যেভাবে ম্যাচ জিতিয়েছেন তাতে মাঠ ছাড়ার সময় তাঁরই নেতৃত্ব দেওয়ার কথা।
যেভাবে ম্যাচ জিতিয়েছেন তাতে মাঠ ছাড়ার সময় তাঁরই নেতৃত্ব দেওয়ার কথা।

চার বলে চার উইকেট আফ্রিদির

টি-টোয়েন্টির সেরা সব তারকারা এখন সংযুক্ত আরব আমিরাতে। বহু প্রতীক্ষার আইপিএল শুরু হয়ে গেছে। দু-একজন ব্যতিক্রম বাদে সাদা বলের সেরা খেলোয়াড়েরা তাই ভড় জমিয়েছেন সেখানে। কিন্তু পাকিস্তানের ক্রিকেটারদের তো সে সৌভাগ্য হচ্ছে না। ভারতের সঙ্গে বৈরী সম্পর্কের প্রভাব আইপিএল দিয়েই গত এক যুগে টের পাচ্ছে তারা। বাবর আজম, মোহাম্মদ আমির কিংবা শাদাব খানদের তাই যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও খেলা হচ্ছে না বিশ্বের সব বড় ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগ।

বাবর ও শাহীন আফ্রিদিরা তাই সম্ভাব্য সেরা বিকল্পটি বেছে নিয়েছেন, খেলছেন ভাইটালিটি টি-টোয়েন্টি ব্লাস্টে। আইপিএলে যখন মার্কাস স্টয়নিসরা আলো ছড়াচ্ছেন তখন পাদপ্রদীপের আড়ালেই খেলে যাচ্ছেন কাউন্টির ক্রিকেটাররা। তবে শাহীন শাহ আফ্রিদির এটা সহ্য হয়নি। টানা চার বলে চার উইকেট নিয়েছেন পাকিস্তানি ফাস্ট বোলার।

এবারের টি-টোয়েন্টি ব্লাস্টে পাকিস্তানি ক্রিকেটারদের আলোচনায় আসা নতুন না। নিজের প্রথম ম্যাচ খেলতে নেমেই ঝড় তুলেছিলেন বাবর। তাঁর জার্সিতে স্পনসর হিসেবে এক পানীয় প্রতিষ্ঠানের নাম থাকা খেপে গিয়েছিল পাকিস্তানি সমর্থকেরা। পরে ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে, এমন এক বিবৃতি দিয়ে নিষ্কৃতি মিলেছিল তাঁর। সে তুলনায় আফ্রিদির আলোচনায় আসা বেশ ইতিবাচক। গতকাল হ্যাম্পশায়ারকে কাল প্রায় একাই জিতিয়েছেন এই বাঁ হাতি পেসার।

মিডলসেক্স ও হ্যাম্পশায়ারের মধ্যকার ম্যাচটি কাল বেশ লো-স্কোরিং ছিল। প্রথমে ব্যাট করে মাত্র ১৪১ রান করেও জয়ের পথে ছিল হ্যাম্পশায়ার। শেষ ৪ ওভারে ৩৭ রান দরকার ছিল মিডলসেক্সের। ক্রিস উডের ওভার থেকে ১৪ রান তুলে ম্যাচটা নিজেদের পক্ষে নিয়ে এসেছিল মিডলসেক্স। উপায় না দেখে ১৮তম ওভারে আফ্রিদির হাতে বল তুলে দেন জেমস ভিন্স। এটাই ছিল পাকিস্তানি পেসারের শেষ ওভার। প্রথম দুই বলে তেমন কিছু হয়নি। বরং দুই রান নিয়ে জয়ের আরেকটু কাছে এগিয়েছে মিডলসেক্স। আকাশ ভেঙে পড়া শুরু তৃতীয় বল থেকে।

তখনো কেউ কল্পনা করতে পারেননি একটু পরে কী হতে যাচ্ছে। ছবি: হ্যাম্পশায়ার টুইটার

ম্যাচের সর্বোচ্চ স্কোরার জন সিম্পসনকে বোল্ড করে শুরু হলো আফ্রিদি তাণ্ডব। পরের বলে আবারও স্টাম্প উড়ল। এবার তাঁর শিকার স্টিফেন ফিন। হ্যাটট্রিক বলটি সামলানোর দায়িত্ব পেয়েছিলেন শ্রীলঙ্কান বাঁহাতি স্পিনার থিলান ভালাল্লাভিতা। কিন্তু বাঁহাতি ব্যাটসম্যানের স্ট্যাম্পও রক্ষা পায়নি। তাঁর স্টাম্পও উপড়ে নিয়ে হ্যাটট্রিক পূর্ণ করেন শাহীন আফ্রিদি। ওভারের শেষ বলে নেমে টিম মুরতাগের ভাগ্যেও নতুন কিছু জোটেনি। তাঁর স্টাম্প ভেঙে ম্যাচই শেষ করে দিয়েছেন পাকিস্তানি পেসার। হ্যাম্পশায়ার ম্যাচ জিতেছে ২০ রানে।

প্রথম দুই স্পেলে বল করতে এসে তিন ওভারে মাত্র ১৭ রান দিয়ে ২ উইকেট তুলে নিয়েছিলেন আফ্রিদি। ফলে ম্যাচটা শেষ করেছেন ১৯ রান ৬ উইকেট নিয়ে। হ্যাম্পশায়ারের হয়ে টি-টোয়েন্টিতে এটাই সেরা বোলিং রেকর্ড।

এই স্পেল শাহীনের আত্মবিশ্বাস ফিরিয়ে আনার জন্য জরুরি ছিল। গতকালের আগ পর্যন্ত টি-টোয়েন্টি ব্লাস্টে থই পাচ্ছিলেন না এই পেসার। প্রথম ৬ ম্যাচে ১৯১ রান খরচায় মোটে ১ উইকেট মিলেছিল তাঁর। সেই ছয় ম্যাচই হেরেছে হ্যাম্পশায়ার। তবু তাঁর ওপর আস্থা রেখেছিল দল। আর সে আস্থার প্রতিদান কাল ম্যাচ জিতিয়েই দিয়েছেন। এ জয়েও অবশ্য লাভ হয়নি হ্যাম্পশায়ারের। নিজেদের গ্রুপে সবার শেষে স্থান পেয়েছে দলটি। ২০০৭ সালের পর এই প্রথম এতটা বাজেভাবে টি-টোয়েন্টি ব্লাস্ট শেষ হলো তাদের।