সাইমন্ডস মানেই তো এমন কিছু
সাইমন্ডস মানেই তো এমন কিছু

‘ক্রিকেটের আরেকটি মর্মান্তিক দিন’

মার্ক টেলরের আর ভালো লাগছে না। গত মার্চে ভয়াবহ এক দিন পার করতে হয়েছে। কিংবদন্তি রডনি মার্শকে হারানোর শোক সামলানোরও সুযোগ পাননি, কয়েক ঘণ্টা পরই সবাইকে স্তব্ধ করে চলে গেলেন শেন ওয়ার্ন। অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেটের সেরা চরিত্রগুলোর একজনের বিদায়ের দুই মাস যেতে না যেতেই আরেকটি বর্ণিল চরিত্র হারিয়ে গেল। কাল দিবাগত রাতে এক গাড়ি দুর্ঘটনায় ৪৬ বছর বয়সেই বিদায় নিয়েছেন সাবেক অলরাউন্ডার অ্যান্ড্রু সাইমন্ডস

ওয়ার্ল্ড ওয়াইড অব স্পোর্টসে কথা বলতে যাওয়া সাবেক অধিনায়ক মার্ক টেলর তাই ভেঙে পড়েছেন, ‘দুর্ভাগ্যজনকভাবে এ বছর এমন পরিস্থিতিতে বারবার পড়তে হচ্ছে আমাকে। সত্যি বলছি, আমার একদম বিশ্বাস হচ্ছে না। ক্রিকেটের আরেকটি মর্মান্তিক দিন।’

বন্ধু হেইডেনের সঙ্গে সাইমন্ডস

সাইমন্ডসকে শুধু মাঠের অর্জন দিয়ে বিচার করতে রাজি নন কেউ। দুটি বিশ্বকাপ জেতা এই অলরাউন্ডার মাঠে ও মাঠের বাইরে জীবন যেভাবে উপভোগ করতেন আর অন্যদের জন্য সেটা উপভোগ্য করে তুলতেন, মার্ক টেলরও সেভাবেই মনে রাখতে চান উত্তরসূরিকে, ‘শুধু ক্রিকেটের কথা বললে ব্যাট হাতে সে ছিল বিনোদনের উৎস। আর সে তো বেশ বড়সড় মানুষ ছিল, অনেক গাট্টাগোট্টা ছেলে। ছোটবেলায় রাগবিতেও খুব ভালো ছিল সে...বল অনেক দূরে পাঠাতে পারত এবং শুধু আনন্দ দিতে চাইত। একটু পুরোনো ঘরানার ক্রিকেটার ছিল। সত্তর বা আশির দশকে খেললেও ওকে মানাত।’

সাইমন্ডস

ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টির জন্য বিখ্যাত ছিলেন সাইমন্ডস। কার্যকর বোলিং ও আগ্রাসী ব্যাটিংটা এই দুই ফরম্যাটের সঙ্গেই মানানসই। মাত্র ২৬টি টেস্ট খেলেছেন, তাতে দুটি শতক। এর মধ্যে প্রথম শতকটি এখনো ক্রিকেটপ্রেমীদের চোখে ভাসে। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ব্যাটিং–ধসের মুখে পড়েছিল অস্ট্রেলিয়া। বন্ধু ম্যাথু হেইডেনকে নিয়ে ২৭৭ রানের জুটি গড়েছিলেন, খেলেছিলেন ১৫৬ রানের দুর্দান্ত এক ইনিংস।

দুই বিশ্বকাপ জেতা এক ক্রিকেটারকে নিয়ে কথা বলতে গিয়েও তাই টেলরের মনে পড়ল এমসিজির সে ইনিংসের কথা, ‘এমসিজিতে যে শতকটা পেয়েছিল, সেটাই ওর সঠিক পরিচয় দেয়...বন্ধু ম্যাটি হেইডেনের সঙ্গে ছিল। আমার মনে আছে, বোলারের মাথার ওপর দিয়ে একটা চার বা ছক্কা মারার পর সে লাফ দিয়ে হেইডোসের ওপর চড়ে বসল। আমার ধারণা, সে হেইডোসের নাক সমান করে দিয়েছিল...।’

সাইমন্ডস

সাইমন্ডসের সে শতক টেলরের কাছে এখনো বিশেষ কিছু, ‘এটা অসাধারণ এক মুহূর্ত। শুধু সাইমন্ডসের জন্য নয়, ক্রিকেটের জন্যও। কারণ, ওই মুহূর্তে আবেগ ও বন্ধুত্বটা পরিষ্কার বোঝা যাচ্ছিল। নিজের প্রথম শতক পাওয়া। ওকে তো টেস্ট ক্রিকেটার হিসেবে ধরাই হতো না। সবাই সাদা বলের ক্রিকেটার বলেই মনে করত। কিন্তু সে বিশ্বকে দেখিয়ে দিতে চেয়েছিল, সে টেস্ট খেলতে পারে। আর সেটা সে এমসিজিতে করে দেখিয়েছে।’