>বাংলাদেশের কোচ হবেন কে—এ জল্পনা-কল্পনা চলছে অনেক দিন ধরেই। কদিন পর পর শোনা যায় একেকজনের নাম। এখন যেমন শোনা যাচ্ছে সাবেক ইংলিশ উইকেটকিপার ব্যাটসম্যান স্টিভ রোডসের নাম। দু-এক দিনের মধ্যে তাঁর ঢাকায় আসার কথা সাক্ষাৎকার দিতে।
চন্ডিকা হাথুরুসিংহের বিদায়ের পর বাংলাদেশের প্রধান কোচ হওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন বেশ কয়েকজন। এঁদের মধ্যে দুজন সশরীরে সাক্ষাৎকারও দিয়ে গেছেন। কারও কারও সঙ্গে কথাবার্তা অনেক দূর এগিয়েও শেষ পর্যন্ত চূড়ান্ত হয়নি। শোনা যাচ্ছে, কোচ সমস্যা সমাধানে বিসিবি নাকি মোটামুটি শেষ ধাপেই পৌঁছে গেছে।
নতুন হেড কোচ হিসেবে খুব জোরের সঙ্গেই শোনা যাচ্ছে ৫৩ বছর বয়সী ইংলিশ কোচ স্টিভ রোডসের নাম। অবশ্য বিসিবি ও রোডস দুই পক্ষই বলছে আলোচনা প্রাথমিক পর্যায়েই আছে। বিসিবির প্রধান নির্বাহী নিজামউদ্দিন চৌধুরী তাঁকে সংক্ষিপ্ত তালিকায় রাখার কথাই বলেছেন, ‘স্টিভ রোডস সংক্ষিপ্ত তালিকায় আছেন। আশা করছি, আগামী দুদিনের মধ্যে বোর্ডের সঙ্গে তিনি দেখা করবেন। আপনারা অতীতে দেখেছেন রিচার্ড পাইবাস-ফিল সিমন্স এসেছিলেন। একই ধারাবাহিকতায় রোডসও নিয়োগপ্রক্রিয়ার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সামনে নিজের কর্মপরিকল্পনা উপস্থাপন করবেন।
ক্রিকইনফোকে রোডসও বলেছেন প্রায় একই কথা, ‘এটা নিশ্চিত করতে পারি, বাংলাদেশের সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। এটাও বলতে পারি, আমি আগ্রহী। কাজটা অনেক সম্মানজনক। তবে কোনো কিছুই চূড়ান্ত হয়নি। সবকিছু নিশ্চিত হয়ে গেছে এটা ভেবে নেওয়া উচিত হবে না।’
হাথুরু চলে যাওয়ার পর সাকিবদের হেড কোচের সন্ধানে বিসিবি অনেক বড় নামের পেছনেই ছুটেছে। টম মুডি, মাহেলা জয়াবর্ধনে, কুমার সাঙ্গাকারা, অ্যান্ডি ফ্লাওয়ার, জিওফ মার্শ—কে ছিলেন না এই তালিকায়! পল ফারব্রেসের সঙ্গে তো কথাবার্তা অনেক দূর এগিয়েও হলো না। আরেক বড় নাম গ্যারি কারস্টেনকে বিসিবি চেয়েছিল ‘ডিরেক্টর অব কোচিং’ হিসেবে। পরে প্রোটিয়া কোচের ভূমিকা বদলে হলো ‘হেড অব কোচ অ্যান্ড টিম ম্যানেজমেন্ট সিলেকশন’। আপাতত কোচের সন্ধানে বিসিবিকে সহায়তা করাই হবে তাঁর কাজ। সেই কাজের অংশ হিসেবে কদিন আগে ঢাকায় এসেছিলেন কারস্টেন। জানা গেছে, তিনি যে সংক্ষিপ্ত তালিকা করেছেন, সেটিতে রোডসের নাম ওপরেই আছে। তবে বিসিবির একটি সূত্র জানিয়েছে, রোডসের বিষয়টি এখনো ৫০-৫০। তাঁর উপস্থাপনা যদি মুগ্ধতা জাগানিয়া হয়, তবে চূড়ান্ত পর্যায়ে যাবে।
১১ টেস্ট ও ৯ ওয়ানডে খেলা রোডস কাউন্টি দল উস্টারশায়ারের হয়ে খেলেছেন ১৯৮৫ থেকে ২০০৪ পর্যন্ত। এই উইকেটকিপার ব্যাটসম্যান খেলা ছাড়ার পর কাউন্টি দলটির ডিরেক্টর অব ক্রিকেটও হয়েছিলেন। বাংলাদেশের খেলোয়াড়দের মধ্যে একমাত্র সাকিব আল হাসানের অভিজ্ঞতা আছে তাঁর সঙ্গে কাজ করার। ২০১০ সালে সাকিব যখন কাউন্টি দল উস্টারশায়ারের হয়ে খেলতে গিয়েছিলেন, তখন তাঁদের প্রধান ছিলেন রোডসই।
ফ্র্যাঞ্চাইজিভিত্তিক টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের দাপটে লম্বা সময়ের জন্য এখন ‘হাই প্রোফাইল’ কোচ পাওয়াই কঠিন হয়ে গেছে বিসিবির। বিসিবি এখন ‘হাইপ্রোফাইল’ কোচের পথে না হেঁটে মাঝারি খ্যাতির কোচের দিকে হাত বাড়িয়েছে। বিসিবি চাচ্ছে এমন কোচ, যাঁর ক্রিকেট মস্তিষ্ক ক্ষুরধার, দলের সঙ্গেও থাকবেন অনেক দিন। চন্ডিকা হাথুরুসিংহের মতোই নিজের প্রোফাইল সমৃদ্ধ করবেন বাংলাদেশে ভালো কাজ করে।
রোডস যে অন্য প্রার্থীর তুলনায় বেশ এগিয়ে আছেন, সেটি বোঝা গেল বিসিবির প্রধান নির্বাহীর কথায়, ‘এই মুহূর্তে যে কজন কোচকে পাওয়া গেছে, তাঁদের মধ্যে তিনি একজন। তাঁর অভিজ্ঞতাকে গুরুত্ব দিচ্ছি। আগামী বিশ্বকাপ ইংল্যান্ডে হবে। এটাও বিবেচ্য বিষয়। ইংল্যান্ডের কন্ডিশন বা ওই ধরনের কন্ডিশনের কাউকে যদি দলের সঙ্গে সম্পৃক্ত করা যায়, তাহলে বাড়তি সুবিধা পাওয়া যেতে পারে।’