নতুন জাতের গরু আনছেন ধোনি

জাতীয় দল থেকে অবসর নেওয়ায় হাতে অনেক সময় পাচ্ছেন ধোনি।
ছবি: টুইটার

কৃষিক্ষেত্রে নতুন জাত উদ্ভাবন সহজ কিছু নয়। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরে বিজ্ঞানীরা বছরের পর বছর গবেষণা করে তবেই কোনো নতুন জাত আবিষ্কারের খবর জানান। সেটা সাধারণের ব্যবহারযোগ্য কি না, সেটা জানতে সময় ব্যয় করেন আরও। তারপর নতুন কোনো জাতের আবির্ভাব টের পায় সবাই।

অন্তত এমনটাই জেনে আসছেন সবাই। তাই ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের দাবিটা কতটুকু সত্য, তা বলা কঠিন। এখন পর্যন্ত যা জানা গেছে, তাতে ভারতের সংবাদমাধ্যম দাবি করেছে, জাতীয় দল থেকে অবসর নেওয়া মহেন্দ্র সিং ধোনি নতুন এক জাতের গরু উদ্ভাবনে ব্যস্ত আছেন!

রাঁচিতে এক বিশাল খামার বানিয়েছেন ধোনি। এখন পর্যন্ত নতুন জাতের গরুটি কীভাবে উৎপাদন করা হচ্ছে, সেটার উদ্দেশ্য কী, অর্থাৎ মাংসের জন্য নাকি দুধের জন্য সেটি বেশি লাভজনক, তার কিছুই জানা যায়নি। তবে এটুকু জানা গেছে, ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেটের ব্যস্ততা বাদে বাকি সময়টা এখন নিজের খামারেই ব্যয় করছেন। আগামী এক বছর নতুন জাতের গরু লালন–পালন করবেন নিজের খামারে। এরপর সাধারণের মধ্যে এ জাতের গরু বিতরণ করে দেবেন।

এখন শুধু আইপিএলেই দেখা যাবে ধোনিকে।

আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে বিদায় নেওয়ার পর থেকেই সম্পূর্ণ জৈব খামার (যে খামারে কৃত্রিম কোনো কিছু ব্যবহার করা হয় না) নিয়ে ব্যস্ত আছেন ধোনি। অবশ্য খামার নিয়ে ধোনির আগ্রহ নতুন কিছু নয়। আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসর নেওয়ার আগেই খবর এসেছিল, রাঁচিতে তাঁর খামারবাড়ির ৪৩ একর জমি খামারের কাজে ব্যবহার করা শুরু করেছেন। নিজের খামারে শতাধিক গরু আছে ধোনির। দৈনিক ৪০০ লিটারের মতো দুধ পাচ্ছেন খামার থেকে। নিজের খামারের গরুর সংখ্যা নাকি তিন হাজারের মতো করতে চান। তবে ৩৯ বছর বয়সী এই ক্রিকেটার এখন পরিচিত জাত ছেড়ে নতুন এক জাত নিয়ে মেতেছেন।

নতুন এই জাত সম্পর্কে কোনো ধারণা মেলেনি। শুধু এটুকুই জানা গেছে, ডেনমার্কের এক জাত থেকে ধারণা নিয়ে নতুন এক জাত সবার সামনে আনতে চাইছেন ধোনি। বিশ্বকাপজয়ী অধিনায়ক অবশ্য গরুর আগেই অন্য এক প্রাণী নিয়ে নিজের খামারজীবন শুরু করেছেন। বিখ্যাত কাদাকনাথ মুরগি চাষ করছেন খামারে। আগাগোড়া কালো বর্ণের জন্য বিখ্যাত এই জাত কিছুদিন ধরেই এ অঞ্চলে বেশ সাড়া ফেলে দিয়েছে। বার্তা সংস্থা আইএএনএসের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, কাদাকনাথের মূল উৎপত্তিস্থল মধ্য প্রদেশের ঝাবুয়া জেলার বিনোধ মেহতা নামক খামারির কাছ থেকে দুই হাজার বাচ্চার ফরমাশ দিয়েছেন ধোনি।

এবারই সবচেয়ে বেশি ব্যর্থতা দেখেছেন ধোনি।

কাদাকনাথ মুরগি ভারতের ‘জিআই’ ট্যাগপ্রাপ্ত পণ্যের একটি। কালো মাংস ও হাড়ের এ মুরগির স্বাদ এখন বেশ প্রশংসা কুড়াচ্ছে খাদ্যরসিকদের কাছ থেকে। ঝাবুয়ার কাদাকনাথ মুরগি গবেষণা কেন্দ্রের পরিচালক আই এস টোমার বলেছেন, বন্ধুদের মাধ্যমে প্রথমে তাঁর সঙ্গেই যোগাযোগ করেছিলেন ধোনি। কিন্তু বাচ্চা সরবরাহ করা তাঁর পক্ষে সম্ভব নয় বলে থান্ডলা গ্রামের খামারি বিনোদের কথা জানিয়েছেন। ১৫ ডিসেম্বরের মধ্যে ধোনির কাছে বাচ্চা সরবরাহ করার কথা বিনোদের। তবে বিনোদ নাকি শর্ত পূরণ করতে হিমশিম খাচ্ছেন।

ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের কাছে এই খামারি অবশ্য এ ব্যাপারে নিজের আনন্দের কথাই শুধু জানিয়েছেন, ‘তিন মাস আগে ধোনির খামারের ম্যানেজার কৃষক বিকাশ কেন্দ্র ও এমপি কাদাকনাথ মোবাইল অ্যাপের সুবাদে আমার সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন। এরপর আমার কাছে দুই হাজার বাচ্চা চাওয়া হয়েছে। ১৫ ডিসেম্বরের মধ্যে আমাকে সেটা দিতে বলা হয়েছে। ধোনির ফার্ম এরই মধ্যে দুই হাজার বাচ্চার টাকা দিয়ে দিয়েছে। দেশের সবচেয়ে বিখ্যাত এক ক্রিকেটারের খামারে কাদাকনাথ বাচ্চা সরবরাহ করছি।’