কাল রাতেও মনে হচ্ছিল এই অল্প সময়ে প্রস্তুতি শেষ করবেন কীভাবে আয়োজকেরা? তখনো কত কাজ বাকি। সকালে ইডেনে এসে চক্ষু ছানাবড়া!
ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন অব বেঙ্গলের (সিএবি) প্রধান ফটকে দাঁড়াতেই বোঝা গেল, ইডেন প্রস্তুত বাংলাদেশ-ভারতের ঐতিহাসিক দিবারাত্রির টেস্ট আয়োজনে। স্টেডিয়ামের যেদিকেই চোখ যায় সব গোলাপি। খেলোয়াড়দের ড্রেসিংরুমে ঢোকার পথটা গোলাপি, অতিথিদের বসার জায়গা গোলাপি, ঘণ্টার ব্যাকগ্রাউন্ড গোলাপি, স্কোরবোর্ড গোলাপি, গ্যালারিতে গোলাপি—ইডেনে আজ দুপুরটাই গোলাপি!
বেলা সাড়ে ১২টার দিকে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আর পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মাঠে পরিচিত হলেন খেলোয়াড়দের সঙ্গে। তাঁদের সঙ্গে ছিলেন ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের সভাপতি সৌরভ গাঙ্গুলী, ভারতীয় কিংবদন্তি শচীন টেন্ডুলকার, বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের সভাপতি নাজমুল হাসান। পরিচিতি পর্বে ছিলেন ২০০০ সালের নভেম্বরে অভিষেক টেস্ট খেলা বাংলাদেশের খেলোয়াড়েরাও।
পরিচিতি পর্ব শেষে ব্যান্ডে বেজে উঠল দুই দলের জাতীয় সংগীত—যেখানে বাংলাদেশ-ভারতের আশ্চর্য মেলবন্ধন। মেলবন্ধনের নাম রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর! জাতীয় সংগীতের পর ঘণ্টা বাজিয়ে টেস্টের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনী ঘোষণা করলেন শেখ হাসিনা ও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
যে বলের খেলা নিয়ে এত আলোচনা, এত আয়োজন সেটির টস জিতেছেন বাংলাদেশ অধিনায়ক মুমিনুল হক। ইন্দোরে টস জিতে বাংলাদেশের ব্যাটিং করা নিয়ে অনেক কথা হলেও ইডেনে মুমিনুলের সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রশ্ন ওঠার কথা নয়। ভর দুপুরে শক্ত উইকেটে ফিল্ডিং নেওয়াটা কিছুতেই যৌক্তিক হতো না। অধিনায়কের সিদ্ধান্তকে সঠিক প্রমাণ করার দায়িত্বটা এখন ব্যাটসম্যানের। সেটি কি তাঁরা ঠিকঠাক করতে পারছেন? ৭৬ রান পড়ে গেছে ৬ উইকেট। ফিরে গেছেন ইমরুল কায়েস, মুমিনুল হক, মোহাম্মদ মিঠুন, মুশফিকুর রহিম, সাদমান ইসলাম ও মাহমুদউল্লাহ। মোহাম্মদ শামির বলে মাথায় আঘাত পেয়ে আহত লিটন দাস। তিনি ব্যাটিং করতে পারবেন কিনা, এ নিয়ে আছে অনিশ্চয়তা আছে। কনকাশন (মাথায় আঘাত জনিত সমস্যা) বদলিও নেই ড্রেসিং রুমে। ইন্দোরের মতো কলকাতায়ও কাঁপছে বাংলাদেশের ব্যাটিং লাইনআপ। ইডেনের এ গোলাপি দুপুরটা বাংলাদেশের কাছে হয়ে উঠেছে বিষাদের দুপুর!