ঢাকার যে রেস্তোরাঁয় থাকছে ক্রিকেটের স্বাদ

>ক্রিকেটারদের রেস্টুরেন্ট ব্যবসায় আসাটা নতুন কিছু নয়। রেস্তোরাঁ ব্যবসায় নাম লেখালেন সাবেক অধিনায়ক আকরাম খানও। হাতিরঝিলের পাড়ে শুধু সুন্দর পরিবেশে অবস্থান বলে নয়, আয়োজনের দিক দিয়ে এ রেস্তোরাঁ কিছুটা ব্যতিক্রম।

রেস্তোরাঁয় খেতে ঢুকেছেন নাকি বাংলাদেশের ক্রিকেট ইতিহাসে ঢুকে পড়েছেন, একটু ধন্দে পড়ে যাবেন! বাংলাওয়াশ' অব পাকিস্তান', ‘দেশের মাটিতে টানা ১০ জয়ের রেকর্ড করল বাংলাদেশ’, ‘শততম টেস্টে লঙ্কা জয়’, ‘বাংলাওয়াশের শিকার নিউজিল্যান্ড’—রেস্তোরাঁর দেয়ালজুড়ে বাংলাদেশের ক্রিকেট ইতিহাস। ইতিহাস নয়, আছে বর্তমানও। মাশরাফি বিন মুর্তজার হুংকার, তেজদীপ্ত দৃষ্টিতে সাকিব-তামিম-মাহমুদউল্লাহ-মুশফিকদের চাহনি, এমনি আরও কত কি!

আকরাম খানের রেস্তোরাঁ ‘ক্রিকেটার্স কিচেন’ এর উদ্বোধনে উপস্থিত ছিলেন সাবেক-বর্তমান ক্রিকেটাররা। ছবি: প্রথম আলো
আকরাম খানের রেস্তোরাঁ ‘ক্রিকেটার্স কিচেন’ এর উদ্বোধনে উপস্থিত ছিলেন সাবেক-বর্তমান ক্রিকেটাররা। ছবি: প্রথম আলো

বাংলাদেশের ক্রিকেটেই শেষ নয়; ভিভ রিচার্ডস, শচীন টেন্ডুলকার, মুত্তিয়া মুরালিধরন, শেন ওয়ার্ন, স্টিভ ওয়াহদের মতো ক্রিকেট কিংবদন্তিদের দেখাও মিলবে এই রেস্তোরাঁয়। ক্রিকেটময় এই রেস্তোরাঁর নাম ‘ক্রিকেটার্স কিচেন’। রেস্তোরাঁটি বাংলাদেশ দলের সাবেক অধিনায়ক ও বিসিবি ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের প্রধান আকরাম খানের। ক্রিকেটার্স কিচেনের অবস্থান গুলশান পুলিশ প্লাজা ও শুটিং ক্লাবের একেবারে মাঝে; হাতিরঝিলের পাড়ে সুন্দর, দৃষ্টিনন্দন, উপভোগ্য এক জায়গায়। রেস্টুরেন্টের হলরুম, কিচেন রুম থেকে শুরু করে সবকিছুই দারুণভাবে গড়ে তোলা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু করেছে জমকালো এ রেস্টুরেন্টটির।

হাতিরঝিলের দারুণ অবস্থানে, দারুণ পরিবেশে অবস্থিত আকরামের ‘ক্রিকেটার্স কিচেন’। ছবি: প্রথম আলো

উদ্বোধন পর্বে রেস্তোরাঁয় এসেছিলেন বাংলাদেশ ক্রিকেটের স্বপ্ন সারথিরা, ইতিহাস রচয়িতার। অতিথিদের স্বাগত জানান আকরাম ও তাঁর স্ত্রী সাবিনা আকরাম। সাবেক অধিনায়কদের মধ্যে আসেন মিনহাজুল আবেদীন, ফারুক আহমেদ, মিনহাজুল আবেদীন এবং তাঁর স্ত্রী, নাঈমুর রহমান, হাবিবুল বাশার ও খালেদ মাসুদ। সাবেক ক্রিকেটার ও বর্তমানে ধারাভাষ্যকার আতহার আলী খান আসেন সপরিবারে।

বর্তমান ক্রিকেটারদের মধ্যে এসেছিলেন তামিম ইকবাল, মাহমুদউল্লাহ, মুশফিকুর রহিম, রুবেল হোসেন ও তাসকিন আহমেদ। এমনকি বাংলাদেশ দলের প্রধান কোচ স্টিভ রোডস ও স্পিন কোচ সুনীল যোশিও ঢুঁ মেরে যান আকরামের ক্রিকেটার্স কিচেনে। মাহমুদউল্লাহ-মুশফিক আসেন সপরিবারে। তামিম অবশ্য চাচার রেস্তোরাঁয় একাই আসেন। রেস্টুরেন্টের বাইরে সবুজ লনে সাবেক অধিনায়ক নাঈমুর, হাবিবুল ও বর্তমান তারকা তামিমের সঙ্গে সাংবাদিকদের জমজমাট এক আড্ডাটা ছিল দেখার মতো। কত স্মৃতি, বাংলাদেশ ক্রিকেটের কত অজানা কথা জানা গেল হাতিরঝিলের জমজমাট এই আড্ডায়।

রাতের আলো-আঁধারিতে ‘ক্রিকেটার্স কিচেন’ । ছবি: প্রথম আলো

ক্রিকেটারদের রেস্টুরেন্ট ব্যবসায় আসাটা নতুন কিছু নয়। দেশেই রেস্টুরেন্ট ব্যবসা আছে সাকিব আল হাসান, ইমরুল কায়েস ও তাসকিনের। এমনকি চট্টগ্রামে আকরামের আরেক ভাতিজা নাফিস ইকবালের আছে ‘দম ফুঁক’ নামের একটি রেস্টুরেন্ট। আকরামও কেন একই পথ অনুসরণ করেছেন, সেটির ব্যাখ্যা কাল দিলেন নিজ রেস্তোরাঁয় দাঁড়িয়ে, ‘আমার বাবা প্রথম ব্যবসা শুরু করেন রেস্টুরেন্ট দিয়ে। এই বিষয়টা কাজ করেছে মাথায়। আর ঢাকায় একটা ভালো জায়গা খুঁজছিলাম যেখানে ভিন্নধর্মী একটা রেস্টুরেন্ট করা যায়। এখানে ক্রিকেটীয় পরিবেশটা থাকবে। ক্রিকেট কিংবা ক্রিকেটের বাইরে সবাই আসবে, দেখা হবে।’

শুধু আকরামই নন, এই উদ্যোগের সঙ্গে জড়িয়ে আছেন তাঁর স্ত্রী সাবিনাও। আকরাম পত্নী জানালেন, ক্রিকেটার্স কিচেনে বিশেষ দুটি আকর্ষণের কথা, ‘যারা চট্টগ্রামের মেজবান পছন্দ করেন প্রতি মাসের প্রথম শুক্রবারে এটি আয়োজন করা হবে। যত বড় বড় সিরিজ টুর্নামেন্টে বা ইউরোপীয় ফুটবল হবে, আমরা এখানে খেলা দেখানোর ব্যবস্থা করব। পুরো রেস্তোরাঁয় থাকবে খেলার পরিবেশ।’
ক্রিকেটার্স কিচেনের মূল বৈশিষ্ট্যই এখানে, সুন্দর, উপভোগ্য পরিবেশে শুধু সুস্বাদু খাবারই আস্বাদন করবেন না, পাবেন ক্রিকেটেরও স্বাদ।