খুলনা টাইগার্সের ইনিংসের প্রথমার্ধ তখন শেষ। জয়ও হাতের মুঠোয়। হাতে ৮ উইকেট রেখে ৬০ বলে দরকার ২২ রান। রাইলি রুশো ২২ বলে ৪৮ রানে ব্যাট করছিলেন। ১১তম ওভারে আরাফাত সানির করা প্রথম বলটি রিভার্স সুইপ করে চার মারলেন রুশো। পেয়ে গেলেন এবার বিপিএলে নিজের দ্বিতীয় ফিফটি। দক্ষিণ আফ্রিকান এ ব্যাটসম্যানের উদ্যাপন ছিল দেখার মতো। হেলমেট খুলে ব্যাট মাটিতে রেখে ডান হাতটা মুখের কাছে নিয়ে বাঁশি বাজানোর ভঙ্গি করলেন। বাঁ হাতে তখন নাচের মুদ্রা।
রংপুর রাইডার্সকে ৪৫ বল হাতে রেখে হারিয়েছে খুলনা। ২ ছক্কা ও ৯ চারে ৩১ বলে অপরাজিত ৬৬ রানের ইনিংস খেলেছেন রুশো। ম্যাচ শেষ সংবাদ সম্মেলনে উদ্যাপনটা নিয়ে প্রশ্ন করা হয়েছিল রুশোকে। দুর্দান্ত ব্যাটিং করে খুশিমনে থাকা রুশো বুঝিয়ে বললেন উদ্যাপন এবং তার নেপথ্য কারণ, ‘এটা সেসব দিনের মতো যেদিন সবকিছুই মাঝ ব্যাটে লাগে। এর আগে সবশেষ এমন লেগেছিল যখন চার দিনের ম্যাচে তিন শ রান করেছিলাম। আজ সবকিছুই মাঝ ব্যাটে লেগেছে। উদ্যাপন? ফিফা প্লে স্টেশন গেমসের একটি উদ্যাপন এটি। সতীর্থদের বলেছিলাম ফিফটি মারলে আজ এ উদ্যাপনটি করব।’
>রংপুর রেঞ্জার্সের বিপক্ষে ফিফটি তুলে নেওয়ার পর মজার এক উদ্যাপন করেছেন খুলনা টাইগার্সের রাইলি রুশো।
ফিফা-১৮, ১৯ ও ২০ সংস্করণের প্রচারণা টটেনহামের এরিকসেন, বায়ার্ন মিউনিখ জার্সিতে রিবেরি, অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদের সেন্ট্রাল মিডফিল্ডার সল নিগেজ, আর ডর্টমুন্ডের আলকাসেরের এমন উদ্যাপন ব্যবহৃত হয়েছে। শুধু এরা নন, আরও কিছু ফুটবলারের এমন উদ্যাপন আছে। এই উদ্যাপনটির নাম ‘পাইপ।’ তা আজ যেমন ব্যাটিং করেছেন তাতে সুর উঠেছিলই বটে। আর সে সুরে নাচিয়ে ছেড়েছেন প্রতিপক্ষের বোলারদের। প্রতিপক্ষ দলে থাকা তিন আন্তর্জাতিক ক্রিকেটারকেও তাই পাড়ার মানের মনে হচ্ছিল।
রুশো আজ যেসব শট খেলেছেন সবই খুব ভালো টাইমিং হয়েছে। তাসকিন আহমেদকে সীমানাছাড়া করেছেন পুল করে। ফুল টস ডেলিভারি ছক্কা মেরেছেন লং অফ দিয়ে। ছিল ব্যাক ফুট ড্রাইভও। সত্যিই আজ দিনটা রুশোরই ছিল। মোস্তাফিজের দিনটা ভালো যায়নি। ১ উইকেট পেলেও ২ ওভারে দিয়েছেন ১৮ রান। আরাফাত সানি ২.৩ ওভারে দিয়েছেন ২৮ আর ৩৯ রান দিয়েছেন ৩ ওভারে। খোশমেজাজে থাকা ৩০ বছর বয়সী এ বাঁহাতি ব্যাটসম্যান রংপুরের তিন বোলার মোস্তাফিজ, তাসকিন ও সানির বোলিং নিয়ে বললেন, ‘আমি নিশ্চিত ওরা ঘুরে দাঁড়াবে। ওরা পেশাদার। আজকের দিনটা ওদের ছিল না। যেমনটা বলছিলাম, আজকের দিনটা ছিল আমার। বলটা ভালোমতো দেখেছি এবং ব্যাটের মাঝে লাগাতে পেরেছি। ওদের দুর্ভাগ্য যে, অন্য প্রান্তে থেকে হজম করতে হয়েছে।’