শিক্ষার্থীদের উপকারই করছে বাবু আলী সেলুন
শিক্ষার্থীদের উপকারই করছে বাবু আলী সেলুন

খেলা দেখতে আসা শিক্ষার্থীদের ‘ড্রেসিংরুম’ বাবু আলী সেলুন

দুপুর গড়িয়ে তখন বিকেল। মিরপুরের আশপাশের স্কুলগুলো এ সময়েই ছুটি হয়। মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামের এক নম্বর গেটে ভিড়ও বাড়ে এ সময়। স্কুল শেষে শিক্ষার্থীরা টেস্টের শেষ সেশনের খেলা মাঠে বসে দেখার জন্য স্টেডিয়ামের গেটে ভিড় জমায়।

শিক্ষার্থীদের মাঠে প্রবেশের জন্য টিকিট লাগছে না। স্কুলের পোশাক হলেই মাঠে ঢোকা যায়। এই সুযোগটা যেকেউই লুফে নিতে চাইবে। মিরপুরের আশপাশের স্কুলের শিক্ষার্থীরাও নিচ্ছে। মাঠে এসে বাংলাদেশ দলের ক্রিকেটারদের উৎসাহ দিচ্ছে।

কিন্তু মাঠে বসে খেলা দেখার বিড়ম্বনাও কম না। শিক্ষার্থীরা কেউই স্কুলব্যাগ নিয়ে মাঠে ঢুকতে পারছে না। নিরাপত্তার কারণে ব্যাগ নিয়ে প্রবেশ নিষিদ্ধ। সে কারণে স্কুলব্যাগ এখন খেলা দেখতে আসা শিক্ষার্থীদের বিড়ম্বনার এক নাম। বইপত্র ভর্তি স্কুলেব্যাগ কোথাও রেখে মাঠে বসে খেলা দেখাটাও তো মানসিক অশান্তির একটা ব্যাপার। ব্যাগ রাখার ব্যবস্থাও নেই। সে কারণে অনেকেই খেলা না দেখেই বাড়ি ফিরে গেছে।

খেলা দেখতে আসা শিক্ষার্থীদের ব্যাগ জমা রাখা হয় এখানেই

শিক্ষার্থীদের এই বিড়ম্বনা অবশ্য কিছুটা হলেও কমছে মোহাম্মদ শওকত ও বাবু আলীর সৌজন্যে। মিরপুর স্টেডিয়ামের এক নম্বর গেটের উল্টো পাশেই এই দুই ভাইয়ের সেলুন। দোকানের সামনে তাঁরা ‘এখানে ব্যাগ জমা রাখা হয়’ লেখা একটি কাগজ লেমিনেটিং করে ঝুলিয়ে দিয়েছেন। পাশে আরও একটিতে লেখা, ‘এখানে ব্যাগ, কলম, হেডফোনসহ যাবতীয় জিনিস জমা রাখা হয়’।

শিক্ষার্থীরাও মাঠে প্রবেশের আগে ব্যাগ রাখতে আসছেন বাবু আলীর সেলুনে। শিক্ষার্থীদের ভিড় বাড়ায় সেলুন বন্ধ করে ব্যাগ জমা রাখছেন দুই ভাই। সেলুনকে তখন মনে হচ্ছিল মাঠে খেলা দেখতে আসা শিক্ষার্থীদের ‘ড্রেসিংরুম’।

শিক্ষার্থীরাও সেবার বিনিময়ে খুশি হয়ে পাঁচ-দশ টাকা দিচ্ছে। তাতে দুই ভাইয়ের ব্যবসাও হচ্ছে বেশ। শওকত শিক্ষার্থীদের ব্যাগ নিচ্ছেন। দোকানের কোনায় কোনায় ভরে রাখছেন। বাইরে থেকে বিষয়টি দেখভাল করছেন শওকতের বড় ভাই বাবু মিয়া। শওকত ব্যস্ততার ফাঁকে বলছিলেন, প্রায় এক শ ব্যাগ জমা হয়েছে। খেলা শেষ হলে সবাই এসে নিয়ে যাবে।

ক্রিকেট কত ব্যবসারই না উৎস হয়ে উঠতে পারে!