১৫ রানে দুই ওপেনারকে হারিয়ে রংপুর রাইডার্সের শুরুটা হলো বাজে। ৮ ওভার শেষেও তাদের রানরেট ৬-এর নিচে। আক্রমণই চাপমুক্তির উপায়, এ ভাবনায় হয়তো ৯ম ওভারে মেহেদী হাসান মিরাজকে পরপর দুবার উড়িয়ে মারলেন মোহাম্মদ মিঠুন। ম্যাচের রংটা বদলাতে শুরু করল সেখান থেকেই। শেষ পর্যন্ত ম্যাচটা জিতেই গেল রংপুর। সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে আজ রাজশাহী কিংসকে ৬ উইকেটে হারিয়ে বিপিএলে শুভ সূচনা করল রংপুর।
দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে ৫৬ বলে ৯০ রান যোগ করে ম্যাচটা নিজেদের করে নিয়েছেন মিঠুন-শাহরিয়ার নাফীস। উইলিয়ামসের অফ স্টাম্পের বাইরে করা শর্ট বলটা কাট করতে গিয়ে পয়েন্টে লুক রাইটের দুর্দান্ত ক্যাচ হয়ে মিঠুন ফিরেছেন ফিফটি থেকে ৪ রান দূরে থেকে। ২৩ রানের মধ্যে শাহরিয়ার (৩৫) ফিরলেও রংপুরের জয় পেতে সমস্যা হয়নি। রবি বোপারা-থিসারা পেরারার অবিচ্ছিন্ন পঞ্চম উইকেট জুটি ২৮ বলে ৪২ রানের সমীকরণটা অনায়াসে মিলিয়েছে।
শিশিরের কথা ভেবেই হয়তো টস জিতে ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত রংপুরের। বোলিংয়ে দলকে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিলেন মাশরাফি বিন মুর্তজা। অধিনায়কের সঙ্গে অসাধারণ বোলিং করলেন নাজমুল ইসলামও। রুবেল হোসেন, লাসিথ মালিঙ্গা, পেরেরা খরচে হওয়ার পরও রাজশাহী কিংসকে ১৫৪ রানে থামাতে পেরেছে রংপুর।
আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি থেকে মাশরাফি অবসর নিয়েছেন গত এপ্রিলে। কিন্তু সিলেট আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে যে বোলিংটা আজ করেছেন রংপুর অধিনায়ক, তাতে ক্রিকেটের সংক্ষিপ্ততম সংস্করণে তাঁর অপরিহার্যতাই বোঝালেন! প্রথম ওভারে ৭ রান দেওয়া মাশরাফি দ্বিতীয় ওভারে মেডেনও পেলেন। ১৩তম ওভারে ফ্রাঙ্কলিন একটা ছক্কা মারলেও এক বল পরেই রাজশাহীর পক্ষে সর্বোচ্চ ৪৭ রান করা রনি তালুকদারকে দারুণ এক কাটারে বোল্ড করেছেন। ৪ ওভার শেষে অধিনায়কের বোলিং বিশ্লেষণী দাঁড়ায় ১৮ রানে ১ উইকেট। মাশরাফি খেলেন সাধারণত ২ নম্বর জার্সিতে। এবার বিপিএলে জার্সি নম্বর বদলেছেন। রংপুরের হয়ে খেলছেন ‘০’ নম্বর জার্সিতে। তবে কি শূন্য থেকে শুরু করতে চাইছেন মাশরাফি?
মাশরাফির সঙ্গে প্রতিপক্ষকে চাপে রাখার কাজটা দারুণভাবে করেছেন নাজমুলও। রাজশাহী কিংসের জার্সিতেই গত বিপিএলে নিয়মিত উদ্যাপনটা করতে দেখা গেছে ২৬ বছর বয়সী বাঁহাতি স্পিনারের। উইকেট পেলেই হাত দিয়ে ফণা তোলেন নাজমুল। তাঁর বোলিংয়ে যে কিছু বিষ আছে, গতবার সেটি সবচেয়ে বেশি বুঝেছিল রংপুর রাইডার্স। ৮ রানে ৩ উইকেট নিয়ে সেরা বোলিংটা করেছিলেন রংপুরের বিপক্ষেই। এবার সেই রংপুরের হয়ে আগের দল রাজশাহীর বিপক্ষে ফণা তুললেন নাজমুল! টানা ৪ ওভার বোলিং করে দিয়েছেন ২০ রান। লুক রাইট-মুশফিকুর রহিমকে ফিরিয়ে ‘সর্প-উদ্যাপনের’ সুযোগ পেয়েছেন দুবার। ১ ওভারে ৫ রান দিয়ে ১ উইকেট পাওয়া সোহাগ গাজীকে পরে মাশরাফি আর কেন আনলেন না আক্রমণে, সেটি অবশ্য বোঝা গেল না।
১৭ ওভারে ৫ উইকেটে ১১৬ রান করা রাজশাহী পরে ৮ উইকেটে ১৫৪ রানের স্কোর পেয়েছে শেষ দিকে রুবেলের খরচে বোলিং আর স্যামি ও মিরাজের দুটো ছোট ঝোড়ো ইনিংসের সৌজন্যে। তবে সেটি যে যথেষ্ট ছিল না, রাজশাহী পরে বুঝেছে।