কার্লোস ব্রাফেটের প্রথম আন্তর্জাতিক সফর ছিল বাংলাদেশে। আজ থেকে সাড়ে চার বছর আগে, ২০১১ সালের অক্টোবরে। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ‘মধুচন্দ্রিমা’ চলার সময়ই দেশ থেকে পাওয়া ভয়াবহ এক দুঃসংবাদ ব্রাফেটের জীবন করে দিয়েছিল এলোমেলো।
সেবার ঢাকায় পা দিয়েই মাকে ফোন করে ব্রাফেট শোনেন মায়ের অসুস্থতার কথা। ব্রাফেট ভাবতেও পারেননি, ক্যানসারের উপসর্গ হিসেবেই মা শারীরিক অসুস্থতা বোধ করছিলেন। মাকে বলেছিলেন ডাক্তার দেখাতে। কিন্তু ডাক্তার যে এমন দুঃসংবাদ হাজির করবে, সেটি ক্ষণিকের জন্যও কল্পনা করেননি ক্যারিবীয় এই অলরাউন্ডার।
চিরদিনের মা-ভক্ত সন্তান ব্রাফেট। বাংলাদেশ থেকে ফিরে মা-ই ছিলেন তাঁর জীবনের সব। সবকিছু ভুলে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন মা জয়েসলিনের চিকিৎসা করাতে। সেই সময়ের দুঃসহ অভিজ্ঞতা হয়তো কোনো দিনই ভুলতে পারবেন না ব্রাফেট। প্রতিদিন নিজের ঘরে বসে কাঁদতেন। ভাবতেও পারতেন না, মা না থাকলে তাঁর কী হবে। সেই কঠিন পরিস্থিতিতে মা-ই নাকি বলতেন, কষ্টটা ভুলে ক্রিকেটে বেশি করে মনোযোগ দিতে। ব্রাফেট মায়ের কথা শুনেছিলেন। কিন্তু একটা শর্তে। যত দিন জয়েসলিন ক্যানসারের কেমোথেরাপি নিয়েছেন, তত দিন ব্রাফেট নিজের মাথায় একটি চুলও থাকতে দেননি। কেমোর কারণে প্রাণপ্রিয় মা যেখানে চুল হারিয়ে চলেছেন, সেখানে ছেলে কীভাবে নিজের চুল রাখেন!
২০১২ সালে তাঁর মা সুস্থ হয়ে ওঠেন। মায়ের আশীর্বাদের পুরোটা নিয়েই সেই ব্রাফেট এখন ক্যারিবীয়দের নয়নের মণি। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ফাইনালের ওই অন্তিম ওভারটি দেখে তাঁর মা নিশ্চয়ই আনন্দে চোখের জল ফেলেছেন পাগল ছেলেটির ‘কাণ্ড’ দেখে! সূত্র: ক্রিকইনফো।