জন্মদিনে ১০ হাজার শিশুর সুপেয় পানির ব্যবস্থা রায়নার

জন্মদিনে দারুণ এক পদক্ষেপ নিয়েছেন রায়না।
ছবি: টুইটার

আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসর নিয়ে ফেলেছেন সুরেশ রায়না। মহেন্দ্র সিং ধোনির অবসরের ঘোষণা পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই যেন আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের প্রতি আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছেন অথবা ভারতীয় দলে নিজের সুযোগ পাওয়ার সম্ভাবনা আর দেখতে পাচ্ছেন না বলেই এমন সিদ্ধান্ত। বয়স এখনো ৩৪ হয়নি, তার আগেই এমন সিদ্ধান্ত না নিতে তাঁকে অনুরোধ করেছেন স্বয়ং ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। কিন্তু এখন পর্যন্ত সে সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসার ইঙ্গিত দেননি রায়না।

অবসরের সিদ্ধান্তের ব্যাপারে মোদির অনুরোধ এখনো গ্রহণ না করলেও প্রধানমন্ত্রীর ‘স্বচ্ছ ভারত’ প্রকল্পের অংশ হয়েছেন রায়না। এরই মধ্যে জনহিতকর বেশ কিছু প্রকল্প হাতে নিয়েছেন। ২৭ নভেম্বর তাঁর ৩৪তম জন্মদিন। আর জন্মদিন উপলক্ষে উত্তর প্রদেশ, জম্মু ও রাজধানীর আশপাশের কিছু অঞ্চলের মোট ৩৪টি সরকারি বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সুপেয় পানি ও স্বাস্থ্যকর পয়োনিষ্কাশন নিশ্চিত করার ব্যবস্থা করছেন রায়না। এতে উপকৃত হবে প্রায় ১০ হাজার শিক্ষার্থী।

পরিবারকে সঙ্গে নিয়ে নিজের প্রকল্প উদ্বোধন করছেন রায়না।

নিজের মেয়ে গ্রাসিয়ার নামে একটি এনজিও খুলেছেন রায়না। গ্রাসিয়া রায়না ফাউন্ডেশন নামের এই এনজিওর মাধ্যমেই ১০ হাজার শিক্ষার্থীর স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে যাচ্ছেন এই বাঁহাতি ব্যাটসম্যান। স্ত্রী প্রিয়াঙ্কাকে নিয়ে জন্মদিনের সপ্তাহটা এ–সংক্রান্ত বিভিন্ন কাজ দিয়েই শুরু করেছেন রায়না। এর মধ্যে খাওয়ার পানির উন্নত ব্যবস্থা, ছেলে ও মেয়ে শিক্ষার্থীর জন্য আলাদা টয়লেট, হাত ধোয়ার ব্যবস্থা, খাওয়ার পাত্র ধোয়ার আলাদা স্থান ও আধুনিক ক্লাসরুমের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। ‘যুব আনস্টপেবল’ নামের আরেকটি এনজিওর সঙ্গে যুক্ত হয়ে বেশ কয়েকটি বিদ্যালয়ে এর মধ্যেই কাজ শুরু করে দিয়েছেন তাঁরা।

এ ছাড়া ৫০০ দরিদ্র মায়ের জন্য খাবারের ব্যবস্থা করেছেন রায়নারা। এ ব্যাপারে এই তারকা ক্রিকেটার বলেছেন, ‘এমন এক উদ্যোগ দিয়ে আমার ৩৪তম জন্মদিন পালন করতে পারাটা অসম্ভব আনন্দ এনে দিচ্ছে। প্রতিটি শিশু মানসম্পন্ন শিক্ষা পাওয়ার অধিকার রাখে। আর নিরাপদ খাওয়ার পানি ও পরিষ্কার পয়োনিষ্কাশনব্যবস্থা এর মধ্যেই পড়ে। আশা করি, যুব আনস্টপেবলের সঙ্গে যুক্ত হয়ে গ্রাসিয়া রানা ফাউন্ডেশন এ ব্যাপারে অবদান রাখতে পারবে।’

ছেলে রিও রায়নার সঙ্গে সুরেশ।

শুধু স্বাস্থ্যকর পয়োনিষ্কাশন বা পানির ব্যবস্থা করেই থামবে না রায়নার ফাউন্ডেশন। বছরজুড়ে চলা প্রকল্পের অংশ হিসেবে এ সময় ৩৪টি স্কুলেই বয়ঃসন্ধি সময়টার স্বাস্থ্যবিধি ও এ সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি নিয়ে কাজ করবে তাঁরা। রায়নার চোখে, ‘উন্নত ব্যবস্থার ফলে হাজারো শিশুর উপকার হবে, এটা দেখে খুবই তৃপ্তি পাচ্ছি। দারুণভাবে সবকিছুর শুরু হয়েছে। ভবিষ্যতে আরও অনেক বিদ্যালয়কে এভাবে বদলে দেওয়ার অপেক্ষায় আছি। এর চেয়ে ভালো উপায়ে আমার জন্মদিন উদযাপন করতে পারতাম না। মন ভরে যাওয়ার মতো এক অভিজ্ঞতা এটি।’