মসৃণ রানআপের সঙ্গে ভয়ংকর গতি—সানরাইজার্স কোচ টম মুডি এ কারণেই সম্ভবত উমরান মালিককে তুলনা করেছেন ফেরারির সঙ্গে। উমরান নিজেও কোচের এই বিশেষণের সার্থক প্রয়োগ ঘটাচ্ছেন আইপিএলে। এ নিয়ে টানা ১০ ম্যাচে দ্রুততম ডেলিভারির নজির গড়লেন হায়দরাবাদের এই পেসার।
কাল দিল্লি ক্যাপিটালসের বিপক্ষে তো ছাপিয়ে গেলেন আগের সবকিছু—এবার আইপিএলে সবচেয়ে দ্রুতগতির ডেলিভারিটা করেছেন দিল্লির বিপক্ষেই। ঘণ্টায় ১৫৬.৯ কিলোমিটার!
উমরানের দল ২১ রানে হারলেও জম্মু ও কাশ্মীর থেকে উঠে আসা ফাস্ট বোলার রীতিমতো গতির হল্কা ছোটাচ্ছেন। দিল্লির ইনিংসে শেষ ওভারে চতুর্থ বলে তাঁর হাত থেকে ঘণ্টায় ১৫৬.৯ কিমি গতিবেগের গোলাটি বের হয়।
দিল্লির ক্যারিবীয় ব্যাটসম্যান রোভম্যান পাওয়েল তাতে চার মারলেও দর্শকেরা স্পিড মিটারে ওঠা গতিটাই হয়তো মনে রাখবেন। আইপিএল ইতিহাসেরই অন্যতম গতিময় ডেলিভারি এটা।
২০২০ আইপিএলে দিল্লিরই প্রোটিয়া পেসার আনরিখ নরকিয়া ঘণ্টায় ১৫৬.২২ কিমি গতিবেগে বল করেছিলেন। ২০১২ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত এই ডেলিভারিকেই সবচেয়ে দ্রুতগতির বল হিসেবে ছাড়পত্র দিয়েছিল আইপিএল। উমরান কাল নরকিয়ের সেই ডেলিভারির চেয়ে ঘণ্টায় ০.৭ কিমি বেশি গতিতে বলটি করেছেন।
তবে আইপিএলের ইতিহাসে সর্বোচ্চ গতির ডেলিভারি কিন্তু এখনকার কোনো পেসারের নয়। ২০১১ আইপিএলে রাজস্থান রয়্যালসের হয়ে ঘণ্টায় ১৫৭.৭১ কিলোমিটার গতিবেগে বল করেছেন অস্ট্রেলিয়ার সাবেক পেসার শন টেইট।
তবে উমরান কাল শুধু ওই ডেলিভারিটি ছাড়া ম্যাচে নিজের পারফরম্যান্স হয়তো ভুলে যেতে চাইবেন। নিজের প্রথম ওভারে ২১ ও শেষ ওভারে দিয়েছেন ১৯ রান, আর সব মিলিয়ে ৪ ওভারে ৫২ রান দিয়ে উইকেটশূন্য। ওভারপ্রতি গড়ে দিয়েছেন ১৩ রান করে। আইপিএলে নিজের খেলা ১৩ ম্যাচের মধ্যে এই প্রথম কোনো ম্যাচে ৫০ রানের বেশি দিলেন উমরান।
তবে বেধড়ক মার খেলেও গতির সঙ্গে আপস করেননি। জাত ফাস্ট বোলাররা যেমন হয়ে থাকেন আরকি! শেষ ওভারে তাঁর মন্থরতম ডেলিভারিটিও ছিল ঘণ্টায় ১৪৪.৩ কিমি গতিতে। দিল্লির ইনিংসে ১২ ও ১৫তম ওভারেও ঘণ্টায় ১৫০ কিমির বেশি গতিতে বল করেছেন ২২ বছর বয়সী এই ফাস্ট বোলার।
ভয়ংকর গতির কারণেই উমরানকে এ বছর সম্ভবত আর ছাড়েনি সানরাইজার্স। গুজরাট টাইটানসের বিপক্ষে এর আগে নিজের আইপিএল ক্যারিয়ারে প্রথমবারের মতো ৫ উইকেট নেওয়ার পর উমরান বলেছিলেন, ঘণ্টায় ১৫৫ কিমি গতিবেগ টপকে যেতে চান, ‘সৃস্টিকর্তা চাইলে একদিন ১৫৫ কিমি গতিতে বল করব।’ উমরান সে ম্যাচের ঠিক এক ম্যাচ পরই কাল নিজের এই ইচ্ছার প্রতিফলন ঘটালেন। সামনে কোথায় গিয়ে থামবেন, কে জানে!