করোনাভাইরাসের কারণে কম-বেশি সব দেশের ক্রিকেট বোর্ডই ক্ষতির মুখে পড়েছে। বিশ্বের সবচেয়ে ধনী ক্রিকেট বোর্ড হিসেবে পরিচিত ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডও (বিসিসিআই) এর বাইরে নয়। একদিকে করোনাভাইরাসের থাবা, অন্যদিকে গালওয়ানে চীনের সঙ্গে ভারতের সীমান্ত সংঘাত—সব মিলিয়ে বিসিসিআইয়ের ক্ষতিটা বড় অঙ্কেরই।
কোভিড-১৯ এর কারণে বিশ্বব্যাপী যে ব্যবসায়িক মন্দা শুরু হয়েছে, এর বাইরে নয় করপোরেট প্রতিষ্ঠানগুলো। তাই ভবিষ্যতে পৃষ্ঠপোষকদের সঙ্গে চুক্তির জন্য দরপত্রের প্রত্যাশিত অর্থ কমিয়ে না ধরলে পৃষ্ঠপোষক পাওয়া কঠিন হয়ে যাবে বলে মনে করছেন বিসিসিআই কর্তারা। সে হিসেবে তাদের কোষাগারে বড় ধরনের টান পড়তে যাচ্ছে বলেই মনে করছেন বিশ্লেষকেরা।
আগামী সেপ্টেম্বরেই ভারতীয় ক্রিকেট দলের জার্সি পৃষ্ঠপোষক নাইকির সঙ্গে সম্পর্ক শেষ হতে চলেছে বিসিসিআইয়ের। নতুন চুক্তি নিয়েও সংশয় আছে। এ মুহূর্তে নাইকির পক্ষে বোর্ডকে প্রত্যাশিত অর্থ দেওয়া নানা কারণেই সম্ভব নয় বলে জানিয়েছে ইকোনমিক টাইমস। নাইকির সঙ্গে বিসিসিআইয়ের সম্পর্ক সেই ২০০৬ সাল থেকে। তবে বর্তমান চুক্তিটি ছিল চার বছর মেয়াদি। এ চুক্তি অনুযায়ী ম্যাচ প্রতি বিসিসিআইকে ৮৫ লাখ রুপি দেওয়ার কথা নাইকির। মোট চুক্তি ৩৭০ কোটি রুপির। ম্যাচ প্রতি ৮৫ লাখ রুপির সঙ্গে রয়্যালটি আরও ৩০ কোটি রুপি। কোভিড-১৯ এর কারণে নাইকির ব্যবসায়িক অবস্থা ভালো না। তাই এই পুরো টাকা কোনোভাবেই বিসিসিআইকে দিতে পারবে না বলে জানিয়েছে তারা। সে কারণে তারা চুক্তিটি শেষ করার জন্য সমঝোতায় যেতে চাচ্ছে।
নাইকির সঙ্গে চুক্তি তো আছেই, বিসিসিআই বড় বিপদে আছে আইপিএলে চীনা প্রতিষ্ঠানের স্পনসর চুক্তি নিয়ে। আইপিএলের টাইটেল স্পনসর হিসেবে মোবাইল ফোন প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান ভিভো ভারতীয় বোর্ডকে বছরে দেয় ৪৪০ কোটি রুপি। এ বছর আইপিএল করোনার কারণে স্থগিত হয়ে গেছে। এটি আর না হলে এই ৪৪০ কোটি রুপি বিসিসিআই আর পাবে না। সব মিলিয়ে আর্থিক দিক দিয়ে সৌরভ গাঙ্গুলি যে কঠিন পরিস্থিতির মধ্যে পড়তে যাচ্ছেন, সেটা না বললেও চলছে।
করোনার কারণে সম্প্রচার চুক্তিও হুমকির মুখে পড়েছে। এ বছর ভারতের মাটিতে ১২টি আন্তর্জাতিক ম্যাচ হওয়ার কথা ছিল। সেই সঙ্গে ভারতের শ্রীলঙ্কা ও জিম্বাবুয়ে সফরের কথা ছিল। করোনার কারণে সেই মার্চ থেকে খেলা বন্ধ। সহসাই ভারতের মাঠে খেলা ফেরার সম্ভাবনা খুবই ক্ষীণ। এই ১২টি ম্যাচ সম্প্রচার বাবদ বিশাল অঙ্কের অর্থ প্রাপ্তি ছিল বিসিসিআইয়ের, সেটাও তারা পাচ্ছে না। এদিকে করোনার পর খেলা শুরু হলেও সম্প্রচার সংস্থাগুলো ক্ষতি পুষিয়ে নেওয়ার জন্য সম্প্রচার চুক্তিতে কাটছাঁট করার চেষ্টা করছে। আয় কমে যেতে পরে সেখান থেকেও।