>ক্রীড়াবিদদের কুসংস্কারে বিশ্বাস করা নতুন কিছু না। ক্রিকেটাররাও কুসংস্কারে বিশ্বাস করেন। চলুন, বিখ্যাত কিছু ক্রিকেটারের কুসংস্কার সম্পর্কে জেনে আসা যাক
ফুটবলারদের সংস্কার নিয়ে হরহামেশাই শোনা যায়, ক্রিকেটাররাও এর বাইরে নন। ক্রিকেটারদেরও সংস্কার থাকে। কুসংস্কার মানেই আজগুবি কিছু, অদ্ভুত হলেও সত্যি, স্টিভ ওয়াহ থেকে শুরু করে শচীন টেন্ডুলকারের মতো খেলোয়াদেরও সংস্কার থাকে। তাঁদের ধারণা ছিল, এতে আত্মবিশ্বাস বাড়ে।
শচীন টেন্ডুলকার
কেউ কেউ শচীন টেন্ডুলকারকে ক্রিকেটের ‘ঈশ্বর’ বলে মানেন, কেউ আবার তা মানতে নারাজ। তবে সেরাদের তালিকায় তিনি যে ওপরের দিকেই থাকবেন, এ ব্যাপারে মোটামুটি সবাই একমত। মজার ব্যাপার হলো, টেন্ডুলকারও কুসংস্কারে বিশ্বাসী ছিলেন। ব্যাটিংয়ে নামার আগে ভারতীয় এ কিংবদন্তি বাঁ পায়ের প্যাডটি আগে পরতেন। তাঁর ধারণা ছিল, বাঁ প্যাড আগে পরাটা তাঁর ভাগ্যের জন্য সহায়ক। এ তো গেল ব্যাটিং প্যাড পরার কথা, ব্যাটের ক্ষেত্রেও ভারতীয় এ ওপেনার অনেক কিছুতে বিশ্বাসী ছিলেন। যেমন ধরুন, ২০১১ বিশ্বকাপের আগে তিনি তাঁর ‘লাকি’ ব্যাটটি ঠিক করে তারপর খেলতে নেমেছিলেন। নিজের শেষ বিশ্বকাপ বলে কথা, শেষটা রাঙাতে তাই সবকিছুই করেছিলেন এই ওপেনার।
সনাথ জয়াসুরিয়া
দ্রুততম অর্ধশতক তোলার তালিকায় এখনো দুইয়েই আছেন শ্রীলঙ্কার কিংবদন্তি ব্যাটসম্যান সনাথ জয়াসুরিয়া। শুধু অর্ধশতকই না, ৪৮ বলে ১০০ করারও রেকর্ড রয়েছে এই ব্যাটসম্যানের। মূলত মারকুটে ব্যাটসম্যান হিসেবেই পরিচিত । মজার ব্যাপার হলো, শ্রীলঙ্কান এই ওপেনার প্রতি বলের আগেই নিজের হেলমেট, গ্লাভস, প্যাড, পকেট একবার দেখে নিতেন। মাঝেমধ্যে দেখা গেছে, বোলার রান আপ শুরু করবেন এমন সময় তাঁকে হাতের ইশারায় থামিয়ে জয়াসুরিয়া সবকিছু ঠিক আছে কি না দেখে নিচ্ছেন।
মাইকেল ক্লার্ক
অস্ট্রেলিয়া ক্রিকেটের সফল অধিনায়কদের তালিকা করলে মাইকেল ক্লার্কের নাম উঠে আসবেই। অস্ট্রেলিয়ার হয়ে জিতেছেন ক্রিকেট বিশ্বকাপ। অধিনায়কত্ব ছাড়াও ব্যক্তিগত পারফরম্যান্সও ছিল নজর কাড়া। তবে অস্ট্রেলিয়ার বিশ্বকাপজয়ী এ অধিনায়কের মতে, তাঁর ভালো পারফরম্যান্সের একটা অন্যতম কারণ স্পিকারে জোরে গান শোনা। এক সাক্ষাৎকারে ক্লার্ক নিজেই জানিয়েছেন, ম্যাচ শুরুর আগে তিনি গান শুনতে শুনতে মাঠে যেতেন। অনেকের কাছে ব্যাপারটা নিছক কুসংস্কার মনে হলেও তাঁকে নাকি এটা খেলায় মনোযোগী হতে সাহায্য করত।
মাহেলা জয়াবর্ধনে
ব্যাটে চুমু? আর এটি করলেই ভালো ব্যাটিং করা যায়? আপনি আমি না মানলেও শ্রীলঙ্কান সাবেক অধিনায়ক মাহেলা জয়াবর্ধনে অবশ্য এটাই বিশ্বাস করতেন। শ্রীলঙ্কার ক্রিকেট ইতিহাসে সেরা ব্যাটসম্যানদের তালিকায় থাকবেন জয়াবর্ধনে। শ্রীলঙ্কাকে ব্যাট হাতে একাই কত ম্যাচ জিতিয়েছেন, তা অনেকেরই জানা। শুধু ব্যাটিংটাই নয়, অধিনায়কত্বেও পটু ছিলেন এই ব্যাটসম্যান। বিশ্বকাপ জিততে না পারলেও ২০১১ বিশ্বকাপে দলকে ফাইনাল অবধি টেনে তুলেছিলেন তিনি। অবশ্য লঙ্কান ক্রিকেটে শুধু জয়াবর্ধনে নন, সাবেক ওপেনার আভিষ্কা গুণাবর্ধনেও ব্যাটে চুমু খেয়ে স্ট্যান্স নিতেন।
স্টিভ ওয়াহ
ক্রিকেট ইতিহাসের সবচেয়ে সফল অধিনায়কদের তালিকায় নিঃসন্দেহে অস্ট্রেলিয়ার কিংবদন্তি ক্রিকেটার স্টিভ ওয়াহর নাম রাখতেই হবে। অস্ট্রেলিয়াকে জিতিয়েছেন ১৯৯৯–এর বিশ্বকাপ। টেস্ট অধিনায়ক হিসেবেই তাঁর মূল খ্যাতি। তাঁর অধিনায়কত্বে ৭২ শতাংশ ম্যাচই জিতেছিল অস্ট্রেলিয়া। ওয়াহর এ সফলতার পেছনে রয়েছে নাকি একটি লাল রুমাল! মাঠে নামার সময় অস্ট্রেলিয়ান এই কিংবদন্তি পকেটে সব সময় একটি লাল রুমাল রাখতেন। রুমালটি তাঁকে তাঁর দাদু দিয়েছিলেন। তাঁর মতে, এই রুমালই সৌভাগ্যের প্রসূতি।
মহেন্দ্র সিং ধোনি
এক যুগের বেশি সময় কাটিয়ে দিলেন ক্রিকেটে, এখন তাঁর কেবল বিদায় নেওয়ার লগ্ন। ক্যারিয়ারের শেষ বিশ্বকাপটি খেলতে এখন ইংল্যান্ডে রয়েছেন ভারতের সাবেক অধিনায়ক মহেন্দ্র সিং ধোনি। ২৮ বছর পর ভারতকে ২০১১ সালে বিশ্বকাপ ক্রিকেট জেতানো সাবেক এ অধিনায়ক মনে করেন, তাঁর ক্যারিয়ারের সব সফলতার পেছনে রয়েছে সংখ্যা! ক্যারিয়ারের শুরু থেকেই ৭ নম্বর জার্সি পরে খেলছেন ধোনি। তাঁর জন্মতারিখ ৭ জুলাই। ভারতীয় এ ক্রিকেটার মনে করেন, ৭ সংখ্যাটা তাঁর জন্য সৌভাগ্য বয়ে এনেছে।