান দাবি করেছেন মুশফিক। তাঁর চোখে, ‘নিউজিল্যান্ড এখনো বিশ্বের সেরা দেশগুলোর একটি। আমরা এখনো নিউজিল্যান্ডকে ভালোবাসি।’
এমন একটি হামলা যে হতে পারে, সেটা এখনো অবিশ্বাস্য ঠেকছে মুশফিকের। এই হামলার ঘটনা দেখে আসার পর তাঁদের পেশাদারি কোনো সাহায্য দেওয়া হয়েছে কি না, সে প্রসঙ্গে সরাসরি কোনো জবাব অবশ্য দেননি মুশফিক। শুধু বলেছেন, ‘আমরা সবাই খুশি যে বেঁচে আছি।’ তবে দলের অনেককেই ভীত দেখা গেছে, বলে দাবি করেছে সিনহুয়া। যাত্রা শুরুর আগে মুশফিক অবশ্য টুইটারে নিজেই ফেরার কথা জানিয়েছেন, ‘আলহামদুলিল্লাহ, অবশেষে ঘরে ফিরছি।’ সিঙ্গাপুর হয়ে ক্রিকেট দল আজ রাত ১০টা ৪০ মিনিটে বাংলাদেশে এসে পৌঁছাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।