রেকর্ড হাতছানি দিচ্ছে কোহলিকে।
রেকর্ড হাতছানি দিচ্ছে কোহলিকে।

টেন্ডুলকার-পন্টিংকে ছাড়িয়ে যাওয়ার অপেক্ষায় কোহলি

স্বাদটা ভুলে যেতে বসেছেন বিরাট কোহলি। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে শেষ তাঁকে এ স্বাদ দিয়েছিল বাংলাদেশ। কলকাতায় দিবারাত্রির টেস্টের একমাত্র ইনিংসে ১৩৬ রানের একটি ইনিংস খেলেছিলেন কোহলি। এরপর থেকেই যেন কী হয়েছে তাঁর। টি-টোয়েন্টিতে তো আগেও তিন অঙ্কের দেখা পাননি। ২০১৯ সালের নভেম্বরের পর থেকে টেস্ট বা ওয়ানডেতেও সেঞ্চুরির দেখা মিলছে না ভারতের অধিনায়কের।

তিন সংস্করণ মিলে ৩৭ ম্যাচে ৪১ বার ব্যাট করতে নেমেছেন। এর মধ্যে ১৫ বার ফিফটি পেয়েছেন। বাংলাদেশের বিপক্ষে সে ম্যাচের পরই ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ৯৪ রানে অপরাজিত ছিলেন। আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে যেটা তাঁর ক্যারিয়ার–সেরা ইনিংস। কিন্তু ওটাই যে শেষ হয়ে থাকবে, কে জানত। গত দেড় বছরে আর নব্বইয়ের ঘরেও যাওয়া হয়নি তাঁর।

ইংল্যান্ডের বিপক্ষে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজে এই খরা যেকোনোভাবেই হোক কাটাতে চাইবেন কোহলি। আর তাহলেই তাঁর হাতে এসে ধরা দেবে দারুণ সব রেকর্ড।

বিরাট কোহলি।

২৩–২৮ মার্চের মধ্যে পুনেতে মহারাষ্ট্র ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন স্টেডিয়ামে হবে ইংল্যান্ডের সঙ্গে ভারতের তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ। এই সিরিজেই একসঙ্গে দুই কিংবদন্তির রেকর্ড দখলে নেওয়ার সুযোগ পাচ্ছেন কোহলি। ঘরের মাঠের ওয়ানডেতে সবচেয়ে বেশি সেঞ্চুরির রেকর্ড শচীন টেন্ডুলকারের। ওয়ানডে ক্যারিয়ারের ৪৯টি সেঞ্চুরির ২০টিই ঘরের মাঠে কিংবদন্তির। এই ২০ সেঞ্চুরি তুলতে ঘরের মাঠে ১৬৪ ওয়ানডে খেলতে হয়েছে ‘লিটল মাস্টার’কে।

সেঞ্চুরি পাওয়ার দিক থেকে উত্তরসূরির গতি তাঁর চেয়ে বেশি। ভারতে এখন পর্যন্ত মাত্র ৯৫টি ওয়ানডে খেলেছেন কোহলি। তাতেই ১৯টি সেঞ্চুরি তাঁর। ইদানীং সেঞ্চুরি–ভাগ্য যেমন যাচ্ছে তাঁর, তাতে তিন ম্যাচের সিরিজে টেন্ডুলকারকে পেরিয়ে যাবেন, এমন আশা করাটা বাড়াবাড়ি মনে হতে পারে। বিশেষ করে যখন খেয়াল হয়, ২০১৯ সালের আগস্টের পর থেকেই এক দিনের ক্রিকেটে সেঞ্চুরি নেই তাঁর।

কিন্তু ওয়ানডে ক্যারিয়ারে একবার টানা তিন ম্যাচে সেঞ্চুরির রেকর্ড আছে কোহলির। আরও আটবার টানা দুই ম্যাচে সেঞ্চুরি করার কীর্তিও আছে তাঁর। বরাবরই প্রশ্নের মুখে জ্বলে উঠতে পছন্দ করা কোহলি যদি সেঞ্চুরি–খরা কাটানোর জন্য এ সিরিজকেই বেছে নেন, তবে রেকর্ডটা হয়ে যেতেও পারে।

রিকি পন্টিং ও শচীন টেন্ডুলকার।

ইংল্যান্ডের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজে ফর্মে ফিরেছেন কোহলি। পাঁচ ম্যাচের সিরিজে ২৩১ রান তুলেছেন কোহলি। তিনটি পঞ্চাশোর্ধ্ব ইনিংস ছিল তাঁর। ফলে ওয়ানডেতে ১০০–এর গেরো কাটানোর এখনই সেরা সময়। আর টেন্ডুলকারকে পেরোতে দুটি সেঞ্চুরি দরকার হলেও রিকি পন্টিংয়ের রেকর্ড ভাঙতে তাঁর মাত্র একটি সেঞ্চুরিই যথেষ্ট হবে।

সব ফরম্যাট মিলিয়ে অধিনায়ক হিসেবে পন্টিংয়ের সেঞ্চুরি ৪১টি। ২০১৬ সালে প্রথম আনুষ্ঠানিকভাবে অধিনায়কের দায়িত্ব পাওয়া কোহলিও ৪১টি সেঞ্চুরি পেয়ে গেছেন। তবে পন্টিংকে যেখানে ৪১ সেঞ্চুরি পেতে ৩২৪টি ম্যাচ খেলতে হয়েছে, সে তুলনায় কোহলির পরিসংখ্যান রীতিমতো অবিশ্বাস্য। গত ৩৭ ম্যাচে সেঞ্চুরি না পেয়েও ১৯৭ ম্যাচেই ৪১ সেঞ্চুরি কোহলির। ম্যাচপ্রতি সেঞ্চুরির দিক থেকে কোহলির সঙ্গে পাল্লা দিতে পারেন শুধু একজন। বল বিকৃতি কেলেঙ্কারিতে অধিনায়কত্ব খোয়ানোর আগে অস্ট্রেলিয়ার হয়ে ৯৩ ম্যাচে ২০ সেঞ্চুরি ছিল স্টিভ স্মিথের।

তিন ম্যাচের সিরিজে একটি সেঞ্চুরি পেলে আরেকটি রেকর্ডে পন্টিংয়ের পাশে বসবেন কোহলি। ৫৬০ আন্তর্জাতিক ম্যাচে ৭১টি সেঞ্চুরি পন্টিংয়ের। ৪৩২ ম্যাচে ৭০ সেঞ্চুরিতে তাঁর পরেই আছেন কোহলি। সবার ওপরে অবশ্য সেই একজন, টেন্ডুলকার। ৬৬৪ ম্যাচে ঠিক ১০০ সেঞ্চুরি তাঁর।