দেশের মাটিতে ওয়ানডে খেলার আট মাস পর সাকিব আল হাসানের টেস্ট অভিষেক। টেস্ট কীর্তিটাও গড়লেন ওয়ানডের কীর্তিটার ঠিক আট মাস পরেই। কীর্তিটা হলো, টেস্ট-ওয়ানডে দুই ফরম্যাটেই দেশের মাটিতে ২০০০ রান ও ১০০ উইকেট নেওয়া। মজার বিষয় হচ্ছে, ওয়ানডেতে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচ খেলেন সাকিব এবং এই কীর্তিটাও গড়েন জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে খেলা ম্যাচে। আবার টেস্টে ভারতের বিপক্ষে প্রথম টেস্ট খেলেন সাকিব। টেস্টেও কীর্তিটা গড়লেন ভারতের বিপক্ষেই।
আর সেই সঙ্গে রান ও উইকেটের এই ‘ডাবল’ অর্জনে আরও অনেক সেরা অলরাউন্ডারদের ছাপিয়ে গেলেন। ইতিহাসের মাত্র দ্বিতীয় অলরাউন্ডার হিসেবে টেস্ট এবং ওয়ানডে দুই ফরম্যাটেই দেশের মাটিতে ২০০০ রান এবং ১০০ উইকেট নেওয়ার অনন্য কীর্তি গড়লেন। যে কীর্তি আর আছে কেবল জ্যাক ক্যালিসের, সর্বকালের অন্যতম সেরা অলরাউন্ডার।
ফতুল্লা টেস্টে দেশের মাটিতে ২০০০ টেস্ট রান পূর্ণ করেছেন। এই টেস্টের তৃতীয় দিনেই শিখর ধাওয়ানকে আউট করে পূর্ণ করেছিলেন দেশের মাটিতে ১০০ উইকেটও। দেশের মাটিতে নিজের ২৮তম টেস্টে ব্যাট-বলের এই ‘ডাবল’ কীর্তি নিয়ে এমন এক ক্লাবে প্রবেশ করলেন, যেখানে আছে মাত্র ছয়জন অলরাউন্ডার। জ্যাক ক্যালিস (৭০৩৫ রান, ১৬৫ উইকেট), গ্যারি সোবার্স (৪০৭৫ রান, ১০৭ উইকেট), ইয়ান বোথাম (২৯৬৯ রান, ২২৬ উইকেট), কপিল দেব (২৮১০ রান, ২১৯ উইকেট), ডেনিয়েল ভেট্টোরি (২৪৭০ রান, ১৫৯ উইকেট) এবং অ্যান্ড্রু ফ্লিনটফ (২০০৭ রান, ১০৯ উইকেট)।
ফতুল্লা টেস্টেই পূর্ণ হয়েছে দুটো রেকর্ড। ওয়ানডেতেও একটুর জন্য একই ম্যাচে হতে হতেও হয়নি। মাটিতে নিজের ৭০তম ম্যাচে পূর্ণ করেছিলেন ১০০ উইকেট এবং ৭১তম ম্যাচে পূর্ণ করেছিলেন ২০০০ রান। টেস্টে এই কীর্তি সাতজনের থাকলেও ওয়ানডেতে আছে মাত্র চারজনের। তারা হলেন জ্যাক ক্যালিস (৫১৭৮ রান, ১১৬ উইকেট), সনাৎ জয়াসুরিয়া (৩৮৮০ রান, ১১৯ উইকেট), স্টিভ ওয়াহ (৩১৬৫ রান, ১০১ উইকেট) এবং সাকিব আল হাসান (২১৬৪ রান, ১১৭ উইকেট)।
টেস্ট ওয়ানডে মিলিয়ে সব মিলিয়ে এই কীর্তি নয়জনের। কিন্তু টেস্টেও করেছেন ওয়ানডেতেও করেছে—এমন তালিকা যদি করেন, সেখানে সাকিবের পাশে শুধু একটাই নাম—ক্যালিস।
টেস্টে দেশের মাটিতে ২০০০ রান এবং ১০০ উইকেটের মাইলফলক স্পর্শ করতে ক্যালিসের লেগেছিল ৪৯ ম্যাচ, সেখানে সাকিবের লেগেছে ২৮ ম্যাচ। আবার ওয়ানডেতে এই মাইলফলক স্পর্শ করতে ক্যালিসের লেগেছিল ১০৯ ম্যাচ, আর সাকিবের লেগেছে ৭১ ম্যাচ। টেস্টে ১৩ হাজার ২৮৯ রান আর ২৯২ উইকেট, ওয়ানডেতে ১১ হাজার ৫৭৯ রান আর ২৭৩ উইকেট নিয়ে ক্যারিয়ার শেষ করেছেন। সাকিব সেই পর্যন্ত পৌঁছাতে পারবেন কিনা, সময়ই বলে দেবে। তবে ক্যালিস ১৬৬টি টেস্ট আর ৩২৮টি ওয়ানডে খেলার সুযোগ পেয়েছেন। একটা প্রশ্ন তাই ওঠেই। বাংলাদেশ ওয়ানডে ম্যাচ মোটামুটি খেললেও টেস্ট ম্যাচের সংখ্যা নিতান্তই কম। আট বছরের ক্যারিয়ারে সাকিবই যেমন খেলেছেন মাত্র ৪০ টেস্ট!