ফুটবল, ক্রিকেট, হকি যেটাই হোক না কেন; খেলার প্রধান অলংকার তো দর্শকই। কিন্তু করোনাভাইরাস মহামারির কারণে সেই অলংকারকে পাশে সরিয়ে রেখেই মাঠে ফেরাতে হচ্ছে খেলা। দর্শকবিহীন ফুটবল আবার ফুটবল নাকি—অনেকেই বলছেন এমনটা! ক্রিকেটের ক্ষেত্রেও একই কথা। ভারত অধিনায়ক বিরাট কোহলি তো বলেই ফেলেছেন, দর্শকবিহীন খেলা হলে ক্রিকেটের আসল রোমাঞ্চটাই আর খুঁজে পাওয়া যাবে না।
করোনার কারণে মার্চ মাস থেকেই বন্ধ সব ধরনের ক্রিকেট। আইপিএল মাঠে গড়াতে পারেনি এখনো, দোদুল্যমান অক্টোবর-নভেম্বরের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ভাগ্য। এর মধ্যেই ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়ার (সিএ) চাওয়া, বছরের শেষের দিকে দর্শকবিহীন স্টেডিয়ামে হলেও ভারতের অস্ট্রেলিয়া সফরটা হোক। এই সিরিজে লোভনীয় টিভি স্বত্বের কারণেই সিএ এটা চাইছে।
তবে দর্শকবিহীন স্টেডিয়ামে খেলাটা কোহলি অন্তত উপভোগ করবেন না, 'জানি না এটা কে কীভাবে নেবেন। খেলাটার জন্য ভালোবাসা আর আবেগ আছে, আমরা সব সময় এমন মানুষের সামনে খেলি। এটা ঠিক যে খেলোয়াড়দের মনোযোগ আরও বেশি থাকবে, কিন্তু মাঠে দর্শক আর খেলোয়াড়দের মধ্যে যে একটা বন্ধন থাকে, ভরা গ্যালারির সামনে খেলার যে একটা আবেগ, এগুলো আসবে না।'
করোনার কারণে বন্ধ ক্রিকেট মাঠে ফেরাতে হলে কিছু শর্ত তো মানতেই হবে। সেটা মানুষের জীবন বাঁচানোর জন্যই। তাই দর্শকবিহীন মাঠে খেলা নিয়ে আক্ষেপ থাকলেও সেটা মেনে নিচ্ছেন কোহলি, 'আমাদের যেভাবে খেলতে বলা হবে সেভাবেই খেলব। কিন্তু সেই রোমাঞ্চ, জাদুকরি মুহূর্তগুলো আর থাকবে না।'
দর্শকবিহীন স্টেডিয়ামে খেলতে ভালো লাগবে না উইকেটকিপার-ব্যাটসম্যান অ্যালেক্স ক্যারিরও। কিন্তু ক্রিকেট মাঠে ফিরতে দেখলেই খুশি হবেন তিনি, একটা শূন্যতা অনুভূত হবে। কিন্তু ক্রিকেটপ্রেমীরা টেলিভিশনে লাইভ ক্রিকেট ম্যাচ তো দেখতে পাবেন।
ডিসেম্বর-জানুয়ারিতে ভারত অস্ট্রেলিয়ায় টেস্ট সিরিজ খেলতে গেলে ম্যাচগুলো দর্শকশূন্য স্টেডিয়ামেই হওয়ার কথা। উসমান খাজা এটিকে বলছেন অস্ট্রেলিয়ার জন্য 'শাপেবর'। অস্ট্রেলীয় ব্যাটসম্যানের কথা, 'নিঃসন্দেহে এটা অস্ট্রেলিয়ার জন্য একটা সুবিধা!' যেকোনো খেলাতেই নিজেদের মাঠে খেলার বাড়তি সুবিধা থাকে। আর সেটা নিজেদের সমর্থকদের উপস্থিতি। কিন্তু খাজা উল্টোটা কেন ভাবছেন? এর যুক্তি অবশ্য দিয়েছেন অস্ট্রেলীয় ব্যাটসম্যান, 'আবার তারা (ভারত) সর্বশেষ যে ওয়ানডে সিরিজ খেলতে এখানে এসেছিল, সেবার ওদের সমর্থকই বেশি ছিল। বিশেষ করে মেলবোর্নে। এটা অদ্ভুত এক অনুভূতি। ভারতের মাঠে খেলা হলে অবশ্যই সেখানে ভারতের সমর্থক বেশি থাকবেন। কিন্তু মেলবোর্নেও আপনি একই অবস্থা দেখবেন। কখনো কখনো সিডনি বা অন্য মাঠেও।'