শেষের লড়াইটা দুই দলের শুরু হয়েছে একই ভঙ্গিতে। ৪১তম ওভারে ৭ উইকেটে ১৯৭ রান করেছে ভারত। ২৭৪ রানের লক্ষ্যটাকে তখন অনেক দূর বলে মনে হতে পারত। কিন্তু নিজেদের ইনিংসে ৪২তম ওভারে যখন অষ্টম উইকেট হারিয়েছিল, তখন নিউজিল্যান্ডের রানও ছিল ঠিক ১৯৭। ২ উইকেট হাতে নিয়ে ৫১ বলে নিউজিল্যান্ড যদি ৭৬ রান তুলতে পারে, ভারতের পক্ষে তো ৫৪ বলে ৭৭ রান তোলা কঠিন কিছু হওয়ার কথা নয়! কিন্তু টি-টোয়েন্টিতে চাপ নিতে না পারা নিউজিল্যান্ড ওয়ানডেতে ভিন্ন রূপ দেখাচ্ছে। শেষ দিকে বোলাররা ঠিকই ম্যাচ বের করে নিলেন। ২২ রানের এ জয়ে এক ম্যাচ হাতে রেখে সিরিজ (২-০) জিতে গেল নিউজিল্যান্ড।
ম্যাচটা হাতের মুঠোয় নিয়ে এসেছিল নিউজিল্যান্ড। ১৫৩ রানে সপ্তম উইকেট হারিয়েছিল ভারত। জয় ১২১ রান দূরে, উইকেটে রবীন্দ্র জাদেজা। তাঁর সঙ্গী মাত্র চতুর্থ ওয়ানডে খেলতে নামা নবদ্বীপ সাইনি। ওয়ানডে এর আগে কখনো ব্যাট করা হয়নি এই পেসারের। লিস্ট ‘এ’তেও তাঁর ক্যারিয়ারর সর্বোচ্চ রান ২৫। এমন অবস্থায় ভারতের হারের সম্ভাবনাই বেশি ছিল। কিন্তু বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে ঠিক যেভাবে স্রোতের বিপরীতে দাঁড়িয়ে লড়াই করেছিলেন জাদেজা, আজও সেটাই করলেন। এবং নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সেই সেমিফাইনালের মতোই একটুর জন্য ব্যর্থ হলেন। শেষ ব্যাটসম্যান হিসেবে আউট হয়েছেন ৭৩ বলে ৫৫ রানের ইনিংস খেলে।
সাইনিকে নিয়ে ধীরে ধীরে এগোলেন জাদেজা। নিউজিল্যান্ডের পেসারদের সব রকম চেষ্টা ব্যর্থ করে দিয়ে ঠিকই এ জুটি ম্যাচটাকে নিয়ন্ত্রণে নিয়ে এলেন। একবার থিতু হওয়ার পর সাইনি দেখালেন ছক্কা-চার মারায় কম যান না তিনিও। পাঁচ বলের মধ্যে তিন ছক্কা ও এক চার মেরে মাত্রই আগ্রাসী মূর্তি দেখাচ্ছিলেন তখনই আউট হয়েছেন সাইনি। কাইল জ্যামিসনের বলে বোল্ড হওয়ার আগে ৪৯ বলে ৫ চার ও ২ ছক্কায় ৪৫ রান করেছেন সাইনি। জাদেজা-সাইনির ৭৬ রানের জুটি ভারতকে জয়ের একদম দ্বারপ্রান্তে এনে দিয়েছিল।
টপ অর্ডারের ব্যর্থতা আজ ভারতকে ভালোই ভুগিয়েছে। পৃথ্বী শ(২৪) আর শ্রেয়ার আয়ার (৫২) ছাড়া প্রথম ছয় ব্যাটসম্যানের মধ্যে দুই অঙ্কে যেতে পেরেছেন শুধু অধিনায়ক বিরাট কোহলি (১৫)। নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারিয়ে ২৭৪ রানের লক্ষ্যকে কঠিন বানিয়ে ফেলেছিল রোহিত শর্মাবিহীন ব্যাটিং লাইনআপ। প্রথম সাত উইকেট জুটির কোনোটিতেই ৩৩ এর বেশি নিতে পারেনি ভারত।
এর আগে দুর্দান্ত শুরু পেয়েও কাজে লাগাতে পারেনি নিউজিল্যান্ড। মার্টিন গাপটিল (৭৯), হেনরি নিকোলসের (৪১) ওপেনিং জুটি ৯৩ রান এনে দিয়েছিল। ইনিংসের মাঝ পর্যায়ে ১ উইকেটে ১৪২ রান তুলে ফেলেছিল দলটি। এমন দারুণ অবস্থা থেকেও সর্বনাশ হতে দেরি হয়নি। দুটি রান আউট আর ব্যাটসম্যানদের শট নির্বাচনের ভুল মিলিয়ে ৫৫ রানের মধ্যে ৭ উইকেট হারিয়ে ফেলে স্বাগতিক দল। অভিষিক্ত জ্যামিসনকে নিয়ে এরপর নিজের অভিজ্ঞতার সেরা রূপ দেখিয়েছেন রস টেলর। ৫১ বলের জুটিতে ৭৬ রান এনে দিয়েছেন টেলর-জ্যামিসন। ২৪ বলে ২৫ রান করেছেন জ্যামিসন। এ জুটিতে ৪৪ রানের অবদান রাখা টেলর অপরাজিত ছিলেন ৭৩ রানে। ৭৪ বলের ইনিংসে ছিল ৬ চার ও ২ ছক্কা।