>বিপিএলে এভিন লুইসের সেঞ্চুরিতে খুলনা টাইটানসের বিপক্ষে ৫ উইকেটে ২৩৭ রান তুলেছে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া
আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে দুটি সেঞ্চুরি আছে এভিন লুইসের। কিন্তু এবার বিপিএলে ফিফটির দেখা পর্যন্ত পাননি। লুইসের কাছ থেকে বড় রান তাই পাওনা ছিল কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ানস সমর্থকদের। খুলনা টাইটানসের বিপক্ষে লুইস আজ সেই পাওনা মেটালেন খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে! ইনিংসের শুরুতে চোট পেয়েছিলেন পায়ে। এই চোট নিয়েই লুইসের তোলা ক্যারিবীয় ঝড়ের ঝাপটায় বিপিএলের ইতিহাসে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ দলীয় স্কোর পেয়েছে কুমিল্লা।
আগে ব্যাটিংয়ে নেমে ৫ উইকেটে ২৩৭ রান তুলেছে কুমিল্লা। অথচ ১০ ওভার শেষেও দলটির স্কোর ছিল ২ উইকেটে ৭৭। ওপেন করা লুইস তখনো উইকেটে। ইনিংসের শুরুতে পায়ে চোট পাওয়ায় তখনো সেভাবে হাত খোলেননি। ২৬ বলে ৩৯ রানে অপরাজিত। কিন্তু ঝড় উঠল এক ওভার পর থেকে। ১২তম ওভারে লুইসের এক ছক্কা ও এক চার পুঁজি করে মোট ১৭ রান তুলল কুমিল্লা। পরের ওভারেও এসেছে ১৭ রান, আর তার পরের ওভারে ২৮!
শেষের এই লুইস ঝড়েই স্কোরবোর্ডের চাকা ফর্মুলা ওয়ান গাড়ির (!) মতো ঘুরিয়েছে খুলনা। ২১ বলে ৩৯ রান করা ইমরুল কায়েস ১৫তম ওভারে ফিরলেও খুলনার দুশ্চিন্তা কমেনি। লুইস এক প্রান্তে দুর্দমনীয় আর অন্য প্রান্তে তাঁর সঙ্গী সঙ্গী লঙ্কান হার্ড হিটার থিসারা পেরেরা। পেরেরা ১১ রান করে ফিরেছেন ইমরুল আউট হওয়ার পরের ওভারে। কিন্তু কুমিল্লার হার্ড হিটার ‘প্যাকেজ’ তখনো শেষ হয়নি। উইকেটে এলেন শহীদ আফ্রিদি! কিন্তু পাকিস্তানের এই মারকুটে ব্যাটসম্যান টিকেছেন মাত্র ২ বল। এই দুই ওভারে তিন উইকেট পড়লেও লুইসের স্ট্রোক প্লে থামাতে পারেনি খুলনার বোলাররা।
১৩তম ওভারে এবার বিপিএলে প্রথম ফিফটি তুলে নেন লুইস। ওই ওভারে ইমরুল দুই চার ও এক ছক্কায় রানের চাকা ঠিক রাখেন। আর মোহাম্মদ সাদ্দামের করা পরের ওভার ছিল লুইস ‘শো’এ ওভারে কুমিল্লার তোলার ২৮ রানে লুইসের অবদান চার ছক্কা। ৩১ বলে ফিফটি তুলে নেওয়ার পরই পুরোপুরি হাত খুলতে শুরু করেন তিনি। পরের ১২ বলে তুলেছেন ৪০! এর মধ্যে শুধু ছক্কাই পাঁচটি। বোঝাই যাচ্ছিল, সেঞ্চুরিটা দোর গড়ায় কড়া নাড়ছে। শুধু তুলে নেওয়ার অপেক্ষা।
বিপিএল ক্যারিয়ারে লুইস নিজের দ্বিতীয় সেঞ্চুরিটা পেলেন শেষ ওভারে। ২০১৫ সালে এই চট্টগ্রামেই প্রথম সেঞ্চুরির দেখা পেয়েছিলেন তিনি। ফিফটি তুলে নেওয়ার পর বাকি ৫০ রান করতে তাঁর লেগেছে মাত্র ১৬ বল! সেঞ্চুরিও তুলে নিয়েছেন ছক্কা মেরে। সব মিলিয়ে ১০ ছক্কা ও ৫ চারে ৪৯ বলে ১০৯ রান করে অপরাজিত ছিলেন তিনি। মূলত লুইসের ব্যাটে ভর করেই শেষ ৪৮ বলে কুমিল্লা তুলেছে ১৩৭ রান।
অথচ, কুমিল্লার ইনিংসের শুরুতে লুইস এতটা মারকুটে ছিলেন না। পায়ে চোট পেয়েছিলেন ইনিংসের তৃতীয় বলেই। তবু প্রথম ৫ ওভারে ৪৩ রান তুলেছিলেন দুই ওপেনার লুইস ও তামিম ইকবাল। অষ্টম ওভারে পরপর দুই বলে তামিম (২৫ বলে ২৯) ও এনামুল হককে ফিরিয়ে হ্যাটট্রিকের সম্ভাবনা জাগিয়ে তুলেছিলেন খুলনা অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ। সঙ্গে ম্যাচে ঘুরে দাঁড়ানোর আশাও দেখেছিল বিদায় নিশ্চিত হওয়া দলটি। কিন্তু লুইসের ক্যারিবীয় ঝড়ের ঝাপটায় আপাতত স্বপ্নভঙ্গ।