>দেশের নিচুস্তরের ক্রিকেট লিগগুলোয় পাতানো খেলা রোধে মাঠে মোবাইল ফোন নিষিদ্ধ করা হচ্ছে
তৃতীয় বিভাগ ক্রিকেট লিগে কামরাঙ্গীরচরের বিপক্ষে ম্যাচে পক্ষপাতমূলক আম্পায়ারিংয়ের প্রতিবাদ করেছিলেন ঢাকা রয়েল ক্রিকেটার্সের কোচ, ক্রিকেটার ও ম্যানেজার। কিন্তু প্রতিবাদ করে উল্টো বিপদে পড়েছেন কোচ ও ক্রিকেটাররা। রয়েলের কোচ রনি হোসেন, অধিনায়ক অমি ও দলের আরেক ক্রিকেটার সালমানকে দুই বছর সব ধরনের ক্রিকেট থেকে নিষিদ্ধ করেছে বিসিবির ডিসিপ্লিনারি কমিটি। তবে যে দুজন আম্পায়ারকে নিয়ে বিতর্ক, সেই জহিরুল ইসলাম ও সাইদুর রহমানের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
প্রথম বিভাগ ও তৃতীয় বিভাগে একের পর এক পাতানো ম্যাচ ও পক্ষপাতমূলক আম্পায়ারিংয়ের অভিযোগ ওঠার পরও এসব থামার কোনো নামগন্ধ নেই। ২ ডিসেম্বর তৃতীয় বিভাগ ক্রিকেট লিগে গুলশান ক্লাব ও কাঁঠালবাগান ক্রিসেন্ট ক্লাবের মধ্যকার সুপার লিগের ম্যাচেও আম্পায়ারদের বিরুদ্ধে স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ উঠেছে।
১৭ নভেম্বর কামরাঙ্গীরচর-ঢাকা রয়েল ম্যাচে আম্পায়ারিং নিয়ে অভিযোগের পর শুধু রয়েল কোচ ও ক্রিকেটাররাই শাস্তি পাননি, দলের ম্যানেজার সাব্বির আহমেদের বিরুদ্ধে থানায় জিডিও করা হয়েছে। তিনি এখন ভারতে অবস্থান করছেন। সিসিডিএমের সদস্যসচিব আলী হোসেন বলছেন, দেশে ফিরলে সাব্বির আহমেদেরও শুনানি হবে।
পরশু আবার সিসিডিএম ও বিসিবির পক্ষ থেকে সব ক্লাবকে চিঠি পাঠানো হয়েছে। চিঠিতে ম্যাচ চলাকালে দলের ম্যানেজার ছাড়া বাকি সবার মুঠোফোন ব্যবহার নিষিদ্ধ করা হয়েছে। ম্যাচ চলাকালে খেলোয়াড়-কোচরা আইসিসির নিয়মানুযায়ীই মুঠোফোন ব্যবহার করতে পারেন না। কিন্তু সিসিডিএম ও বিসিবির এই চিঠিতে মাঠে শুধু খেলোয়াড়-কোচ নয়, ম্যানেজার ছাড়া সব কর্মকর্তা এমনকি টিমবয়দের মুঠোফোন ব্যবহারও নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
ইতিমধ্যে তৃতীয় বিভাগ ক্রিকেট লিগ শেষ। শেষের পথে প্রথম বিভাগ ক্রিকেট লিগও। হুট করেই টুর্নামেন্টের এই পর্যায়ে এসে ক্রিকেট কর্তাদের এমন সিদ্ধান্ত নানা প্রশ্নের জন্ম দিচ্ছে।
কামরাঙ্গীরচর ও ঢাকা রয়েল ক্রিকেটার্সের ম্যাচে বাজে আম্পায়ারিংয়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদে মুঠোফোনে করা একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। এক সূত্রে জানা গেছে, বিতর্কিত আম্পায়ারিংয়ের ঘটনা ভিডিও করায় শুনানিতে ঢাকা রয়েল ক্রিকেটার্সের খেলোয়াড়দের বিরুদ্ধে দেশের ক্রিকেটের ভাবমূর্তি নষ্ট করার অভিযোগ তোলা হয়েছে। ভুক্তভোগী ক্লাব কর্মকর্তাদের অভিযোগ, বিসিবি ও সিসিডিএম নিজেদের অপকর্ম ধামাচাপা দিতেই মুঠোফোন নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
সিসিডিএমের সদস্যসচিব আলী হোসেন অবশ্য দাবি করলেন, ক্রিকেটাররা যেন ম্যাচ ফিক্সিংয়ে না জড়ান, সে জন্যই মুঠোফোন নিষিদ্ধ করা হয়েছে। আম্পায়ারিং-বিতর্ক ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টার কথা অস্বীকার করেছেন তিনি। তাঁর ব্যাখ্যা, ‘সতর্কতার জন্যই এটা করছি। আসলে আগেই করা উচিত ছিল।’
বিসিবির প্রধান নির্বাহী নিজামউদ্দিন চৌধুরীর কথায় অবশ্য একটু ভিন্ন সুর। সময়ের প্রয়োজনের কারণেই নাকি মুঠোফোন নিষিদ্ধ করার হয়েছে। তবে কী কারণে টুর্নামেন্টের শেষ পর্যায়ে এসে মুঠোফোন নিষিদ্ধ করা, সেই ব্যাখ্যা পাওয়া গেল না নিজামউদ্দিনের কথায়, ‘অ্যান্টিকরাপশন নিয়মের কতটুকু আমরা কোন ম্যাচে কাজে লাগাব, সেটা সংশ্লিষ্ট বোর্ড বা বিভাগের ওপর নির্ভর করে। আমরা আগে শিক্ষা দেওয়ার মধ্যেই রাখতাম। এখন দেখা যাচ্ছে কিছু কিছু বাস্তবায়ন করতে হচ্ছে। সে জন্যই আমরা এই পথে এগোচ্ছি।’