শুভ মধ্যাহ্ন।
বাংলাদেশ ও দক্ষিণ আফ্রিকার মধ্যকার ওয়ানডে সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচের সরাসরি ধারাভাষ্যে স্বাগতম। আজকের ম্যাচটি বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ। দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতে প্রথমবারের মতো সিরিজ জেতার আশায় দল মাঠে নামছে আজ। সেঞ্চুরিয়নে প্রথম ম্যাচ জিতে সিরিজে এগিয়ে আছে বাংলাদেশ।
আজ গোলাপি পোশাক পরে মাঠে নামবে দক্ষিণ আফ্রিকা। স্তন ক্যানসার নিয়ে সচেতনতা বৃদ্ধি করার জন্য মাঠে নাম্বে দক্ষিণ আফ্রিকা। প্রোটিয়ারা গোলাপি পোশাক পরে মাঠে নামলেই দুর্দান্ত খেলে। এবি ডি ভিলিয়ার্সের ৩১ বলে শতক এই পোশাক পরেই।
আজ বাংলাদেশ অধিনায়ক তামিম ইকবাল ও স্পিন কোচ রঙ্গনা হেরাথের জন্মদিন। দলের দুই গুরুত্বপূর্ণ সদস্যকে শুভ জন্মদিন জানানোর শ্রেষ্ঠ উপায় সিরিজ জয় দিয়েই করতে চাইবে বাংলাদেশ।
প্রথম ম্যাচে আগে ব্যাট করে জয় পেয়েছে বাংলাদেশ। আজও তাই আগে ব্যাটিং করছে বাংলাদেশ। প্রথম ম্যাচে জয় এনে দেওয়া দল নিয়েই নামছে সফরকারী।
দক্ষিণ আফ্রিকা দলে তিন পরিবর্তন। চোট কাটিয়ে ফিরেছেন কুইন্টন ডি কক, বাদ পড়েছেন এইডেন মার্করাম। মার্কো ইয়ানসেনের বদলে দলে এসেছেন আরেক বাঁহাতি পেসার ওয়েইন পারনেল। আর অলরাউন্ডার আন্দিলে ফিকোয়াওর বদলে এসেছে বাঁহাতি রিস্ট স্পিনার তাব্রেইজ শামসি।
বাংলাদেশের বিপক্ষে রিস্ট স্পিনারদের অতীত সাফল্য দেখেই হয়তো একজন ব্যাটসম্যান কমিয়ে বাড়তি বোলার নিচ্ছে দক্ষিণ আফ্রিকা।
প্রথম বলে ওয়াইড।
দ্বিতীয় বলেই একটুর জন্য তামিম ইকবাল বেঁচে গেছেন। ফিল্ডারের একটু সামনে পড়েছে বল। ওভার থ্রো থেকে আরেক রান পেল বাংলাদেশ।
চতুর্থ বলে প্রথম রান পেলেন লিটন দাস।
প্রথম ওভার শেষ হলো। ১ ওভার শেষে বাংলাদেশের স্কোর: ৩/০।
বলে চমৎকার ক্যারি পাচ্ছেন রাবাদা। শর্ট বলে বাড়তি বাউন্স পাচ্ছেন রাবাদা।
প্যাডে বল পেতেই রাবাদাকে শাস্তি দিলেন লিটন। চমৎকার ফ্লিকে স্কয়ার লেগ দিয়ে চার। দ্বিতীয় ওভার থেকে এই ৪টি রানই পেল বাংলাদেশ। স্কোর: ৭/০।
প্রথম ওভারেই তামিমকে দুবার অস্বস্তিতে ফেলেছেন এনগিডি। পরের ওভারের দ্বিতীয় বলেই আঘাত।
উইকেটের বাড়তি বাউন্সই কাল হলো। লেগ সাইডে খেলতে গিয়েছিলেন। বাড়তি বাউন্স গ্লাভসের ছোঁয়া নিয়ে আকাশে উঠে গেছে। পয়েন্টের ফিল্ডারের কোনো কষ্ট হয়নি।
উইকেটে প্রথম ম্যাচের নায়ক সাকিব আল হাসান। তাঁকেও বাড়তি বাউন্স অস্বস্তিতে ফেলেছে।
তিন ওভার শেষে বাংলাদেশের স্কোর: ৭/১।
রাবাদার প্রথম বলেই প্রান্ত বদল লিটনের।
ভিন্ন জায়গা, ভিন্ন বোলার, ভিন্ন ফিল্ডার। না হলে তামিমের আউটই আরেকবার করে দেখালেন সাকিব। এবার রাবাদার বলের বাড়তি বাউন্স, লেগ সাইডে খেলতে চেয়েছিলেন সাকিব। কিন্তু বাড়তি বাউন্স ব্যাটের কোণায় লেগে বল আকাশে তুলল। ৬ বল খেলে ০ রানে বিদায় সাকিবের। স্টাম্পের ওপর লেংথ বলে বাড়তি বাউন্স ভুগিয়েছে সাকিব-তামিম দুজনকেই।
৮ রানে ২ উইকেট হারাল বাংলাদেশ। প্রথম ম্যাচের একদম বিপরীত শুরু বাংলাদেশের।
উইকেটে বাড়তি বাউন্সের সাহায্য পেয়ে দুর্দান্ত বল করছেন এনগিডি ও রাবাদা। স্টাম্পের বাইরে চমৎকার লাইনে বল করছেন। ব্যাটসম্যানকে দ্বিধায় ফেলে দিচ্ছেন। বাড়তি বাউন্সের কারণে শট খেলতেও পারছেন না। আবার পুরোপুরি ছেড়েও দিতে পারছেন না লিটন।
এনগিডিকে কাট করলেন লিটন। লাফ দেওয়া পয়েন্টের ফিল্ডারের নাগালের একটু ওপর দিয়ে চলে গেল বল। পঞ্চম ওভারের শেষ বলের এই শটে বাংলাদেশের স্কোর ১২/২।
রাবাদার অনেক বাইরের বলে কাট করেছেন মুশফিক। সীমানায় দারুণ ফিল্ডিং চার পেতে দেয়নি মুশফিককে।
বাড়তি বাউন্স মুশফিকেরও গ্লাভসের ছোঁয়া নিয়ে গেছে। কিন্তু ভাগ্য ভালো, লেগ স্লিপে কেউ ছিলেন না।
৬ ওভার শেষে বাংলাদেশ ১৫/২।
এনগিডির বলে আবারও অস্বস্তিতে মুশফিক। বাড়তি বাউন্স গ্লাভসে লেগে উঠে গিয়েছিল। ভাগ্যিস, কাছাকাছি কোনো ফিল্ডার নেই।
পরের বলেই মুশফিকের ব্যাটের স্পর্শ নিতে নিতে বেড়িয়ে গেছে এনগিডির বল।
অনেক বাইরের বল পেয়ে লোভ সামলাতে পারেননি মুশফিক। তুলে মেরেছিলেন। কভারে ক্যাচ উঠেছিল। ফিল্ডারের হাতের স্পর্শ পেলেও হাতে আটকায়নি। ৩ রান।
এবার একটু বেশিই শর্ট করে ফেলেছিলেন এনগিডি। অফ স্টাম্পের বাইরে থেকে লিটনের পুল, বল মুহূর্তেই সীমানাছাড়া।
এই ওভার থেকে ৮ রান পেল বাংলাদেশ। ৭ ওভার শেষে স্কোর: ২৩/২।
আগের ওভারেই দারুণ এক পুল করেছেন। বাউন্সারের জবাব যে তাঁর হাতে আছে, সেটা বুঝিয়ে দিয়েছেন। এরপর এমন শট।
শরীর তাক করে শর্ট বল করেছেন রাবাদা। বল ভেতরে ঢুকছিল। এই বল প্রথমে খেলার চেষ্টা করেছেন লিটন। জায়গা একদম কমে যাওয়ায় পরে বল ছেড়ে দেওয়ার চেষ্টাও করেও পারেননি। ব্যাটের আলতো স্পর্শ ও ডি ককের গ্লাভস বাকিটা সেরে নিয়েছে।
৩ বল ০ রানে ফিরতে পারতেন ইয়াসির। বেশ বাইরের বলে ড্রাইভ করেছিলেন ইয়াসির। কিন্তু ইয়ানেমান মালান প্রথম স্লিপে ক্যাচ ফেলে দিয়েছেন। প্রথমে দ্বিতীয় স্লিপে বাভুমা ধরবেন ভেবে বলের দিকে যাননি, পরে সিদ্ধান্ত নিলেও বল হাতে রাখতে পারেননি।
১০ম ওভারের প্রথম বলেই রিভিউ। মাঠের আম্পায়ার আউট দেননি।
মুশফিকের ব্যাটের পাশ দিয়ে গেলেও স্পর্শ পায়নি বল। রিভিউ নষ্ট হলো দক্ষিণ আফ্রিকার।
নব্বই দশকের স্কোরকার্ড ফিরে এসেছে আজ। দক্ষিণ আফ্রিকান পেসাররা কন্ডিশন দারুণভাবে ব্যবহার করেছেন। বাড়তি বাউন্সে নাস্তানাবুদ বাংলাদেশ পাওয়ার প্লেতে ওভারপ্রতি ৩ রান করে তুলেছে, হারিয়েছে ৩ উইকেট।
রাবাদা ও এনগিডির বলের বাড়তি বাউন্স নাকাল করেছে ব্যাটসম্যানদের। ওদিকে ওয়েইন পারনেলের বল স্বাভাবিকের চেয়ে নিচু হয়ে আসছে। পারনেলের ওভার থেকে এল ৩ রান। বাংলাদেশ: ৩৩/৩।
রাবাদাকে একটা বাড়তি ওভার করিয়েছেন অধিনায়ক। একদম শেষ বলে এর পুরষ্কার পেল দক্ষিণ আফ্রিকা। দুর্দান্ত এক বাউন্সার। দক্ষিণ আফ্রিকার সত্যিকারের কন্ডিশনের স্বাদ দেওয়া সে বল ইয়াসিরের গ্লাভসে লেগে মহারাজার হাতে। বাংলাদেশ ৩৪/৪।
খুব দৃষ্টিকটুভাবে আউট মুশফিক। ওয়েইন পারনেলের বল লেগ স্টাম্পে পিচ করে সোজা যাচ্ছিল। বাড়তি বাউন্সের অপেক্ষায় থাকা মুশফক প্যাডের দিকে বল যাচ্ছে দেখেও ব্যাট নামাননি। যার অপেক্ষায় ছিলেন, তা হয়নি। বল আগের মতো বাউন্স করেনি, মুশফিকের বুয়াট প্যাডের আড়ালে থাকল। এলবিডব্লু মুশফিক।
যেভাবে বল করছেন, রাবাদাকে সরাতে রাজি নন অধিনায়ক। সপ্তম ওভার করতে চলে এসেছেন প্রোটিয়া পেসার।
অবশেষে প্যাডে বল। আর সে সুযোগে ফাইন লেগ দিয়ে চার আফিফের।
আফিফ পাল্টা আক্রমণে বিশ্বাসী। রাবাদাকে আবার চার। এবার পয়েন্ট দিয়ে চার। ফিল্ডারকে নড়তে হয়নি।
পরের বলে সিঙ্গেল।
রাবাদার ওভার থেকে এল ১০ রান। ১৪ ওভার শেষে বাংলাদেশ: ৪৫/৫।
ওভারের শেষ বল করতে এসে থেমে গেলেন পারনেল। ডেলেভারির একদম শেষ মুহূর্তে দাঁড়িয়ে গেছেন পারনেল।
ওভারের শেষ বল করলেন অধিনায়ক বাভুমা। ১৫ ওভার শেষে ৫ উইকেটে ৪৭ রান বাংলাদেশের।
দারুণ ওভারে মাত্র ১ রান দিলেন শামসি।
বাভুমাকে চার মারলেন আফিফ। বাংলাদেশ: ৫২/৫
শামসির বলে বিভ্রান্ত মাহমুদউল্লাহ। উইকেটকিপারও বল বুঝতে পারেননি। বাই থেকে ৪ রান পেল বাংলাদেশ।
২০ ওভার শেষে বাংলাদেশ: ৬৫/৫
প্রথম ৫ উইকেটে ৩৪ রান করেছে বাংলাদেশ। আফিফ ও মাহমুদউল্লাহর অসমাপ্ত ষষ্ঠ উইকেট জুটিতে এসেছে ৩৫ রান।
২২ ওভার শেষে বাংলাদেশ: ৫৯/৫।
বাভুমাকে স্কুপ করে চার মাহমুদউল্লাহর। ২৭তম বলে প্রথম বাউন্ডারি টি-টোয়েন্টি অধিনায়কের।
ওভারের শেষ বলে আরেকটি চার। বাংলাদেশ: ৭৭/৫।
কেশব মহারাজকে সুইপ করে চার মারলেন মাহমুদউল্লাহ।
২৫ ওভার শেষে বাংলাদেশ: ৮৫/৫।
বেঁচে গেলেন আফিফ। ব্যাটের ছোঁয়া নিয়ে বল পেছনে গিয়েছিল। কিন্তু স্লিপে কোনো ফিল্ডার না থাকায় চার রান পেয়ে গেছেন আফিফ।
অতীত অভিজ্ঞতা বলছিল লেগ স্পিনে অস্বস্তিতে ভোগেন মাহমুদউল্লাহ। সেই শামসির বলেই বিদায় নিয়েছেন মাহমুদউল্লাহ। লেগ স্লিপ রেখে বল করছিলেন শামসি। সেখানেই ক্যাচ দিয়েছেন মাহমুদউল্লাহ। ৪৪ বলে ২৫ রান তাঁর।
৬০ রানে থামল ষষ্ঠ উইকেট জুটি।
নেমেই চার মিরাজের। ওভারের বাকি চার বল থেকে এসেছে ২ রান। ২৮ ওভার শেষে বাংলাদেশ: ১০০/৬।
ঝুলিয়ে দিয়েছেন মহারাজ। আফিফও সেটা কাজে লাগিয়েছেন দৃষ্টিনন্দন এক শটে।
মহারাজের বলে ক্যাচ দিয়েছিলেন মিরাজ। কিন্তু স্লিপে থাকা ফিল্ডার আগেই মাটিতে পড়ে যাওয়ায় এ যাত্রা বেঁচে গেছেন মিরাজ।
বাকি ১৮ ওভারের কৌশল ঠিক করার সময় পাচ্ছে বাংলাদেশ। ৩২ ওভার শেষে বাংলাদেশের স্কোর: ১১০/৬।
তাব্রেইজ শামসির বোলিং কোটা শেষ হয়ে যাচ্ছে। বাঁহাতি রিস্ট স্পিনার বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের ভোগালেও মাত্র ১ উইকেট পেয়েছেন। ২৬ রানে ১ উইকেট নিয়ে স্পেল শেষ করলেন শামসি।
৩৪ ওভার শেষে বাংলাদেশ: ১১৩/৬।
মহারাজকে সুইপ করে ছক্কা মিরাজের। সে সঙ্গে নোবল। ফ্রি হিট পেয়েও কাজে লাগাতে পারেননি মিরাজ।
আবার ফ্রি হিট।
এবার ওয়াইড!
কী হচ্ছে?
মহারাজের ওভার থেকে এসেছে ১৩ রান।
৭৯ বলে পঞ্চাশ আফিফের। প্রতি আক্রমণ করে বাংলাদেশকে মহাবিপদ থেকে বাঁচিয়েছেন আফিফ। ৭ চারের এই ইনিংসে দেশের বাইরে এই প্রথম অর্ধশতক পেলেন আফিফ।
পঞ্চাশের পরই দারুণ এক চার আফিফের।
মাত্র ১ রান দিলেন বাভুমা। ওভারের শেষ বলে রান মিরাজের।
কখনো কাটার, কখনো স্টক বলে আফিফকে বিভ্রান্ত করছেন এনগিডি। ৪০তম ওভার থেকে মাত্র ২ রান এল। বাংলাদেশ: ১৪৬/৬।
৫.১ ওভার বল করে মাত্র ১৭ রান দিয়েছেন বাভুমা। উইকেট না পেলেও বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের উইকেটে আটকে রাখছেন দক্ষিণ আফ্রিকান অধিনায়ক।
আবার ক্যাচ ফেলেছেন মালান। মিরাজ তুলে মেরেছিলেন। কিন্তু ডিপ মিড উইকেটে ক্যাচ ফেলেছেন ইয়ানেমান মালান। ২১ রানে জীবন পেয়েছেন মিরাজ।
তাতেই দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সপ্তম উইকেট জুটিতে রেকর্ড হলো বাংলাদেশের। ২০০৭ বিশ্বকাপে আশরাফুল ও মাশরাফির ৫.১ ওভারে ৫৪ রানের জুটিকে টপকে গেলেন মালান-মিরাজ।
ওভারের শেষ বলে আবার ক্যাচ মিস। এবার নিজের বলে ক্যাচ ফেলেছেন বাভুমা। কঠিন সুযোগ, কিন্তু সুযোগ তো বটেই।
এক ওভারেই দুই ব্যাটুস্ম্যান বেঁচে যাওয়ার পর বাংলাদেশের স্কোর ১৫১/৬।
এই ওভার থেকে এসেছে ৪ রান।
শেষ বলে আফিফের চার। রাবাদার আর মাত্র ১ ওভার বাকি।
পারনেলের পর বাভুমাও চোট পেয়েছেন। ফলে শেষ দিকে এক ওভারের হিসেব মেলাতে ঝামেলা হবে স্বাগতিকদের।
মহারাজকে স্লগ করে ওভার শুরু করলেন মিরাজ। মহারাজের ওভার থেকে এসেছে ১০ রান। বাংলাদেশ: ১৮০/৬।
এই ওভারটা শেষ হলেই খোলা মনে আক্রমণে যেতে পারত বাংলাদেশ। রাবাদার ওভারটা শেষ হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করলেন না আফিফ। তৃতীয় বলটা তুলে মারতে গিয়ে আকাশে তুলে দিলেন। বল ৩০ গজ পার হয়নি। মিড উইকেটে ক্যাচ হয়েছেন বাভুমার।
স্পেলের ৩ বল বাকি থাকতে চতুর্থ উইকেট রাবাদার। ১০৭ বলে ৭২ রান করে বিদায় নিলেন আফিফ। ৮৬ রানে থেমেছে সপ্তম উইকেট জুটি।
রাবাদার শেষ ওভারটি পার করতে পারলেন না মিরাজ। তাসকিন প্রথম বলে প্রান্ত বদল করায় স্ট্রাইকে এসেছিলেন মিরাজ। শট চেক করতে গিয়েছিলেন, সেটাই মিড অফে চলে গেল। একটু আগে মিরাজের ক্যাচ ফেলা মালান ঝাঁপিয়ে ধরলেন সে বল। ৩৮ রানে বিদায় মিরাজের।
ওয়ানডেতে দ্বিতীয়বারের মতো ৫ উইকেট রাবাদার। ৩৯ রানে ৫ উইকেট রাবাদার। তাঁর প্রথম পাঁচ উইকেটও বাংলাদেশের বিপক্ষে। অভিষেকে বাংলাদেশের বিপক্ষেই ১৬ রানে ৬ উইকেট পেয়েছিলেন রাবাদা।
পারনেল চোট পাওয়ায় বাভুমা বল করছিলেন। পরে বাভুমাও চোট পেয়েছেন। তাই রাসি ফন ডার ডুসেনকে বল দেওয়া হয়েছে ৪৯তম ওভারে!
ডুসেনের হাতে বল দেখে ছক্কা মারতে চেয়েছিলেন শরীফুল। কিন্তু তাঁর চেষ্টা লং অন সীমানায় ধরা পড়েছে। ৮ বলে ২ রান করে ফিরেছেন শরীফুল। বাংলাদেশ ১৮৮/৯।
বাংলাদেশ ৯ উইকেটে ১৯৪ রান করতে পেরেছে। ৩৪ রানে ৫ উইকেট হারানোর পর এই রানকেই অনেক বলে মনে হতে পারে। মাহমুদউল্লাহর সঙ্গে ৬০ ও মিরাজের সঙ্গে ৮৬ রানের জুটিতে বাংলাদেশকে মহা বিপদ থেকে উদ্ধার করেছেন আফিফ।
কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ সময়ে ৭২ রান করা আফিফ ও ৩৮ রান করা মিরাজ মাত্র ৩ বলের মধ্যে বিদায় নিলে শেষ দিকে আবার বিপদে পড়ে বাংলাদেশ। শেষ ৫ ওভারে মাত্র ১৪ রান পেয়েছে বাংলাদেশ। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে রেকর্ড ৮৬ রানের জুটির দিনে তাই অনাকাঙ্ক্ষিত আরেকটি রেকর্ড হয়েছে।
২০১১ সালের এই প্রথম পুরো ৫০ ওভার খেলেও ২০০ রান করতে পারেনি বাংলাদেশ। সর্বশেষে যেবার এমন কিছু ঘটেছে, সে ম্যাচে হেরেছে বাংলাদেশ।
দ্বিতীয় ওভারে এসে সুযোগ তৈরি করেছেন তাসকিন আহমেদ। বাউন্সে ভড়কে গিয়েছিলেন কুইন্টন ডি কক, যদিও ক্যাচটা গেছে নোম্যানস ল্যান্ডেই। পরের বলে হয়েছিল এলবিডব্লুর আবেদন। আম্পায়ার মারাই এরাসমাস আউট দেননি, তামিম নিয়েছিলেন রিভিউ। বল ব্যাটে লাগেনি, তবে সেটি আসলে চিন্তার বিষয় ছিলও না। বল পড়েছে লেগ স্টাম্পের বেশ বাইরে, শুরুতেই রিভিউ হারিয়েছে বাংলাদেশ।
এর আগে প্রথম ওভারে ২ রান দিয়েছেন শরীফুল ইসলাম।
দ্বিতীয় বলটা অফ স্টাম্পের বাইরে একটু ফুলার লেংথে করেছিলেন শরীফুল, কাভারে চার মালানের। তার পরের বল শর্ট লেংথের, মালানের পুল। ক্যাচ উঠেছিল, কিন্তু ফাইন লেগে তাসকিনের সামনে তো পড়লই, দৌড়ে গিয়ে বাউন্ডারিও থামানো হলো না তাসকিনের।
দক্ষিণ আফ্রিকা ৩ ওভারে ১৩/০।
দুটি বলই শর্ট করেছেন তাসকিন, প্রথমটিতে জায়গায় দাঁড়িয়ে দারুণ স্লাইসে ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্টে চার ডি ককের, পরেরটিতে বিশাল ছক্কা! লং অন গ্যালারিতে এমন জায়গায় গিয়ে পড়ল যে, তামিম ইকবালকে গ্যালারিতে গিয়ে বল কুড়িয়ে আনতে হলো।
এরপর রাউন্ড দ্য উইকেটে এসেছিলেন তাসকিন, কিন্তু ওভারের শেষ বলে আবার চার মেরেছেন ডি কক।
দক্ষিণ আফ্রিকা ৪ ওভারে ২৭/০।
দুই পেসারকে সহজেই বাউন্ডারি-ছাড়া করছেন দুই দক্ষিণ আফ্রিকান উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান, সর্বশেষ দুই ওভারেই এসেছে পাঁচটি চার ও একটি ছক্কা। সে কারণেই কি না, এই ওভারে মিরাজকে বোলিংয়ে এনেছেন তামিম।
প্রথম তিন বলে রান হয়নি, চতুর্থ বলে সিঙ্গেলের পর পঞ্চম বলে দুই রান নিয়েছেন ডি কক-মালান।
দক্ষিণ আফ্রিকা ৫ ওভারে ৩০/০।
লক্ষ্য ১৯৫, ওভারপ্রতি ৪ রান করেও দরকার নেই। কিন্তু দক্ষিণ আফ্রিকা রান তুলছে ৬.৭১ করে। ৭ ওভার শেষে তাদের রান ৪৭/০।
ষষ্ঠ ওভারে শরীফুলের বলে দারুণ চার মেরেছেন মালান। সে ওভারে এসেছে ৬ রান। পরের ওভারে মিরাজের ওপর চড়াও হয়েছেন ডি কক। দ্বিতীয় বলে সুইপ করে চার, পরের বলে চোখধাঁধানো ইনসাইড-আউটে ছক্কা! এই ওভারে এসেছে ১১ রান।
অষ্টম ওভারে শরীফুলকে টানা তিন চার ডি ককের! এর মধ্যে প্রথম চারে দক্ষিণ আফ্রিকার ইনিংসে অর্ধশতকও হয়ে গেছে।
দ্বিতীয় বলটি শর্ট লেংথে করেছিলেন শরীফুল, স্কয়ারে চার ডি ককের। পরেরটিও শর্ট, এবার অফ স্টাম্পের বাইরে। স্লাইস করে আবার চার। পরের বলটা একটু সামনে পিচ করিয়েছেন শরীফুল, কিন্তু ডি ককের সামনে পাত্তা পেলে তো! একটু এগিয়ে এসে কাভারে চার ডি ককের!
আইপিএলে যাওয়ার আগে এই ম্যাচটাকে কি 'প্রস্তুতি' হিসেবে নিচ্ছেন ডি কক?
৮ ওভার শেষে দক্ষিণ আফ্রিকা ৬০/০, ডি কক ২৩ বলে ৪১।
বাংলাদেশ যেভাবেই ফিল্ডিং সাজাক, বোলাররা যে লেংথেই বোলিং করুন, ডি কক কোনো কিছুতেই বিচলিত হচ্ছেন না!
আগের ওভারে শরীফুলের ওপর ঝড় বইয়েছেন, মিরাজকেও ছাড় দিলেন না। প্রথম দুই বলেই চার! প্রথমটিতে অফ স্টাম্পের বাইরের বল টেনে এনে সুইপ করে চার। দ্বিতীয়টিতে স্টাম্পের ওপর বল রেখেছিলেন মিরাজ, ডাউন দ্য উইকেটে এসে লং অনে চার ডি ককের।
তৃতীয় বলে সিঙ্গেল নিয়ে তাঁর ৫০ হয়ে গেল। মাত্র ২৬ বলে ৮ চার আর ২ ছক্কায়!
৯ ওভারে ৭০/০ দক্ষিণ আফ্রিকা।
আগের ৯ ওভারে শরীফুল, মিরাজ, তাসকিনদের তুলোধুনো করেছেন ডি কক। মালান মাঝে মধ্যে এক-দুটি করে চার মারছেন, যদিও ডি ককের কারণে সেটি এখন মনেই থাকছে না! ডি কককে থামাতেই দশম ওভারে মোস্তাফিজকে এনেছেন তামিম।
ওভারে একটু ঝড় থেকে মুক্তি পেল বাংলাদেশ। দুটি সিঙ্গেল এসেছে ওভারে। ১০ ওভারে দক্ষিণ আফ্রিকার রান ৭২/০।
মিরাজের ওভার। তৃতীয় বলে মালানের বিরুদ্ধে এলবিডব্লুর আবেদন। মিরাজ আত্মবিশ্বাসী। সুইপ করে ছক্কা মারতে চেয়েছিলেন মালান, বল লেগেছে প্যাডে। আম্পায়ার আউটের আবেদনে সাড়া না দেওয়ায় সঙ্গে সঙ্গেই অধিনায়ককে রিভিউ নিতে পরামর্শ দিয়েছেন মিরাজ। কিন্তু রিপ্লে দেখাল, বল ব্যাটসম্যানের পায়ে লাগার সময়ে স্টাম্পের বাইরেই ছিল, অর্থাৎ ইমপ্যাক্ট - আউটসাইড স্টাম্প।
মজার ব্যাপার, রিভিউর সময়েই প্যাভিলিয়নের দিকে হাঁটতে শুরু করেছিলেন মালান। রিভিউতে তিনি আউট নন - সিদ্ধান্ত আসার পর ডি কক তাঁকে ডেকে ফেরত এনেছেন।
বাংলাদেশের দুর্ভাগ্য সেখানেই শেষ হয়নি। ওভারের শেষ বলে ডি ককের ক্যাচ ধরতে পারেননি মুশফিক! ডি ককের! বল ব্যাটের কানায় লেগে উইকেটের পেছনে দুই রান। ডি কক আউট হতে পারতেন ৩১ বলে ৫২ রানে।
৪ রান এসেছে ওভারে। দক্ষিণ আফ্রিকা ১১ ওভারে ৭৬/০।
ডি কক ফিরলে হয়তো বেশি খুশি হতো বাংলাদেশ, অবশ্য উইকেটই যেখানে পড়ছিল না, সেখানে ডি কক কি আর মালানই কি!
১৩তম ওভারের তৃতীয় বলে মালানকেই ফিরিয়েছেন মিরাজ। ৮৬ রানে ভাঙল দক্ষিণ আফ্রিকার উদ্বোধনী জুটি। পরের বলেই উইকেট পড়তে পারত আরেকটি। নতুন ব্যাটসম্যান ভেরেইনা শর্ট মিড অনে ক্যাচ দিয়েছিলেন, কিন্তু ফিল্ডারের একটু সামনেই বল পড়েছে।
আগের ওভারে মোস্তাফিজকে ডি ককের একটি চারসহ ৬ রান এসেছে, এই ওভারের প্রথম বলেও মিরাজকে ফ্লিক করে চার মেরেছিলেন মালান। ওই ৪ রানই এসেছে ওভারে।
১৩ ওভারে ৮৬/১ দক্ষিণ আফ্রিকা।
প্রথম বলে ডি ককের এক রান। এরপর সিলি পয়েন্ট, শর্ট মিড-অফ, গালিতে ফিল্ডার রেখে নতুন ব্যাটসম্যান ভেরাইনাকে বল করেছেন সাকিব। কিছুটা অস্বস্তিতেই ছিলেন ভেরাইনা। শেষ বলে এক রান নিয়েছেন।
দক্ষিণ আফ্রিকা ১৪ ওভারে ৮৮/১।
ঝড়ের গতিবেগ কি একটু কমল? তা-ই মনে হতে পারে। ইনিংসের প্রথম ৫০ বলেই ১১টি চার ও ২টি ছক্কা মেরেছে দক্ষিণ আফ্রিকা, কিন্তু ১৫ ওভার শেষে পরিসংখ্যানটাতে চারের ঘরে শুধু আর ২ বেড়েছে।
ফিফটির পর ডি কক সেভাবে আর স্ট্রাইক পাননি, যখন পেয়েছেন, তখন সেভাবে ঝড় তুলতে পারেননি আগের মতো। এর মধ্যে মালানও ফিরে যাওয়ায় ঝড়ের গতি কিছুটা কমেছে।
তবে ১৫তম ওভারের মিরাজের ওভারে এক-দুইয়েই ৬ রান এসেছে।
উইকেটটা যতটা না সাকিবের, তার চেয়েও বেশি বুঝি আফিফের! ডিপ মিডউইকেটে সীমানায় কী অসাধারণ ক্যাচই না ধরলেন আফিফ! প্রথম ওয়ানডেতে তামিম যেমন ক্যাচ নিয়েছিলেন ইয়ানসেনের, সেটিরই কপি-পেস্ট।
স্লগ সুইপে ছক্কা মারতে চেয়েছিলেন ডি কক, বাউন্ডারিতে আফিফ যখন ক্যাচটা ধরলেন প্রথম দফায়, বাউন্ডারির বাইরেই পা পড়তে যাচ্ছিল তাঁর। বল ছেড়ে দিয়ে বাউন্ডারির বাইরে এক পা ফেললেন আফিফ। আবার লাফিয়ে ক্যাচটা ধরেই বাউন্ডারির ভেতরে চলে এলেন।
৪১ বলে ৯ চার ও ২ ছক্কায় ৬২ রান করেছেন ডি কক।
কিন্তু পরের বলেই দারুণ ফ্লিকে চার ভেরেইনার। ওভারে ৫ রান, ১৬ ওভারে ৯৯/২ দক্ষিণ আফ্রিকা। নতুন ব্যাটসম্যান বাভুমা, আঙুলে চোটের কারণে একটু পরে নেমেছেন তিনি।
দুই নতুন ব্যাটসম্যান ক্রিজে। ডি কক আউট হয়ে গেছেন। লক্ষ্য ছোট বলে হয়তো জয় নিয়ে শঙ্কা থাকতে পারে, তবে এখান থেকে ম্যাচে কিছুটা দাপট ফিরবে বাংলাদেশের?
দুজনই নতুন ব্যাটসম্যান বলেই হয়তো দুজনের জন্যই শর্ট লেগে ফিল্ডার রেখে বল করেছেন মিরাজ। তৃতীয় বলে বাভুমার ফ্লিকে সেখানে ক্যাচ প্রায় উঠেই গিয়েছিল! ওভারে ২টি সিঙ্গেল এসেছে, এর প্রথমটিতে শতরান হয়ে গেছে দক্ষিণ আফ্রিকার।
সাকিব বল করেছেন সিলি মিড অফে ফিল্ডার রেখে। উইকেট নেওয়ার লক্ষ্যেই বল করছে বাংলাদেশ। ওভারে ৩ রান এসেছে।
১৮ ওভারে ১০৪/২ দক্ষিণ আফ্রিকা।
মিরাজের ওভারে ৪ রান। সর্বশেষ ৩ ওভারে ৭ রান পেয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকা। অবশ্য এ নিয়ে তারা মোটেও ভাবছে বলে মনে হয় না। একে তো লক্ষ্য মাত্র ১৯৫, তারওপর ডি কক আর মালান এমন ঝোড়ো শুরু এনে দিয়েছেন যে এখন কিছু ওভারে রান কম এলেও ঝামেলায় পড়বে না দক্ষিণ আফ্রিকা।
দুই স্পিনার সাকিব ও মিরাজ দক্ষিণ আফ্রিকার নতুন দুই ব্যাটসম্যানকে চাপে রাখছিলেন। আশপাশে ফিল্ডার রেখে ব্যাটসম্যানদের অস্বস্তিতেও ফেলছিলেন। এর মধ্যে তাসকিনকে কী বুঝে নিয়ে এসেছেন তামিম, কে জানে! মিরাজের আট ওভার হয়ে গেছে, সাকিবের মাত্র ৩ ওভার হয়েছে। হয়তো সাকিবকে অন্য প্রান্ত থেকেই আনার পরিকল্পনা।
কিন্তু তাসকিনকে আনার পরিকল্পনা কাজে দিল না। ওভারের দ্বিতীয় বলে ক্যাচের আবেদন হয়েছিল, ক্যাচ ধরে উইকেটকিপার মুশফিক বোঝালেন তিনি একটা আওয়াজ শুনতে পেয়েছেন। কিন্তু বাংলাদেশের রিভিউ যে বাকি নেই! তৃতীয় বলে ছক্কা মারলেন বাভুমা।
ওভারে ৮ রান। ২০ ওভারে ১১৬/২ দক্ষিণ আফ্রিকা।
রাউন্ড দ্য উইকেটে এসে বোলিং করলেন সাকিব। প্রথম তিন বলেই দুটি সিঙ্গেলের পর একটি ডাবল এসেছে, পরের তিন বলে রান হয়নি।
দক্ষিণ আফ্রিকা ২১ ওভারে ১২০/২।
তৃতীয় বলে চার, শেষ দুই বলে দুই ছক্কা! ভেরেইনাকে এরপর থেকে শর্ট লেংথে বল করতে দুবার ভাববেন তাসকিন।
তৃতীয় বলে শর্ট বলে পুল করে চার ভেরেইনার, এক বল বিরতি দিয়ে আবারও শর্ট বলে পুল। এবার স্কয়ার লেগে ছক্কা! পরের বল আবার শর্ট লেংথের, এবার ব্যাটটাকে এত জোরে ঘুরিয়ে পুল করলেন ভেরেইনা যে, বল বুলেটের গতিতে চলে গেল সীমানার বাইরে - ছক্কা।
১৬ রান ওভারে। দক্ষিণ আফ্রিকা ২২ ওভারে ১৩৬/২। তাসকিনের দ্বিতীয় স্পেলে দুই ওভারে এল ২৪ রান!
নিজের নবম ওভার করতে এলেন মিরাজ। শেষ তিন বলে দুটি সিঙ্গেল ও একটি ডাবলে ৪ রান। দক্ষিণ আফ্রিকা ১৪০/২।
আর ২৭ ওভারে ৫৫ রান দরকার প্রোটিয়াদের। কঠিন চ্যালেঞ্জ বটে!
আগের ওভারে সাকিব দিয়েছেন ৩ রান। এই ওভারে মিরাজের দ্বিতীয় বলে বাভুমার সুইপের পর লং লেগে মিসফিল্ডিংয়ে হলো চার। পরের বলে অবশ্য ডিপ স্কয়ার লেগে উল্টো, বাউন্ডারিতে দারুণ ফিল্ডিং আফিফের, চারের বদলে হলো দুই রান। ওভারে এসেছে ৮ রান।
আর ২৫ ওভারে ৪৪ রান করতে হবে দক্ষিণ আফ্রিকাকে।
ধারাভাষ্যকার হিসেবে দক্ষিণ আফ্রিকার বোলিং–দাপট আর বাংলাদেশি ব্যাটসম্যানদের করুণ অবস্থার ব্যাখ্যা দিচ্ছিলেন নিল ম্যাকেঞ্জি। সাবেক এই প্রোটিয়া ব্যাটসম্যান দুই বছর আগেই বাংলাদেশ দলের ব্যাটিং কোচ ছিলেন। সাকিব-তামিমদের ব্যাটিং সম্পর্কে খুব ভালোই জানাশোনা তাঁর।
তৃতীয় ওভার করতে এসেছিলেন মোস্তাফিজুর রহমান। প্রথম ৪ বলে একটি ওয়াইডে শুধু রান দিলেও পঞ্চম বলে টেম্বা বাভুমা মেরেছেন চার। সিরিজে সমতা আনতে এখন ২৩ ওভারে দক্ষিণ আফ্রিকার প্রয়োজন ৩৩ রান।
মোস্তাফিজের মতো সাকিবকেও ওভারের পঞ্চম বলে চার মেরেছেন বাভুমা। স্লগ সুইপে কাউ কর্নার দিয়ে পেয়েছেন নিজের চতুর্থ বাউন্ডারি। সাকিবের করা ২৮তম ওভারে এসেছে ৮ রান।
প্রথমবারের মতো আফিফ হোসেনকে বোলিংয়ে এনেছেন তামিম ইকবাল। ব্যাটিংয়ে লড়াইয়ের চেষ্টা করেছিলেন, ফিল্ডিংয়ে এরপর নিয়েছেন দারুণ এক ক্যাচ। বাংলাদেশকে ম্যাচে ফেরাতে অবশ্য সে সব পারফরম্যান্সকেও ছাপিয়ে যেতে হবে আফিফকে।
আবেদন ছিল স্টাম্পিংয়ের। তবে টিভি আম্পায়ার প্রটোকল অনুযায়ী দেখলেন কট-বিহাইন্ডও। আল্ট্রা-এজে কিছু দেখা যায়নি, কাইল ভেরেইনার পা-ও ছিল পপিং ক্রিজের ভেতরেই। ব্রেকথ্রু এনে দিতে পারেননি আফিফ।
৩০ ওভার শেষে দক্ষিণ আফ্রিকার স্কোর ২ উইকেটে ১৭৩ রান। এ সময়ে বাংলাদেশ তুলেছিল ১০৮ রান, হারিয়ে ফেলেছিল ৬ উইকেট। জোহানেসবার্গে দাপুটে বোলিং পারফরম্যান্সটা ব্যাটিংয়েও টেনে এনেছে দক্ষিণ আফ্রিকা।
ঝুলিয়ে দিয়েছিলেন, স্লগ সুইপ করেছিলেন বাভুমা। ডিপ স্কয়ার লেগে ভালো ক্যাচ নিয়েছেন শরীফুল ইসলাম। বাভুমার উইকেটে ভাঙল ১০১ বলে ৮২ রানের জুটি। ওয়ানডেতে আফিফের এটি তৃতীয় উইকেট। দক্ষিণ আফ্রিকা অধিনায়ক ফিরেছেন ৫২ বলে ৩৭ রান করে। ১৭.৫ ওভারে স্বাগতিকদের প্রয়োজন ১৯ রান।
প্রথম ওয়ানডেতে উইকেটকিপিংয়ের দায়িত্ব পালন করেছিলেন কুইন্টন ডি ককের অনুপস্থিতিতে। আজ ডি কক ফিরেছেন, ব্যাটিংয়ে ৪১ বলে ৬২ রানের ইনিংস। তবে ব্যাটিংয়ে ছাপ রাখলেন ভেরেইনাও। আফিফকে চার মেরে ওয়ানডে ক্যারিয়ারের চতুর্থ অর্ধশতক পেলেন এ ডানহাতি। ৬২ বলে ৫০-এ গেলেন তিনি।
সপ্তম বোলার হিসেবে এলেন মাহমুদউল্লাহ। তাঁর প্রথম ওভারে এসেছে তিনটি সিঙ্গেল। দক্ষিণ আফ্রকার প্রয়োজন ৮ রান। বাকি… ১৪ ওভার!
মাহমুদউল্লাহকে জায়গা বানিয়ে এক্সট্রা কাভার দিয়ে নিজের প্রথম চারটি মারলেন রাসি ফন ডার ডুসেন। সেঞ্চুরিয়নে শেষ করে আসতে পারেননি, জোহানেসবার্গে দক্ষিণ আফ্রিকার জয় নিশ্চিত হলো তাঁর ব্যাটেই। ৭৬ বল বাকি থাকতে ৭ উইকেটের বড় জয়ে ৩ ম্যাচ সিরিজে সমতা ফেরাল দক্ষিণ আফ্রিকা।
কাগিসো রাবাদার তোপে ৯ উইকেটে ১৯৪ রানেই থেমেছিল বাংলাদেশ, মূল ক্ষতিটাও হয়েছিল সেখানেই। এ ম্যাচ দিয়ে একাদশে ফেরা কুইন্টন ডি ককের ঝোড়ো ব্যাটিং এরপর ছিটকে দিয়েছে বাংলাদেশকে। ইয়ানেমান ম্যালানের সঙ্গে ডি ককের ৭৫ বলে ৮৬ রানের জুটিতে অনেকটাই এগিয়ে গেছে দক্ষিণ আফ্রিকা। ৪১ বলে ৬২ রান করেছেন ডি কক।
এরপর অর্ধশতক পেয়েছেন কাইল ভেরেইনা। ৭৭ বলে ৫৮ রান করে অপরাজিত ছিলেন তিনি।
বাংলাদেশ অধিনায়ক তামিম ইকবাল বলছেন, ‘এমন উইকেট আশা করিনি। অসম বাউন্স থাকলে কঠিন। তবে আমাদের আরেকটু ভালো ব্যাটিং করা উচিৎ ছিল। ২৩০-২৪০ করা উচিৎ ছিল। দ্বিতীয় ইনিংসের দিকেও তাকালে দেখবেন, বাউন্সে ওঠানামা ছিল। টসে যেমন বলেছিলাম, এখানে তেমন অভিজ্ঞতা নেই আমাদের খেলার। আমরা পরিসংখ্যানের ওপর নির্ভর করেছি।
‘আমরা ভুল করেছি অবশ্যই। আমরা সবাই জানি, তারা ভালোভাবে ফিরে আসবে। তাদেরকে (পেসারদের) ভালোভাবে সামলানো উচিৎ ছিল।‘
টেম্বা বাভুমা বলছেন, ‘বোলাররা দারুণ কাজ করেছে, আমাদেরকে চাপে ফেলতে দেয়নি। নতুন বলে (ব্যাটিং) কঠিন হতে পারত। তবে কুইনি (ডি কক) ভিন্ন কিছু ভেবেছে।’
৩৯ রানে ৫ উইকেট নিয়ে ম্যাচসেরা হয়েছেন কাগিসো রাবাদা।
দক্ষিণ আফ্রিকার ড্রেসিংরুমে তখন থমথমে অবস্থা। থাকবেই না কেন! রিকি পন্টিংয়ের অস্ট্রেলিয়া ৫০ ওভারে ৪ উইকেট হারিয়ে রান করেছে ৪৩৪! এমন সময় জ্যাক ক্যালিস এসে বললেন, ‘মনে হয় ওরা ২০ রান কম করেছে।’ কথাটা শুনে দক্ষিণ আফ্রিকা দলের ক্রিকেটাররা কিছুক্ষণ একজন আরেকজনের দিকে তাকিয়ে রইলেন। এরপর একসঙ্গে অট্টহাসি। দক্ষিণ আফ্রিকা শেষ পর্যন্ত সেই রান তাড়া করে জিতেছে ১ বল বাকি থাকতে।