অবশেষে খেলাসূচির নির্ধারিত দিনে অস্ট্রেলিয়া–বাংলাদেশ খেলাটি হয়ে গেল। বাইচান্স যদি খারাপ খেলে তো বাংলাদেশ জিতবে, এমন একটা দুরাশা মনে বাসা বেঁধেছিল। সম্ভাব্য ফাইনালিস্ট অস্ট্রেলিয়ানরা তাদের আরাধ্য কাজটি করে ফেলেছে অবলীলায়। আর জয়ের পয়েন্টটি থেকে আমরা বঞ্চিত রয়েই গেছি।
এসব খবর এই লেখার আগেই সবার জানা হয়ে গেছে। তবু লিখতে হবেই বলে আবার লিখলাম। তবে আমাদের দল যে খারাপ শুরু করেছিল, এমনটা বলা যাবে না। সৌম্য এবং তামিমের ব্যাটে ধার আসছিল যথেষ্টই। কিন্তু বিশাল রানকে তাড়া করার তাগিদেই হবে হয়তো দ্রুত রান নেওয়ার চেষ্টা করতে গিয়ে সৌম্যকে রানআউটের শিকার হতে হয়েছে। বলা যায়, এই রানআউটটাই ‘কুফা’ হয়ে দলকে বেকায়দায় ফেলেছে প্রথমেই।
তারপরও অন্য দিনের মতোই সাকিব এবং তামিম বিপর্যয়ে ঠেকা দিয়েছে বেশ কিছুক্ষণ। রানও পাচ্ছিল। কিন্তু প্রতিদিন তো সাকিবের পক্ষে দলকে দারুণভাবে এগিয়ে দেওয়ার দিন হবে না! তবু পঞ্চাশের কাছাকাছি (৪১) নিজেকে পৌঁছে দিয়েছে, সেটাও কম প্রাপ্তি নয়। তামিম ষাটের (৬২) ঘর পর্যন্ত গিয়ে প্যাভিলিয়নে ফিরলে চিরকালের জুটি মুশফিক এবং মাহমুদউল্লাহ গ্যালারি কাঁপানো খেলা দিয়ে ৩০০ পার করলে জেতার চান্স হলেও হতে পারে, এমন একটা দুরাশা খানিকটা হলেও ভাবনায় এসে গিয়েছিল প্রায়। তবে হেরে গেলেও মুশফিকের সেঞ্চুরি দলকে উদ্দীপ্ত করার মতো হয়েছে। মুশফিক পুনরায় স্বরূপে ফিরতে পেরেছে দেখে পরবর্তী খেলাগুলোতে ভালো ফল পাওয়ার আশা করাই যায়। মাহমুদউল্লাহর ব্যাপারেও একই কথা খাটে।
যাহোক, অস্ট্রেলিয়ার ‘হেভিওয়েট পারফরম্যান্স’–এর মূল ভাগীদার আসলে টসে জেতা এবং মাঠের অবস্থা দেখে, পিচের ধরন দেখে প্রথমে ব্যাটিং নেওয়া। অদ্ভুত এক মাঠ বটে। কোথাও চিপে যাওয়া, কোথাও প্রশস্ত, আবার কোথাও–বা মাত্র ২৫ মিটার দূরত্বের। ওয়ার্নাররা সেটাকে কাজে লাগিয়েছে। আমাদের বোলিং ওই পিচে খুব ভালো হয়নি। মজা হলো যে রেগুলার বোলারদের মধ্যে শুধু মোস্তাফিজুর মোটামুটি সফল হলেও সৌম্য দারুণ সব উইকেট নেওয়ার সফলতা পেয়েছে।
তবে খেলার আগে আমিসহ অনেকেই আশা করেছিলাম, এবার অন্তত বৃষ্টিটা হোক। কিন্তু একবার কাণ্ডটি ঘটিয়েও টাইগারদের হারানোর জন্য আকাশ পরিষ্কার করে দিয়ে চলেও গিয়েছিল অস্ট্রেলিয়ার পক্ষ নিয়ে।
তো অস্ট্রেলিয়ার প্রথম ব্যাট নিতে দেখে প্রচলিত বাংলা বচনের প্রথম লাইনটিকে সান্ত্বনা হিসেবে ধরেছিলাম, ‘আগে গেলে বাঘে খায়।’ কিন্তু টাইগাররা তা করেনি।