>বিপিএলে আজ দিনের প্রথম ম্যাচে রংপুর রাইডার্সকে ৫ রানে হারিয়েছে রাজশাহী কিংস
ম্যাচের ভাগ্য নির্ধারণ করলেন কে? মোস্তাফিজুর রহমান না ফরহাদ রেজা?
জয়ের জন্য শেষ ওভারে রংপুরের দরকার ছিল ১০ রান। মোস্তাফিজের প্রথম বলে রুশো ১ রান নিয়ে প্রান্ত বদলালেন। ফরহাদ রেজা স্ট্রাইকে গিয়ে টানা চার বল ব্যাটে লাগাতে পারলেন না! তাই প্রশ্ন হলো, রাজশাহী কিংসের এই ৫ রানের দুর্দান্ত জয়ে কার অবদান বেশি? টানা চার ‘ডট’ দেওয়া মোস্তাফিজ না টানা চার বল ব্যাটে না লাগানো ফরহাদ!
এই প্রশ্ন ওঠার আগে রান তাড়া করতে নামা রংপুরের ইনিংসে চমকও ছিল। রাজশাহী কিংস-কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ানস ম্যাচ শেষে কথাটা বলেছিলেন ইমরুল কায়েস—‘বিপিএলে অনেক কিছুই দেখবেন। যেটা আগে কখনো হয়নি।’ ইমরুল যে মোটেও ভুল কিছু বলেননি তা বোঝা গেল আজও।
প্রতিপক্ষ দল বড় স্কোর গড়েছে। তাড়া করতে নেমে ওপেনিংয়ে হার্ড হিটার কাউকে পাঠানোর প্রথাটা ক্রিকেটে নতুন কিছু নয়। কিন্তু ২০ ওভারে ১৩৬ রানের লক্ষ্য কি খুব বড়? তবু রংপুর রাইডার্সের ইনিংসে ক্রিস গেইলের সঙ্গে ওপেন করতে দেখা গেল মাশরাফি বিন মুতর্জাকে! তাও একটা ভালো শুরু পেলেও ভিন্ন কথা ছিল। কামরুল ইসলাম রাব্বির করা প্রথম ওভারের শেষ ডেলিভারিটি একজন ভালো ব্যাটসম্যানেরও খেলতে বেগ পাওয়ার কথা, মাশরাফি সেখানে আর কতটুকু করতে পারেন! এক্সট্রা বাউন্সের কাছে হেরে ক্যাচ দিয়েছেন উইকেটের পেছনে। বিপিএলে প্রথমবারের মতো ওপেন করতে নেমেই মাশরাফির নির্ভেজাল ‘ডাক’ মারা তাঁর ভক্তদের নিশ্চয়ই ভালো লাগেনি।
রাজশাহীর এই সাদামাটা স্কোর তাড়া করতে গিয়ে রংপুরের হার দলটির ভক্তদেরও ভালো লাগার কথা নয়। শেষ ওভারে ১০ রানের সমীকরণ মেলাতে পারেনি দলটি। মোস্তাফিজের দুর্দান্ত বোলিংয়ে ৬ উইকেটে ১২৯ রানেই থেমেছে রংপুরের ইনিংস। শেষ ওভারে মাত্র ৩ রান দিয়েছেন মোস্তাফিজ।
এই শীতের বিকেলে ম্যাড়ম্যাড়ে এই ম্যাচে রাজশাহী অধিনায়ক মিরাজই যা একটু উত্তেজনা ছড়িয়েছেন। ১২তম ওভারের পঞ্চম বলে রাইলি রুশো-রবি বোপারা জুটির ২ রান নেওয়া ঠেকাতে ফিল্ডিংয়ের সময় বল ছুড়ে মারার ভান করেন মিরাজ। ব্যাপারটা আম্পায়ারের চোখ এড়ায়নি। ‘ফেক ফিল্ডিং’-এর আইনে রাজশাহী অধিনায়ককে অভিযুক্ত করে রংপুরের পক্ষে ৫ রান ‘পেনাল্টি’ দেন আম্পায়ার। মাঠে এ নিয়ে মিরাজ বেশ ভালোই গজর গজর করলেন। কিন্তু আইনটি মিরাজেরও জানার কথা!
গেইল আজ ভালো শুরু পেলেও বেশিক্ষণ থাকতে পারেননি। ২ ছক্কা ২ চারে আউট হয়েছেন ১৪ বলে ২৩ রান করে। মোহাম্মদ মিঠুন অন্য প্রান্তে ৩১ বলে ৩০ রান করলেও ফিরে গেছেন ১১তম ওভারে। শেষ ৫৪ বলে ৬৪ রান দরকার ছিল রংপুরের। হাতে ছিল ৭ উইকেট। কিন্তু পরের ৪ ওভারের মধ্যে দ্রুত ২ উইকেট পড়ায় কিছুটা চাপে পড়েছিল রংপুর। বেন হাওয়েল ও বোপারাকে তুলে নেন রাজশাহীর স্পিনার মোহাম্মদ হাফিজ। শেষ ৩০ বলে জয়ের জন্য ৪২ রানের দূরত্বে পিছিয়ে ছিল রংপুর।
রুশো ও নাহিদুল ইসলাম এ সময় প্রয়োজনীয় রান রেটের সঙ্গে পাল্লা দিয়েই রান তোলার চেষ্টা করেছেন। তবে ১৮তম ওভারে মোস্তাফিজুর রহমান মাত্র ৪ রান দেওয়ায় শেষ ১২ বলে ১৮ রানের সমীকরণে পড়ে যায় রংপুর। ইসুরু উদানার করা ১৯তম ওভারে নাহিদুল আউট হলেও ৮ রান তুলে নেয় রংপুর। জয়ের জন্য শেষ ওভারে তাই দরকার ছিল ১০ রান। টান টান উত্তেজনা ছুঁয়ে যায় দুই দলকেই। শেষ ওভারে বল করতে আসেন রাজশাহীর পেসার মোস্তাফিজ। ‘ডেথ ওভার’ বিশেষজ্ঞ এই পেসার শেষ ওভারে মাত্র ৩ রান দিয়ে দুর্দান্ত জয় উপহার দেন রাজশাহীকে। ৪ ওভারে মাত্র ১৭ রান দেওয়াটাও বলে দিচ্ছে ইনিংস জুড়েই দুর্দান্ত করেছেন মোস্তাফিজ।