শ্রীলঙ্কাকে আরও একবার ঘরের মাটিতে ধবলধোলাই হতে হলো। ২০১৮ সালের পর আরও একবার লঙ্কাজয় করেই ফিরছে ইংল্যান্ড।
গলে টানা দুই টেস্ট হারার মতো অভূতপূর্ব তেতো স্বাদও পেয়েছে স্বাগতিক দল। আর এসব কিছুই সম্ভব হয়েছে জো রুটের ব্যাটে। সিরিজে অন্য ব্যাটসম্যানরা যখন মাথা কুটে মরেছেন, রুট সেখানে আশ্চর্য সাবলীল!
দলকে সিরিজ জেতানোর সঙ্গে ব্যক্তিগত অনেক কিছুই অর্জন করেছেন রুট। এক লাফে ইংল্যান্ডের সর্বোচ্চ রান স্কোকারের তালিকায় ডেভিড গাওয়ার, কেভিন পিটারসেন ও জেফরি বয়কটকে টপকে গেছেন।
তবে বয়কটের ধারণা, ইংলিশ রেকর্ড নয়, বিশ্ব রেকর্ডই গড়ার ক্ষমতা রাখেন রুট।
গত কিছুদিন ফর্মে ছিলেন না রুট। দলের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ইনিংস খেলা হচ্ছিল না। এ নিয়ে একটু ফিসফাসও উঠেছিল। কিন্তু শ্রীলঙ্কা সফরে সব ধামাচাপা দিয়েছেন অধিনায়ক।
প্রথম টেস্টে ২২৮ রানের ইনিংস খেলেছেন। দ্বিতীয় ইনিংসে দুর্ভাগ্যের শিকার হওয়ার আগে খেলেছেন ১৮৬ রানের ইনিংস। চার ইনিংসে গড়ে ১০৬.৫০ তুলেছেন। আর সে সুবাদেই টেস্টে তাঁর রান এখন ৮ হাজার ২৪৯।
টেস্টে ইংল্যান্ডের হয়ে গাওয়ার, পিটারসেন ও বয়কটের রান ছিল যথাক্রমে ৮ হাজার ২৩১, ৮ হাজার ১৮১ ও ৮ হাজার ১১৪। তিনজনই ১০০–এর বেশি টেস্ট খেলেছেন। ওদিকে রুটের টেস্ট সংখ্যা এখনো ৯৯।
দ্য টেলিগ্রাফে নিজের কলামে রুটকে আকাশ ছোঁয়ার লক্ষ্য দিয়েছেন বয়কট, ‘ইংল্যান্ডের হয়ে ডেভিড গাওয়ার, কেভিন পিটারসেন এবং আমার চেয়ে বেশি রান করার কথা ভুলে যান। জো রুটের ২০০ টেস্ট খেলার ও শচীন টেন্ডুলকারের চেয়ে বেশি রান করার ক্ষমতা আছে।’
ওয়ানডে ও টেস্টে টেন্ডুলকার সর্বকালের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক। তবে বিরাট কোহলি যেভাবে এগোচ্ছেন, তাতে চোটমুক্ত থাকলে ওয়ানডের রেকর্ডটা তাঁর একদিন দখলে যাবে বলেই বিশেষজ্ঞদের ধারণা। সে তুলনায় টেস্টে টেন্ডুলকারের প্রায় ১৬ হাজার রানের রেকর্ড নিরাপদ বলেই মনে হচ্ছিল।
কিন্তু বয়কটের ধারণা, টেস্টে রুটের যে রান ক্ষুধা, সেটা টেন্ডুলকারের রানের রেকর্ডকে হুমকির মুখে ফেলে দেব, ‘রুটের বয়স মাত্র ৩০। সে ৯৯ টেস্ট খেলেছে এবং এরই মধ্যে ৮ হাজার ২৪৯ রান করেছে। ভয়ংকর কোনো চোট না পেলে, কোনো কারণ নেই ওর টেন্ডুলকারের সর্বকালের ১৫,৯২১ রানের রেকর্ড না ভাঙার।’
স্বদেশি ব্যাটসম্যানের ব্যাটিং দেখে মুগ্ধ হয়ে বয়কট এ কথা বলেছেন বটে। তবে কাজটা বেশ কঠিন। ৪০ বছর পর্যন্ত খেলেছেন টেন্ডুলকার। ১৫ হাজার ৯২১ রান তুলতে দুই যুগ ধরে ব্যাট করতে হয়েছে তাঁকে।
সে তুলনায় রুট একটু দেরিতেই শুরু করেছেন। ২২ বছরে অভিষিক্ত হয়েছেন রুট। আর টেন্ডুলকার ২৯ বছর বয়সেই ৯৯ টেস্ট খেলে ফেলেছেন এবং ৯৯ টেস্ট শেষে টেন্ডুলকারের রান ছিল ৮ হাজার ৩৫১, যা রুটের চেয়ে ১০২ বেশি।
ক্যারিয়ার যত দীর্ঘ হয়েছে, টেন্ডুলকারের রানের গতি কিন্তু ততই কমেছে। শেষ ১১ বছরে ১০১ টেস্ট খেলে তাই ৭ হাজার ৫৭০ রান করেছেন টেন্ডুলকার। প্রথম ১০০ টেস্টে ৩০ সেঞ্চুরি ও ৩৪টি ফিফটি করা টেন্ডুলকার পরের অর্ধে ৩৪টি ফিফটি পেলেও সেঞ্চুরি করেছেন ২১টি।
এখন পর্যন্ত ৯৯ টেস্টে ১৯ সেঞ্চুরি ও ৪৯ ফিফটি করা রুটের ক্ষেত্রেও যে বয়সের ছাপ পড়বে না, এর নিশ্চয়তা কী?